ইউরোপের নাগরিকত্ব সহজে পাওয়া ১০টি দেশ
ইউরোপের নাগরিকত্ব সহজে পাওয়া যায় এমন দেশ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। আপনার হয়তো ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ও স্বপ্ন ইউরোপ যাবেন, কিন্তু কোন কোন দেশে সহজেই নাগরিকত্ব পাওয়া সম্ভব সে সম্পর্কে হয়তো জানতেন না। সেজন্যই আমি এই পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।
আপনারা যদি এই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সময় নিয়ে ভালোভাবে পড়েন তাহলে ইউরোপের নাগরিকত্ব সহজে পাওয়া ৭টি সম্পর্কে জানতে পারবেন। পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়া শেষে আপনার ইচ্ছা ও স্বপ্ন পূরণের একটি দেশর ছবি আপনার সামনে ভেসে উঠবে আশাকরি।
এই পোস্টে যা য থাকছেঃ ইউরোপের নাগরিকত্ব সহজে পাওয়া ১০টি দেশ
- ইউরোপ সম্পর্কে ধারণা
-
ইউরোপের দেশগুলোতে কেন সবাই নাগরিকত্ব পেতে চায়
- ইউরোপের দেশগুলোতে নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রধান উপায় সমূহ
- ইউরোপের ডেনমার্কে নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ উপায়
- যেভাবে ইউরোপীয় দেশ বেলজিয়ামে সহজে নাগরিকত্ব পারবেন
- ইউরোপের দেশ যুক্তরাজ্যে সহজে নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়
- ইউরোপে আয়ারল্যান্ড দেশে নাগরিকত্ব পাওয়ার সহজ উপায়
- সুইডেন ইউরোপের সহজে নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়
- ইউরোপের দেশ পর্তুগালে নাগরিকত্ব পাওয়ার সহজ উপায়
- ইউরোপীয় দেশ মাল্টায় নাগরিকত্ব পাওয়ার সহজ উপায়
- যেভাবে ইউরোপীয় দেশ ফ্রান্সে নাগরিকত্ব পারবেন
- ইউরোপের দেশ নরওয়েতে নাগরিকত্ব পাওয়ার সহজ উপায়
- ইউরোপীয় দেশ নেদারল্যান্ডসে নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়
- ইউরোপে নাগরিকত্ব পাওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য
ইউরোপ সম্পর্কে ধারণা
ইউরোপ সম্পর্কে ধারণা দিতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় এটি বিশ্বের সবচেয়ে ছোট মহাদেশগুলোর মধ্যে একটি, তবে এই মহাদেশ ইতিহাস, সংস্কৃতি, আধুনিক প্রযুক্তি এবং অর্থনৈতিকভাবে অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এই মহাদেশে ৪০টিরও বেশি দেশ রয়েছে, যার মধ্যে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি, স্পেন, রাশিয়া ইত্যাদি দেশগুলো উল্লেখযোগ্য।
এই মহাদেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্রের অনেক প্রাচীন সভ্যতা নিদর্শন রয়েছে যার
মধ্যে প্রাচীন গ্রীস, রোমের সম্রাজ্য এবং মধ্যযুগীয় ইউরোপ উল্লেখযোগ্য। এই
মহাদেশ আধুনিক গণতন্ত্রের জন্ম দিয়েছে এবং এখান থেকেই শিল্প বিপ্লব শুরু হয়েছে,
যা বিশ্বের অর্থনীতিতে এবং প্রযুক্তিতে ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে এনেছে।
এই মহাদেশটিতে অনেক প্রসিদ্ধ এবং উন্নত মানের শহর রয়েছে তার মধ্যে লন্ডন, প্যারিস, বার্লিন, রোম এবং মাদ্রিদ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই মহাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং উন্নত জীবনযাত্রা বিশ্বের অধিকাংশ মানুষকেই আকৃষ্ট করে, ফলে বিভিন্ন সময় তাদের পর্যটকের সংখ্যা অনেক বেশি হয়ে থাকে।
