স্বর্ণের দেশ দুবাইয়ে কোন কাজের চাহিদা ও বেতন বেশি
স্বর্ণের দেশ দুবাইয়ে কোন কাজের চাহিদা ও বেতন বেশি তা সম্পর্কে আপনি জানতে চাচ্ছেন। আপনার জানতে চাওয়াকে সামনে রেখেই আমি আপনাদের জন্য এই পোস্টটি নিয়ে হাজির হয়েছে। এই পোস্টটি একটু সময় নিয়ে ভালোভাবে পড়লে আপনি আপনার সকল অজানা তথ্যের উত্তর পেয়ে যাবেন আশাকরি।
কারো যদি বিদেশে যাওয়ার ইচ্ছা থাকে তাহলে প্রথমেই যে দেশটির নাম আছে সেই দেশটির নাম হচ্ছে আরব আমিরাতের দুবাই শহর, যাকে অনেক সময় স্বর্ণের দেশ বলা হয়। এই শহরটি আরব আমিরাতের সবচেয়ে বিখ্যাত এবং উন্নয়নশীল শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম।
এই পোস্টে যা যা থাকছেঃদুবাইয়ে কোন কাজের চাহিদা ও বেতন বেশি
- স্বর্ণের দেশ দুবাইয়ের পরিচিতি
- দুবাইয়ে কোন কাজের চাহিদা বেশি
- দুবাই স্বর্ণের দেশ যেতে কত টাকা প্রয়োজন
- সহজে যেসব ভিসা দুবাইয়ে যাওয়ার জন্য পাওয়া যায়
- স্বর্ণের দেশ দুবাইয়ে কয়েকটি কাজের মাসিক বেতন
- দুবাইয়ে কোন কাজের বেতন বেশি
- দুবাইয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- দুবাইয়ে কোন কাজের চাহিদা কম
- কাজের সন্ধান স্বর্ণের দেশ দুবাইয়ে পাওয়ার সহজ উপায়
- দুবাইয়ে কাজের চাহিদা ও বেতন সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য
স্বর্ণের দেশ দুবাইয়ের পরিচিতি
স্বর্ণের দেশ দুবাই হল সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি প্রধান শহর, যা বিশ্বজুড়ে পরিচিত তার অত্যাধুনিক আর্কিটেকচার, বিলাসবহুল জীবনযাত্রা এবং স্থানীয় সংস্কৃতির জন্য।আপনারা জানলে আশ্চর্য হবেন, এই অঞ্চলটি এক সময় একটি ছোট মাছধরার গ্রাম ছিল। এই শহরের অন্যতম আকর্ষণ হল উচ্চমানের শপিংমল এবং বিপনী কেন্দ্র।
আর্কিটেকচারের দিক দিয়ে এই শহরটি অনেক উন্নত। বর্তমানের বিশ্বের সবচেয়ে বড়
শপিং মল দ্য দুবাই মল এবং সবচেয়ে উঁচু বিল্ডিং বৃর্জ খলিফা এই শহরেই
অবস্থিত। এছাড়াও সেখানকার আরেকটি অন্যতম ব্যবস্থাপনার মধ্যে রয়েছে ক্রীড়া এবং
বিনোদন। বিভিন্ন খেলাধুলা এবং বিনোদনের জন্য বিশ্বের প্রচুর পর্যটক এই শহরটিতে
এসে থাকে।
অর্থনীতির কথা বলতে গেলে বলতে হয় সেখানকার তেল শিল্পের কথা। এক সময় এই শহরটি মূলত তেল শিল্পের উপর নির্ভরশীল ছিল কিন্তু বর্তমানে শহরটির অর্থনীতির ভিত্তি পরিবর্তন করে বিভিন্ন খাতের উপর নির্ভর করছে। পর্যটকদের জন্য এখানে প্রচুর আকর্ষণীয় স্থান, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহাসিক স্থাপনা এবং আধুনিক আরামের ব্যবস্থা আছে।
দুবাইয়ে কোন কাজের চাহিদা বেশি
দুবাইয়ে কোন কাজের চাহিদা বেশি তা সম্পর্কে আপনাকে অবশ্যই আগে থেকেই জেনে নিতে হবে। কোন দেশে যাওয়ার আগে আপনাকে অবশ্যই সে দেশে কোন কাজে চাহিদা বেশি, খরচ ও অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে। আপনার নিজের কাজের দক্ষতা ও যোগ্যতা অনুযায়ী সকল দিক বিবেচনা করে তবেই বিদেশে চাকরির জন্য যাবার পরিকল্পনা করা উচিত।
