অল্প পুঁজিতে গ্রামে লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া ২০ টি
অল্প পুঁজিতে গ্রামে লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে আপনি জানতে চাচ্ছেন। তাহলে আপনারা খোঁজাখুঁজি করতে হবে না আমার এই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত খুব ভালোভাবে পড়লেই আপনিও হয়তো পেতে পারেন আপনার পছন্দমত একটি ব্যবসার আইডিয়া।
আপনার বাসা যদি গ্রামে হয়ে থাকে এবং আপনার হাতে মূলধন যদি খুব কম থাকে তাহলে আপনি ইচ্ছা করলেই আপনার বাড়ির পাশে অথবা বাড়ির কাছের কোন গঞ্জে বা বাজারে ব্যবসা করে মাসে প্রায় 30 থেকে ৩৫ হাজার বা আরো বেশি টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
আজকের পোস্টে যা যা থাকছেঃ অল্প পুজিতে গ্রামে লাভজনক ব্যবসা আইডিয়া
- লাভজনক ব্যবসা বলতে কী বোঝায়
- স্বল্প পুঁজিতে গ্রামে লাভজনক ব্যবসা করার সুবিধা
- গ্রামে কাঁচা সবজির ব্যবসা করে লাভবান হওয়া
- মুদিখানার দোকান দিয়ে গ্রামে লাভজনক ব্যবসা
- বিউটি পার্লারের ব্যবসা করে লাভবান হওয়া
- গ্রামে মুরগি পালনের সাথে মাছ চাষ করে লাভবান হওয়া
- গ্রামে বালু বিক্রি করাকে লাভজনক ব্যবসায় দাঁড় করানো
- গ্রামে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে চাউল বিক্রি করা
- ওষুধের দোকান বা ফার্মেসির ব্যবসার দ্বারা লাভবান হওয়া
- গ্রামে লাভজনক ব্যবসার মধ্যে সরিষা বিক্রি করা
- গ্রামে লাভজনক ব্যবসা আছে রড সিমেন্টের দোকান
- গ্রামে বিজনেস আইডিয়ার মধ্যে থাইগ্লাসের ব্যবসা
- প্রাইভেট অথবা টিউশনির মাধ্যমে গ্রামে লাভবান হওয়া
- অল্প পুঁজিতে গ্রামে লাভজনক ব্যবসায় অনলাইন সেবা প্রদান
- বিকাশ ও মোবাইল লোডের মাধ্যমে গ্রামে লাভবান হওয়া
- গ্রামে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে হস্তশিল্পর ব্যবসা
- সার, বীজ ও কীটনাশকের দোকান দিয়ে লাভবান হওয়া
- গ্রামে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে লাইব্রেরীর দোকান দেওয়া
- মাশরুম চাষ করে স্বল্প পুঁজিতে গ্রামে লাভজনক ব্যবসায়ী হওয়া
- দুধ ও দুগ্ধজাতীয় দ্রব্যের ব্যবসা গ্রামে করে লাভবান হওয়া
- অল্প পুঁজিতে গ্রামে লাভজনক ব্যবসায় বেকারির দোকান
- অমৌসুমী ও বিদেশী ফল উৎপাদন করে গ্রামে লাভবান হওয়া
- স্বল্প পুঁজিতে গ্রামে লাভজনক ব্যবসা করার প্রতিবন্ধকতা
- অল্প পুঁজিতে গ্রামে লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কের লেখকের মন্তব্য
লাভজনক ব্যবসা বলতে কী বোঝায়
লাভজনক ব্যবসা বলতে এমন একটি ব্যবসাকে বোঝায়, যা নিয়মিতভাবে মুনাফা অর্জন করে এবং ব্যবসার মালিক বা অংশীদারীদের জন্য আর্থিক সুবিধা নিয়ে আসে। একটি লাভজনক ব্যবসার মূল বৈশিষ্ট্য হলো উচ্চ চাহিদা সম্পন্ন পণ্য বা সেবা প্রদান করা, যা বাজারে সহজে বিক্রি হয়। এছাড়া, ব্যবসার খরচ কম রাখা এবং সঠিক বাজার বিশ্লেষণ করে গ্রাফদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য বা সেবা প্রদান করা গুরুত্বপূর্ণ।
উন্নত গ্রাহক সেবা এবং সঠিক বিপণন কৌশল ব্যবহার করে ব্যবসা প্রসার ঘটানো সম্ভব। নতুনত্ব এবং উদ্ভাবন যোগ করলে গ্রাহকদের আকর্ষণ করা সহজ হয়, যা ব্যবসার মুনাফা বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। সব মিলিয়ে, লাভজনক ব্যবসা হল এমন একটি উদ্যোগ, যা সঠিক পরিকল্পনা, বাজার বিশ্লেষণ এবং গ্রাহক সেবার মাধ্যমে নিয়মিত মুনাফা অর্জন করা।