এই মহাদেশের কয়েকটি দেশেকে একত্রিত করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন গঠন করা হয়েছে। যা এই মহাদেশের অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক জোট হিসেবে কাজ করে। ইউরোপের সকল দেশগুলোর মধ্যে শান্তি ও সহযোগিতা বজায় রাখতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সামরিক বিভিন্ন কর্মকান্ডেও ইউরোপের দেশগুলো অনেক এগিয়ে আছে।
ইউরোপের দেশগুলোতে কেন সবাই নাগরিকত্ব পেতে চায়
ইউরোপের দেশগুলোতে সবাই নাগরিকত্ব পেতে চাওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে, যা তার নিজের এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উন্নত জীবনযাত্রা, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং সামাজিক সুরক্ষা প্রদানের সহায়তা করে। এগুলো ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনে অনেক সুবিধা বয়ে নিয়ে আসে। আসুন জেনে নেওয়া যায় নাগরিকত্ব পাওয়ার কারণ-
- উন্নত জীবনযাত্রাঃ ইউরোপের বেশিরভাগ দেশগুলোতে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, বাসস্থান এবং সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থা উন্নত। সেখানকার প্রতিটি নাগরিক এসব সুবিধা পেয়ে থাকে, যা প্রত্যেকে জীবনের মান উন্নত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
- শক্তিশালী অর্থনৈতিক সুযোগঃ ইউরোপের অনেক দেশ আছে যেখানে অর্থনৈতিক অবস্থা তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল এবং সমৃদ্ধ। যেখানে আপনার দক্ষতা এবং জ্ঞান অনুযায়ী চাকুরীর প্রচুর সুযোগ রয়েছে এবং ব্যবসার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এজন্যই অনেক মানুষকে এসব দেশের প্রতি আকৃষ্ট করে তোলে।
- ইউরোপীয় ইউনিয়নের সুবিধাঃ ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিকত্ব থাকলে আপনি ইউরোপের যে কোন সদস্য রাষ্ট্রে ইচ্ছামত বসবাস করতে, দক্ষতা ও যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ এবং পছন্দমত ব্যবসা করতে পারবেন। এ সুবিধা ইউরোপ ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশের মধ্যে চলাফেরা ও কাজের সুবিধা বৃদ্ধি করে।
- শিক্ষার সুযোগঃ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অনেক উচ্চমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেখানে শিক্ষা গ্রহণ করলে আপনার কর্মজীবন উন্নত হবে। এক্ষেত্রে আপনি যদি ইউরোপের যেকোন দেশের নাগরিকত্ব পেয়ে থাকেন তাহলে সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম খরচে বা অনেক সময় বিনামূল্যে পড়াশোনা করতে পারবেন।
- রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তাঃ ইউরোপে বেশিরভাগ দেশ রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল এবং সন্ত্রাস ও অপরাধের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। নিরাপত্তা কথা বিবেচনা করে বিশ্বের অনেক মানুষই এসব দেশের উপর আকৃষ্ট হয়ে থাকে, বিশেষ করে যেসব দেশ প্রায়ই সংঘাতপূর্ণ অবস্থায় থাকে।