দুবাই একটি অন্যতম প্রযুক্তি নির্ভর উন্নয়নশীল শহর, যেখানে বড় বড় অবকাঠামো ও নির্মাণ সামগী রয়েছে্। যার কারণে এই শহরটিতে প্রচুর কাজের চাহিদা রয়েছে। যে সকল কাজের চাহিদা সেখানে বেশি তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি কাজ সম্পর্কে আসুন জেনে নেওয়া যাক-
- ইলেকট্রিক লাইনের কাজঃ এই দেশে ইলেকট্রিক লাইনের কাজের প্রচুর চাহিদা রয়েছে, সে কারণে ইলেকট্রিশিয়ানরা এই চাকরিতে বেশি বেতন পেয়ে থাকে। বিশেষ করে অবকাঠামোগত কাজের একটি অংশে এই কাজের চাহিদা পরিলক্ষিত হয়। এক্ষেত্রে এই কাজের জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা থাকা প্রয়োজন।
- হোটেল বা রেস্টুরেন্ট এর কাজঃ দুবাই যেহেতু একটিভ পর্যটন সহ হিসেবে পরিচিত সেহেতু বিদেশ থেকে হাজার হাজার পর্যটকরা বেড়ানোর উদ্দেশ্যে সেখানে আসে। তারা এখানে থাকার জন্য হোটেল ভাড়া করে থাকে। ফলে দুবাইয়ে প্রচুর হোটেল রয়েছে যেখানে কাজের চাহিদাও প্রচুর।
- ড্রাইভিং এর মাধ্যমে গাড়ি চালানোর কাজঃ আপনার যদি ড্রাইভিং-এর যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা থেকে থাকে তাহলে আপনি ইচ্ছা করলেই এই কাজের জন্য সেখানে যেতে পারেন। এখানে সরকারি ও বেসরকারি প্রচুর প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেখানে আপনি ড্রাইভার হিসেবে কাজ করতে পারেন।
- প্লাম্বিং এর কাজঃ এই দেশটি মূলত একটি তেল সমৃদ্ধ দেশ হওয়ায় এখানে প্লাম্বিং কাজের জন্য প্রচুর পরিমাণে প্লাম্বারের প্রয়োজন হয়। আপনার যদি এই কাজের যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা থেকে থাকে তাহলে এই কাজের জন্য সেখানে যেতে পারেন। এছাড়াও বিভিন্ন অবকাঠামোগত কাজের একটি অংশে এসব প্লাম্বারের চাহিদা প্রচুর রয়েছে।
- পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজঃ যেহেতু এই শহরটি একটি উন্নত শহর সেহেতু এই শহরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রাস্তাঘাট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য প্রচুর পরিমাণে শ্রমিকের প্রয়োজন হয় যা তারা অন্য দেশ থেকে নিয়ে থাকে। এই কাজের ক্ষেত্রে সেরকম কোনো যোগ্যতা বা অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয় না।
- বিভিন্ন কনস্ট্রাকশনের কাজঃ যেহেতু এটি একটি উন্নত শহর সেহেতু এখানে বড় বড় অবকাঠামো তৈরি করার জন্য কনস্ট্রাকশন শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। যেসব ব্যক্তির সেরকম কোন দক্ষতা থাকে না সেসব ব্যক্তিরা এসব কাজের জন্য সেখানে যেতে পারেন। তবে শারীরিক সক্ষমতা এক্ষেত্রে থাকা জরুরি।
- গার্মেন্টসের কাজঃ অন্যান্য দেশের তুলনায় এই দেশে গার্মেন্টস কাজের ক্ষেত্রে শ্রমিকের চাহিদা কিছুটা কম। কারণ সে দেশে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন বেশি হওয়ায় গার্মেন্টস শিল্পের প্রসার তুলনামূলক কম। তবে আপনার যদি গার্মেন্টস কাজের অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা থেকে থাকে তাহলে বেশি বেতনের জন্য সেখানে যেতে পারেন।
- বিভিন্ন ফ্যাক্টরির কাজঃ আপনার যদি কোন বিশেষ ফ্যাক্টরির কাজের অভিজ্ঞতা থেকে থাকে তাহলে সেই কাজের জন্য আপনি সে দেশে যেতে পারেন। এই শহরটিতে বিভিন্ন ধরনের ফ্যাক্টরি রয়েছে যা অধিকাংশই বিদেশী শ্রমিকদের উপর নির্ভরশীল।