- ভ্রমণের সুবিধাঃ ইউরোপীয় দেশগুলোর বেশিরভাগের পাসপোর্ট বহুল সমাদৃত এবং এই পাসপোর্ট দিয়ে বিশ্বের অনেক দেশে ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করা সম্ভব। এজন্য এটি পেশাজীবী এবং পর্যটকদের জন্য অনেক সুবিধা বয়ে নিয়ে আসবে।
ইউরোপের দেশগুলোতে নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রধান উপায় সমূহ
ইউরোপের দেশগুলোতে নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রধান কয়েকটি উপায় রয়েছে। এইসব উপায়গুলো বিভিন্ন দেশের নীতিমালা অনুযায়ী কিছুটা ভিন্ন হতে পারে, তবে সাধারণত যে সকল উপায়গুলো নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে সে সকল উপায়গুলো সম্পর্কে আসুন জেনে নেওয়া যাক-
- জন্মসূত্রে নাগরিকত্বঃ কোন কোন দেশে দেখা গেছে, এক দেশের মানুষ নির্দিষ্ট প্রয়োজনে যদি অন্য দেশে যেয়ে বাচ্চা প্রসব করেন তাহলে উক্ত বাচ্চা ওই দেশের নাগরিকত্ব পেয়ে থাকে। এছাড়াও একটি বাচ্চার বাবা অথবা মা যদি ভিন্ন দেশে হয়ে থাকে তাহলে সন্তান বাবা এবং মা উভয় দেশের নাগরিকত্ব হতে পারবেন।
- প্রাকৃতিকীকরণঃ আপনি যদি আপনার দেশ ছাড়া অন্য দেশে বিশেষ প্রয়োজনে অধিক সময় ধরে বসবাস করেন, তাহলে সময়সীমার উপর ভিত্তি করে উক্ত দেশের আইন কানুন অনুযায়ী নাগরিকত্ব হতে পারবেন। তবে এই প্রক্রিয়ায় আপনাকে দেশের ভাষা জানা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জ্ঞানের পরীক্ষা দিতে হবে এবং কোন অপরাধমূলক রেকর্ড থাকা যাবে না।
- বিনিয়োগের মাধ্যমে নাগরিকত্বঃ ইউরোপের এমন অনেক দেশ আছে যেখানে অর্থনৈতিক বিনিয়োগের মাধ্যমে নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় আপনি যে দেশে যেতে চান সেই দেশে নির্দিষ্ট পরিমাণে বিনিয়োগ করলে দ্রুত নাগরিকত্ব পেতে পারেন। এরকম দেশগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি দেশ হলো -মাল্টা, সাইপ্রাস, পর্তুগাল ইত্যাদি।
- বিবাহের মাধ্যমে নাগরিকত্বঃ ইউরোপের প্রায় সব দেশেই বিভিন্ন শর্তসাপেক্ষে বিবাহের মাধ্যমে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। আপনি এক দেশের নাগরিক হয়ে যদি অন্য দেশে নাগরিকের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তাহলে আপনি যাকে বিয়ে করলেন আপনি সেই দেশে নাগরিকত্ব পাবেন। তবে বিবাহ ছাড়াও এখানে দেশভেদে কিছু শর্ত থাকে যা আপনাকে পূরণ করতে হবে।
- আশ্রয় বা শরণার্থীর মাধ্যমে নাগরিকত্বঃ ইউরোপের কয়েকটি দেশ আশ্রয় বা শরণার্থীর মাধ্যমে নাগরিকত্ব প্রদান করে থাকে। যেসব ব্যক্তি যুদ্ধ বা নিপীড়নের শিকারের কারণে তাদের নিজের দেশ থেকে অন্য দেশে আশ্রয় নিয়ে থাকেন তারা অনেক সময় আশ্রয় প্রদানকারী দেশের সরকার কর্তৃক বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে অনেক সময় নাগরিকত্ব পেয়ে থাকেন।
- বিশেষ আবদানের মাধ্যমে নাগরিকত্বঃ আপনার মধ্যে যদি অসাধারণ বা ইউনিক দক্ষতা থাকে, বৈজ্ঞানিক গবেষক হন, খেলাধুলায় দক্ষতা সম্পন্ন, সাংস্কৃতি ক্ষেত্রে বড় অবদান থাকে তাহলে ইউরোপে এমন অনেক দেশ আছে যেখানে আপনি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে আবেদনে আপনার নির্দিষ্ট অবদানের প্রমাণাদি জমা দিতে হবে। উদাহরণ সব বলা যেতে পারে অলিম্পিক অ্যাথলেট, নোবেল বিজয়ী ইত্যাদি।
- বংশগত নাগরিকত্বঃ ইউরোপের এমন দেশ আছে যেখানে আপনি যদি প্রমাণ করতে পারেন যে উনার পূর্বপুরুষ সেই দেশে নাগরিক ছিলেন, তাহলে আপনি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই প্রক্রিয়ায় নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ এবং জটিলতাও কম।
- সংগ্রামী প্রক্রিয়ায় নাগরিকত্বঃ ইউরোপের কয়েকটি দেশে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিশেষ ক্ষেত্রগুলোতে নাগরিকত্ব পাওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে কোন একটা নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর মানুষকে দেশভেদে বিশেষ চুক্তির মাধ্যমে নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়।
ইউরোপের ডেনমার্কে নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ উপায়
ইউরোপের ডেনমার্কে নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ উপায় গুলোর মধ্যে একটি। আপনাদের মধ্যে যাদের স্বপ্ন থাকে ইউরোপের যে কোন একটি দেশে যাওয়ার তাদের জন্য ডেনমার্ক একটি আদর্শ দেশ হতে পারে। এই দেশে প্রবাসী নাগরিকদের জন্য রয়েছে বিশেষ সুবিধা। তবে অন্যান্য দেশের তুলনায় কিছুটা কষ্ট ও সময় বেশি লাগে নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে।
এই দেশে বৈধভাবে বসবাস করার ক্ষেত্রে আপনাকে ৯ বছর অবস্থান করতে হবে, তাহলে আপনি
সেখানকার নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবে এবং নাগরিকত্বের সকল সুবিধা পাবেন।
এছাড়াও এখানে ডেনীও ভাষায় ইন্টারমিডিয়েট অর্থাৎ বি-২ লেভেলের ভাষাগত দক্ষতা
থাকতে হবে। তবে এই দেশে নাগরিকত্ব পেলে আপনি দ্বৈত নাগরিকত্ব হওয়ার সুযোগ গ্রহণ
করতে পারবেন।
যেভাবে ইউরোপীয় দেশ বেলজিয়ামে সহজে নাগরিকত্ব পারবেন
যেভাবে ইউরোপীয় দেশ বেলজিয়ামে সহজে নাগরিকত্ব পারবেন তা হয়তো আপনার কাছে সহজ মনে হবে। এই দেশটির শিথিল অভিবাসন নীতিমালা যে কাউকে দেশটিতে নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে আকৃষ্ট করবে। সাধারণত বৈধ ভাবে মাত্র ৫ বছর অবস্থান করলেই পাওয়া যাবে নাগরিকত্বের সার্টিফিকেট।
এছাড়াও প্রয়োজন হবে বেলজিয়ামের কোন রাষ্ট্রীয় ভাষার উপর দক্ষতার সনদপত্র। একই সাথে সোশ্যাল সিকিউরিটিরসহ বিভিন্ন ট্যাক্স পরিশোধ করার প্রমাণাদি প্রয়োজন হবে। এই দেশের আরও একটি সুবিধা হচ্ছে এখানে আপনি দ্বৈত নাগরিকত্ব পাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
ইউরোপের দেশ যুক্তরাজ্যে সহজে নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়
ইউরোপের দেশ যুক্তরাজ্যে সহজে নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায় গুলোর মধ্যে একটি। তবে অতীতে এদেশে নাগরিকত্ব পাওয়া আরও সহজ ছিল। বর্তমানে কমপক্ষে ১০ বছর থাকার পরে আপনার নাগরিকত্বের জন্য আবেদন সেদেশের কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দিবে। তবে আপনি ইচ্ছা করলেই ৫ বছর পরেও আবেদন করতে পারবেন।