- কৃষিকাজঃ এক সময় এই শহরটি মরুভূমি ছিল তবে বর্তমানে এই শহরটিতে প্রচুর গাছপালা এবং আবাদি ফসলের জমি রয়েছে যেখানে কাজ করার জন্য প্রচুর শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। আপনার যদি কৃষি কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে থাকে তাহলে আপনি সেখানে যেতে পারেন।
দুবাই স্বর্ণের দেশ যেতে কত টাকা প্রয়োজন
দুবাই স্বর্ণের দেশ যেতে কত টাকা প্রয়োজন তাও আপনাকে ভালোভাবে জানতে হবে। আপনি যখন আপনার দক্ষতা, যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট কাজকে নির্ধারণ করে নিবেন তারপরের কাজটি হচ্ছে সেই দেশে যেতে কত টাকা প্রয়োজন তা সম্পর্কে পরিষ্কার হতে হবে। দুবাইয়ে কাজের উপর ভিত্তি করে সে দেশের ভিসার দামের কমবেশি হয়।
আপনি যদি কাজের উদ্দেশ্যে যান তাহলে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, যদি বেড়ানোর জন্য যান
তাহলে টুরিস্ট ভিসা এবং যদি লেখাপড়ার উদ্দেশ্যে যে থাকেন তাহলে স্টুডেন্ট ভিসার
জন্য আবেদন করতে পারেন। এখন আসুন জেনে নেওয়া যাক এই তিন ধরনের ভিসায় যেতে কত
টাকা প্রয়োজন হবে-
- আপনি যদি সরকারিভাবে ভিসা প্রসেসিং করে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে চান তাহলে যেতে আনুমানিক সাড়ে তিন হতে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকার প্রয়োজন হবে। আর যদি বেসরকারিভাবে এই ভিসায় যেতে চান তাহলে আনুমানিক ৬ থেকে ৭ লাখ টাকার প্রয়োজন হবে।
- টুরিস্ট ভিসায় সরকারিভাবে কোন ভিসা প্রসেসিং হয় না তবে বেসরকারিভাবে এসব ভিসা প্রসেসিং হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে তেমন কোন খরচের প্রয়োজন হয় না শুধুমাত্র পাসপোর্ট ও প্লেনের খরচ বাবদ টাকা প্রয়োজন হয়।
- আপনি যদি সরকারি ভাবে স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে চান তাহলে সেই প্রতিষ্ঠানের স্কলারশিপের প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সহকারে শুধুমাত্র যাতায়াতের ভাড়া প্রয়োজন হবে। কিন্তু যদি বেসরকারিভাবে এই ভিসায় যেতে চান তাহলে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাৎসরিক সেশন চার্জ এবং থাকা খাওয়া বাবদ কিছু ব্যাংক ডিপোজিট দেখাতে হবে।
সহজে যেসব ভিসা দুবাইয়ে যাওয়ার জন্য পাওয়া যায়
সহজে যেসব ভিসা দুবাইয়ে যাওয়ার জন্য পাওয়া যায় তা আপনাকে শুরুতেই জানতে হবে। সে দেশের সরকার বিভিন্ন ধরনের ভিসা উন্মুক্ত করেছে, এর মধ্যে রয়েছে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা, টুরিস্ট ভিসা এবং রেসিডেন্ট ভিসা। রেসিডেন্ট ভিসার জন্য সে দেশের সরকার অনেক শর্তাবলী আরোপ করেছে যা পূরণ করতে প্রচুর সময়ের প্রয়োজন হয়।
আপনি যদি টুরিস্ট ভিসায় দুবাই যেতে চান তাহলে পাসপোর্ট ঠিক থাকলে কয়েকদিনের মধ্যেই দুবাই যেতে পারবেন। তবে যদি স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে চান তাহলে আপনার পড়াশোনার সার্টিফিকেটসহ সেদেশের নির্দিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হবে। তারা তাদের মত করে যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দিবে।