ইউরোপের এই দেশে নাগরিকত্ব পাওয়া কঠিন হলেও চাহিদা ও জনপ্রিয়তা অনেক বেশি থাকায় অনেকেই আবেদন করে। এই দেশে জীবনযাত্রার মান অনেক উন্নত হওয়ার কারণে অনেকেই তাদের নিজস্ব ও সন্তানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য এই দেশে নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক আগ্রহ প্রকাশ করে থাকে।
ইউরোপে আয়ারল্যান্ড দেশে নাগরিকত্ব পাওয়ার সহজ উপায়
ইউরোপে আয়ারল্যান্ড দেশে নাগরিকত্ব পাওয়ার সহজ উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হতে পারে। যারা ইউরোপের দেশ আয়ারল্যান্ডে স্থায়ীভাবে বসবাস করার কথা চিন্তা করছেন তারা এলেন কে বেছে নিতে পারেন। তবে স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য সরকার কর্তৃক কয়েকটি নীতিমালা রয়েছে যা আপনাকে পূরণ করতে হবে।
এর মধ্যে প্রথমেই রয়েছে ৫ বছর সেই দেশে অবস্থান করা। এদেশের ক্ষেত্রে একটি অসুবিধা রয়েছে যা হলো আপনি দ্বৈত নাগরিকত্ব-এর জন্য আবেদন করতে পারবেন না। আপনি সেই দেশে নাগরিকত্ব পেতে চাইলে অবশ্যই আপনার স্থায়ী দেশের নাগরিকত্ব বাতিল করতে হবে, যা সেই দেশে নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।
সুইডেন ইউরোপের সহজে নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়
সুইডেন ইউরোপের সহজে নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায় হিসেবে আপনার কাছে মনে হতে পারে। এই দেশে আপনি স্টুডেন্ট ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেয়ে আপনার ভিসার মেয়াদ ক্রমান্বয়ে মেয়াদ বাড়াতে পারবেন। এভাবে মেয়াদ বাড়াতে বাড়াতে ৫ বছর অতিক্রম করার পরে আপনি সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
এছাড়া আপনি যদি আরও কম সময়ের মধ্যে দেশটিতে নাগরিকত্ব পেতে চান তাহলে অবশ্যই
আপনাকে সুইডিশ কোন নাগরিককে বিয়ে করে নাগরিকত্ব পেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে
আপনার নাগরিকত্ব পেতে সময় লাগবে মাত্র সর্বনিম্ন ২ বছর এবং সর্বোচ্চ ৩৯ মাস। তবে
নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে সুইডিশ ভাষা জানতেই হবে এমন বাধ্যবাধকতা নাই।
ইউরোপের দেশ পর্তুগালে নাগরিকত্ব পাওয়ার সহজ উপায়
ইউরোপের দেশ পর্তুগালে নাগরিকত্ব পাওয়ার সহজ উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম। পর্তুগালের সরকার বিদেশীদের নাগরিকত্বের জন্য একটি সহজ প্রক্রিয়া চালু করেছে। আপনাকে পর্তুগালের নাগরিকত্ব পেতে হলে কমপক্ষে ৫ বছর দেশটিতে বসবাস করতে হবে। এছাড়াও দেশটিতে ভিসা পেতে গেলে “গোল্ডেন ভিসা” নামে একটি ভিসা আছে যা খুবই জনপ্রিয়।
বিনিয়োগের মাধ্যমেও বিশেষ করে রিয়েল এস্টেট বিনিয়োগ করে এই ভিসা প্রগ্রামে অংশগ্রহণ করে নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ হতে পারে আপনার জন্য। সে ক্ষেত্রে আপনার কাছে বিনিয়োগ করার মতো টাকা থাকতে হবে। আপনাকে ৫ বছরের সব সময়টা এদেশে না থাকলেও হবে। তবে বছরে ২ সপ্তাহ অবশ্যই আপনাকে পর্তুগালে বসবাস করতে হবে। এভাবে আপনি কমপক্ষে ৫ বছর বসবাস করলে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ইউরোপীয় দেশ মাল্টায় নাগরিকত্ব পাওয়ার সহজ উপায়