এক্ষেত্রে ৮ মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। এই ভিসার ক্ষেত্রে
মনে রাখতে হবে সেমিস্টার ফি এবং এক বছরে থাকা খাওয়ার খরচ বাবদ একটি ব্যাংক
স্টেটমেন্ট এর প্রয়োজন হবে।তবে আপনি যদি ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে চান তাহলে
সঠিক গেটওয়ে ব্যবহার করলে এক থেকে দুই মাসের মধ্যেই সেখানকার ভিসা পাওয়া
সম্ভব।
স্বর্ণের দেশ দুবাইয়ে কয়েকটি কাজের মাসিক বেতন
স্বর্ণের দেশ দুবাইয়ে কয়েকটি কাজের মাসিক বেতন সম্পর্কে পূর্বে একটি ধারণা থাকলে আপনি খুব সহজেই আপনার পছন্দের কাজটি বেছে নিতে সুবিধা হবে। এক্ষেত্রে শুধু বেশি বেতনের দিকে লক্ষ্য রাখলেই হবে না আপনার নিজের যোগ্যতা, দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার সাথে মিল রেখে পছন্দের কাজটি বেছে নিতে হবে।
আপনি যদি বেতনের দিকে লক্ষ্য রেখে কাজ নির্ধারণ করে সে দেশে যান তাহলে ভবিষ্যতে
যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ না করতে পারায় আপনি সেখানে বিভিন্ন অসুবিধার সম্মুখীন
হবেন। বিশেষ করে কারিগরি বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে অবশ্যই কারিগরি প্রশিক্ষণ ও
অভিজ্ঞতা থাকা প্রয়োজন। এখন আসুন জেনে নেওয়া যাক কোন পেশায় কত মাসিক বেতন
পাওয়া যায়-
ক্রমিক নং | পেশা | মাসিক বেতন (টাকা) |
---|---|---|
১ | ইলেকট্রিশিয়ান | ৯৫,০০০ - ১,২৫,০০০ |
২ | ডেলিভারি ম্যান | ৭০,০০০ - ৯৫,০০০ |
৩ | হেলপার | ৫০,০০০ - ৭০,০০০ |
৪ | ওয়েটার | ৪৫,০০০ - ৬৫,০০০ |
৫ | ক্লিনার | ৪০,০০০ - ৫৫,০০০ |
৬ | মেকানিক | ৬৫,০০০ - ১,১০,০০০ |
৭ | ড্রাইভার | ৬৫,০০০ - ৮৫,০০০ |
৮ | ফ্যাক্টরি শ্রমিক | ৪৫,০০০ - ৬৫,০০০ |
৯ | নির্মাণ শ্রমিক | ৪৫,০০০ - ৭৫,০০০ |
১০ | প্লাম্বার | ৬৫,০০০ - ৯০,০০০ |
১১ | গার্মেন্টস শ্রমিক | ৪০,০০০ - ৫৫,০০০ |
এখানে উল্লেখিত মাসিক বেতন ২০২৫ সালের বেতন কাঠামো অনুযায়ী দেওয়া হয়েছে। তবে এই বেতন কাঠামোটি পরিবর্তন হতে পারে। তবে আপনি যদি অতিরিক্ত কাজ এবং বিভিন্ন ট্রিপ পেয়ে থাকেন তাহলে এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।
দুবাইয়ে কোন কাজের বেতন বেশি
দুবাইয়ে কোন কাজের বেতন বেশি তাও আপনাকে জেনে নিতে হবে কারণ উন্নত শহর হিসেবে সেখানে প্রচুর কাজ রয়েছে। ফলে সে শহরে যাওয়ার আগে অবশ্যই আপনাকে সেখানকার কোন কাজের বেতন বেশি তা সম্পর্কে জানতে হবে। যদি সম্ভব হয় এবং আপনার আগ্রহ ও যোগ্যতা থাকে তাহলে সেই কাজের উপর কয়েকটি ট্রেনিং এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে নিজেকে তৈরি করে যেতে পারবেন।
সাধারণত কারিগরি যেসব বিষয় বা কাজ রয়েছে সেসব কাজের জন্য বিশেষ দক্ষতা এবং
অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয় ফলে ওইসব কাজের ক্ষেত্রে বেতন ও চাহিদা বেশি থাকে। এই
পোস্টের একটি অংশে এই বিষয়গুলো নিয়ে অলরেডি আলোচনা করা হয়েছে যেখান থেকে আপনি