ইউরোপীয় দেশ মাল্টায় নাগরিকত্ব পাওয়ার সহজ উপায় গুলোর মধ্যে দ্বিতীয় অন্যতম। এটি মূলত একটি দ্বীপ রাষ্ট্র, যা ইউরোপের অন্যতম প্রিয় দেশ হয়ে উঠেছে নাগরিকত্ব প্রাপ্তির ক্ষেত্রে। এই দেশে নাগরিকত্ব পাওয়ার সবচেয়ে দ্রুততম এবং সহজ উপায় হচ্ছে বিনিয়োগ প্রোগ্রামের মাধ্যমে আবেদন করা।
এই প্রোগ্রামের আওতায় আবেদন প্রার্থীদের দেশের অর্থনীতিতে সরাসরি বিনিয়োগ করতে হবে। বিনিয়োগ করা থেকে শুরু করে নাগরিকত্ব পাওয়া পর্যন্ত সম্পূর্ণ কাজ শেষ হতে আনুমানিক ১ থেকে ৩ বছরের মত সময় লাগবে। আপনি যদি এই দেশে আনুমানিক ৮ লাখ ইউরো বিনিয়োগ করতে পারেন তাহলে সহজে নাগিরিক্ত পেতে পারেন। তবে এই বিনিয়োগের পরিমাণ সবার জন্য সমান নয়।
যেভাবে ইউরোপীয় দেশ ফ্রান্সে নাগরিকত্ব পারবেন
যেভাবে ইউরোপীয় দেশ ফ্রান্সে নাগরিকত্ব পারবেন তা হয়তো আপনার কাছে সহজ মনে হবে।এখানে অনেকেই এমন আছে যারা তাদের দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতাকে ফ্রান্সের সরকারের কাছে তুলে ধরে আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে থাকার ব্যবস্থা চেয়ে থাকে। এভাবে যদি আপনি ৫ বছর সেখানে থাকেন তাহলে আপনি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
এছাড়াও আপনি যদি স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন তাহলে অতি সহজেই আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী ফ্রান্সের যে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে পড়াশোনার মাধ্যমে সেখানে থাকতে পারবেন এবং ৫ বছর অতিক্রমের পর নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবেন। যদি সেই পড়াশোনার করার ভাষা ফ্রেশ ভাষায় হয়ে থাকে তাহলে মাত্র দুই বছরের মধ্যে আপনি নাগরিকত্ব লাভের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ইউরোপের দেশ নরওয়েতে নাগরিকত্ব পাওয়ার সহজ উপায়
ইউরোপের দেশ নরওয়েতে নাগরিকত্ব পাওয়ার সহজ উপায় গুলোর মধ্যে একটি। এই দেশটি প্রাকৃতিক দিক দিয়ে খুবই সুন্দর একটি দেশ। ২০১৫ সালের পর থেকে এই দেশটিতে আদিবাসীদের নাগরিকত্ব লাভের সুযোগ করে দেওয়ার ক্ষেত্রে খুব সহজ করে দিয়েছে। আপনি আপনার নিজের দেশ এবং নরওয়ের দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে সেখানে থাকতে পারবেন।
এক্ষেত্রে নরওয়ের সরকারের পক্ষ থেকে কোন বাধা প্রদান করবে না। তবে আপনাকে
নরওয়েতে কমপক্ষে ৭ বছর থাকতে হবে। এই সময়কাল আপনি স্টুডেন্ট, ওয়ার্ক
পারমিট অথবা অন্য কোন মাধ্যম নিয়ে থাকতে পারেন। বিভিন্ন মাধ্যম গুলো হতে
সময় বাড়িয়ে বাড়িয়ে ৭ বছর অতিক্রম করার পরে আপনি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন
করতে পারবেন।
তবে এখানে বলে রাখা ভালো আপনার নাগরিকত্ব পাওয়ার পূর্বে সেখানকার পুলিশের ক্লিয়ারেন্স অবশ্যই লাগবে। সেখানে থাকা অবস্থায় বিগত দিনগুলোতে আপনার যদি কোন রেকর্ড থাকে তাহলে আপনার আবেদনটি সরাসরি বাতিল হয়ে যাবে। কিন্তু যদি কোন রেকর্ড না থাকে তাহলে তারা একটি রিপোর্ট প্রদান করবে যার মাধ্যমে আপনার আবেদনটি অনুমোদিত হবে।
ইউরোপীয় দেশ নেদারল্যান্ডসে নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়
ইউরোপীয় দেশ নেদারল্যান্ডসে নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায় খুবই সহজ। এই দেশের নাগরিকত্ব হতে হলে এদেশেও আপনাকে কমপক্ষে ৫ বছর থাকতে হবে। এরপরও আরো ২ টি শর্ত আপনাকে পূরণ করতে হবে। এই শব্দ দুটি তুলনামূলক সহজ কিন্তু অবশ্যই পূরণ করতে হবে। এখন জেনে নেওয়া যাক শর্তগুলো সম্পর্কে।
প্রথম শর্তের মধ্যে আছে, সেদেশের কর্তৃপক্ষ আপনাকে দ্বৈত নাগরিকত্ব দিবেনা।
অর্থাৎ আপনি যদি নিজের দেশের নাগরিক হয়ে থাকে তাহলে তাদের দেশের নাগরিকত্ব
পেতে হলে আপনাকে নিজের দেশের নাগরিকত্ব বাতিল করতে হবে।
দ্বিতীয় শর্তের মধ্যে রয়েছে, সেদেশের নাগের তত্ত্ব পেতে হলে আপনাকে সে দেশের কর্তৃপক্ষের নিকট একটি বিশেষ পরীক্ষা দিতে হবে। সে পরীক্ষায় সে দেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, জাতীয়তা, নিয়ম শৃঙ্খলা ইত্যাদি বিষয়াদি নিয়ে প্রশ্ন থাকবে। সেজন্য আপনাকে এসব বিষয় সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা থাকতে হবে।
ইউরোপে নাগরিকত্ব পাওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য
ইউরোপে নাগরিকত্ব পাওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কে আমি একটি কথাই বলবো সবার ক্ষেত্রে একটা দেশ ভালো নাও লাগতে পারে। আপনার পছন্দ মত দেশে এবং আপনার সাধ্যমত শর্ত পূরণ সাপেক্ষে ইউরোপের দেশগুলো হতে নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য একটি দেশকে প্রথমে বেছে নিতে হবে। তবে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে পর্তুগাল, মাল্টা এবং স্পেনসহ আরো কয়েকটি দেশে তুলনামূলকভাবে নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ।
যেহেতু প্রতিটা দেশেই নাগরিকত্ব প্রাপ্তির ক্ষেত্রে কিছু শর্তাবলী থাকে, তাই
আপনাকে প্রাথমিকভাবে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট দেশের আইন ও নীতিমালা সম্পর্কে
বিস্তারিতভাবে জানতে হবে। এক্ষেত্রে বিনিয়োগের মাধ্যমে যেসব দেশে নাগরিকত্ব
পাওয়ার সুযোগ আছে, সেসব দেশের জন্য আপনি ওই সুযোগটিকে কাজে লাগাতে
পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনাকে আর্থিকভাবে প্রস্তুত ও স্বাবলম্বী থাকতে হবে।
আজকের পোস্টে আমি যেসব দেশগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি, সেসব দেশগুলোর নাম অবশ্যই আপনি শুনেছেন এবং এই সমস্ত দেশগুলোতে নাগরিকত্ব পাওয়া মোটামুটি সহজ। কারণ তারা নাগরিকত্বের আবেদনগুলো সহজে অনুমতি প্রদান করে, অর্থাৎ আবেদন করলে রিজেক্ট খুব কম হয়ে থাকে।
আশা করি আজকের এই পোস্টটা আপনাদের অনেক কাজে লাগবে। সঠিক সময়ে, সঠিক পরিকল্পনা
নিয়ে এগিয়ে যাবেন, দেখবেন আপনার স্বপ্ন পূরণ হবে। ভবিষ্যতে এই পোস্টের কোন
আপডেট অথবা নতুন কোন পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।
সবাই সুস্থ থাকবেন, ভালো থাকবেন, পছন্দের দেশ নির্ধারণ করে সে অনুযায়ী নিজেকে
তৈরি করবেন। সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ........
অজানা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url