খুব সহজেই বুঝতে পারবেন দুবাইয়ে কোন কাজের বেতন ও চাহিদা বেশি।
দুবাইয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
দুবাইয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পর্কে আপনাকে অবশ্যই যাওয়ার আগেই ভালোভাবে জেনে নিতে হবে, কারণ এর মাধ্যমেই আপনি সেই দেশে মূল্যায়িত হবেন। আপনার নির্ধারিত কাজের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজগুলো প্রথমেই ভালোভাবে সংগ্রহ করতে হবে। ভিসার জন্য আবেদন করার পরে কর্তৃপক্ষ আপনাকে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সহকারে উপস্থিত হওয়ার একটি তারিখ ও সময় জানিয়ে দিবে।
সেই তারিখ এবং সময় অনুযায়ী আপনাকে অবশ্যই আপনার নির্ধারিত কাজের জন্য
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সহকারে উপস্থিত হতে হবে। এজন্যই ভিসা আবেদন করার সময়
আপনাকে আপনার কাগজপত্র সঠিকভাবে উল্লেখ করতে হবে। উল্লেখিত কাগজপত্র উপস্থিত
হওয়ার সময় দেখাতে না পারলে কর্তৃপক্ষ আপনাকে ভিসা প্রদান করবে না।
এর জন্য আপনি কোন ভিসা এজেন্সির সাহায্য নিতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে
সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে সেই এজেন্সির বিশ্বস্ততার উপর। এখন আসুন জেনে নেওয়া
যাক ভিসা প্রসেসিং এর ক্ষেত্রে সাধারণত যেসব ডকুমেন্ট বা প্রমাণাদি প্রয়োজন
হয়-
- একটি বৈধ পাসপোর্ট
- সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের কয়েকটি ছবি
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
- মেডিকেল সার্টিফিকেট
- শিক্ষাগত যোগ্যতা সকল সার্টিফিকেট
- কাজের দক্ষতার সার্টিফিকেট
- সকল ব্যাংকের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- কাজের অভিজ্ঞতার সনদপত্র
- ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি
দুবাইয়ে কোন কাজের চাহিদা কম
দুবাইয়ে কোন কাজের চাহিদা কম তা আপনাকে সেখানে যাওয়ার আগেই জানা উচিত। দুবাই শহরটি যেহেতু উন্নত একটি তেল সমৃদ্ধ শহর সেহেতু সেখানে সব কাজের বেতন বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি। তবে সেই দেশের অন্যান্য কাজের তুলনায় কয়েকটি কাজের বেতনের পরিমাণ বা চাহিদা কম রয়েছে।
আপনারা ইতিমধ্যেই জেনে গেছেন দুবাইয়ে কোন কাজের জন্য মাসিক বেতন কত পরিমানে
দেওয়া হয়। সেখান থেকে আমরা দেখতে পাই ক্লিনার এবং গার্মেন্টস শ্রমিকদের
ক্ষেত্রে সেখানে কাজের চাহিদা ও বেতন কিছুটা কম। বিশেষ করে গার্মেন্টস কাজের
ক্ষেত্রে এই চাহিদাটা অনেক কম। কিন্তু ক্লিনার কাজের জন্য বেতন কম হলেও এর চাহিদা
অনেক বেশি কারণ ক্লিনার কাজের জন্য বিশেষ কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং দক্ষতার
প্রয়োজন হয় না।
কাজের সন্ধান স্বর্ণের দেশ দুবাইয়ে পাওয়ার সহজ উপায়
কাজের সন্ধান স্বর্ণের দেশ দুবাইয়ে পাওয়ার সহজ উপায় অনেক রয়েছে। বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে যে কোন দেশের কাজের সার্কুলার বিভিন্ন অনলাইন ওয়েবসাইটে প্রদান করা হয়। সেক্ষেত্রে আপনি যদি বিভিন্ন অনলাইন ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট খুলে আপনার জীবন বৃত্তান্ত রেখে প্রয়োজনীয় সময় সার্কুলার অনুযায়ী আবেদন করলে খুব সহজেই দুবাইয়ে যেতে পারবেন।
এছাড়াও আপনার যদি কোন পরিচিত দুবাই থেকে থাকে তাহলে তার মাধ্যমেও আপনি দুবাইয়ের
বিভিন্ন কোম্পানি অথবা সরকারি কাজের চাহিদা সম্পর্কে জেনে সেখানে আবেদন করতে
পারবেন। এই পদ্ধতিটি সবথেকে ভালো পদ্ধতি যেখানে প্রতারণার শিকারের পরিমান অনেক
কম। আমাদের দেশে এরকম অনেক ওয়েবসাইট আছে যেখানে আপনি আপনার অ্যাকাউন্ট খুলে
বিভিন্ন বিদেশি চাকরির জন্য আবেদন করতে পারেন।
তবে এসব আবেদনের ক্ষেত্রে পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকলে কাছের কোন অভিজ্ঞতা সম্পন্ন
কম্পিউটারের দোকান থেকে আবেদন করাই উত্তম। সে ক্ষেত্রে আপনার আবেদন পত্রটি
অনুমোদন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে এবং টাকা খরচ কম হয়। এছাড়াও অনেক সময়
বাইরের কিছু ডেলিগেট বাংলাদেশে আসে তাদের নির্দিষ্ট কাজের জন্য ওয়ার্কার
খুঁজতে।
সেসব ডেলিগেট কখন, কবে ও কোথায় আসছে তা সম্পর্কে জানলে সেখানে যেয়ে আপনি আবেদন ও পরীক্ষার মাধ্যমে দুবাইয়ে যেতে পারেন। এই পদ্ধতিটি সব থেকে বিশ্বস্ত যেখানে আপনি সরাসরি একজন বিদেশীর উপস্থিতিতে আপনার নিজের যোগ্যতা ও দক্ষতা প্রমাণ করে সেখানে যাওয়ার জন্য অনুমোদন চেয়ে নিচ্ছেন। এক্ষেত্রে কোন দালাল বা ভায়া না থাকায় এ প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ এবং সহজ।
দুবাইয়ে কাজের চাহিদা ও বেতন সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য
দুবাইয়ে কাজের চাহিদা ও বেতন সম্পর্কে আমি একটি কথাই বলতে পারি যে, এই শহরটিতে প্রচুর কাজের চাহিদা রয়েছে এবং কাজের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বেতন অন্যান্য দেশের তুলনায় সম্মানজনক হারে প্রদান করা হয়, যা পেয়ে আপনি অবশ্যই খুশি হবেন। এই শহরটি মূলত একটি উদ্ভাবনী এবং গতিশীল শহর যা প্রতিনিয়ত পরিবর্তন এবং নতুনত্বের পথে এগিয়ে চলছে।
আপনার ও আপনার পরিবারের স্বপ্ন পূরণ করতে আপনি এই শহরটিতে অবশ্যই যেতে পারেন তবে যাওয়ার আগে অবশ্যই আপনাকে সঠিক দক্ষতা, জ্ঞান ও যোগ্যতা অর্জন করে যেতে হবে। তাহলে আপনি অতি অল্প সময়ে আপনার স্বপ্ন পূরণ করতে সক্ষম হবেন। তা না হলে গতিশীল এই শহরের সাথে না চলতে পেরে আপনি নিজেকে হারিয়ে ফেলবেন।
এই পোস্টে আমি বোঝানোর চেষ্টা করেছি দুবাইয়ে কোন কোন কাজের চাহিদা
চাহিদা বেশি এবং কোন পেশার কাজের বেতন বেশি পাওয়া যায়। এছাড়াও আমি
এই দেশটিতে কিভাবে সহজে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ যাওয়া যায় তা সম্পর্কে বলার
চেষ্টা করেছি। আশাকরি আপনারা এই পোস্টটি পড়ে উপকৃত হয়েছেন, ভবিষ্যতে এই পোস্টের
কোন আপডেট অথবা নতুন কোন পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।
সে পর্যন্ত সবাই সুস্থ থাকবেন, ভালো থাকবেন এবং কাজ অথবা বেড়ানোর জন্য সঠিক
উপায়ে, সঠিক কাগজপত্র ব্যবহার করে স্বর্ণের দেশ দুবাইয়ে যাবেন।
ধন্যবাদ...........
অজানা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url