স্বল্প পুঁজিতে গ্রামে লাভজনক ব্যবসা করার সুবিধা
স্বল্প পুঁজিতে গ্রামে লাভজনক ব্যবসা করার অনেক সুবিধা রয়েছে, যা শহরের তুলনায় বেশ আলাদা এবং আকর্ষণীয় হতে পারে। তবে আপনাকে এই সুবিধাগুলো চিহ্নিত করতে হবে এবং সেগুলো নিজের ব্যবসায় অতিরিক্ত সুবিধা হিসাবে কাজে লাগাতে হবে। এখন আসুন জেনে নেওয়া যাক গ্রামে ব্যবসা করলে কোন কোন সুবিধা পাওয়া সম্ভব-
- গ্রামের পরিবেশ সাধারণত শান্ত থাকে এবং তুলনামূলক প্রতিযোগিতা কম থাকে, যা আপনার ব্যবসা পরিচালনাকে সহজ করে তুলতে সহায়তা করবে। এছাড়াও গ্রামের মানুষদের মধ্যে সামাজিক বন্ধন শক্তিশালী থাকে, যা ব্যবসার জন্য একটি বিশ্বস্ত প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে সহায়ক হবে।
- গ্রামীণ জনপদে জীবনযাত্রার খরচ কম থাকে, যা আপনার ব্যবসার প্রাথমিক খরচ কমাতে সাহায্য করবে। জমি অথবা দোকান ভাড়া শহরের তুলনায় অনেক কম থাকে, ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় স্থাপনা তৈরি বা ভাড়া নেওয়া সহজ হয়। এছাড়াও গ্রামকে শহরায়ন করার জন্য সরকারের সাথে সাথে বিভিন্ন ব্যাংক অতি অল্প মুনাফায় ঋণ দেয়া আসছে। যার মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যবসায় প্রাথমিকভাবে বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়াতে পারেন।
- বর্তমান সরকার এখন গ্রামীণ উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আসছে, যে সুযোগটিকে আপনিও কাজে লাগাতে পারেন। “আমার-গ্রাম আমার-শহর” প্রকল্পের মাধ্যমে প্রত্যেক গ্রামকে আধুনিক নগরায়নের সুবিধা সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে উন্নত সড়ক যোগাযোগ, ইন্টারনেট সংযোগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং অন্যান্য আরো নাগরিক সুবিধা।
- গ্রামে কৃষি এবং কৃষিভিত্তিক ব্যবসার প্রচুর সুযোগ রয়েছে। স্থানীয় কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণ, সংরক্ষণ এবং বাজারজাতকরণে বিনিয়োগ করে লাভবান হওয়া সম্ভব। এছাড়াও আপনার গ্রামটি যদি পর্যটকের আসা-যাওয়ার থেকে থাকে তাহলে সেই গ্রামের স্থানীয় সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা করতে পারেন।
- গ্রামের ব্যবসায় সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে সহজে ও সস্তায় সবকিছু পাওয়া যায়। পাশাপাশি আপনি অতি সহজেই আপনার কাজের জন্য কাজের লোক পাবেন। এছাড়াও আপনার ব্যবসার অনেক কিছুর কাঁচামালও খুব সহজে গ্রামে পেতে পারেন।
গ্রামে কাঁচা সবজির ব্যবসা করে লাভবান হওয়া
গ্রামের তাজা টাটকা সবজি আমার আপনার মত সবাই পছন্দ করে। একজন মানুষ যদি শহরে বাস করে তাও সে চায় তাজা টাটকা সবজি খেতে। সুতরাং গ্রাম অথবা শহর যেখানে হোক না কেন তাজা সবজির চাহিদা অনেক বেশি, যা আস্তে আস্তে বেড়েই চলেছে। সুতরাং আপনি এই চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে গ্রাম থেকে গ্রামে অথবা গ্রাম থেকে শহরে কাঁচা সবজি বিক্রি করে লাভবান হতে পারেন।
যেহেতু কাঁচা সবজি গ্রামেই উৎপাদন হয় সেহেতু আপনি খুব সহজেই এবং কম দামেই তাজা টাটকা সবজি ক্রয় করতে পারবেন, যা আপনি চাহিদা অনুযায়ী বিক্রি করে লাভবান হতে পারবেন। এসব তাজা টাটকা সবজির মধ্যে উল্লেখযোগ্য সবজিগুলো হলো- লাউ, বেগুন, টমেটো, মরিচ, মিষ্টি কুমড়া, ঢেঁড়স, আলু, পেঁপে, কপি ইত্যাদি। এছাড়াও শাকের মধ্যে রয়েছে লাল শাক, পালং শাক, পুই শাক ইত্যাদি।
গ্রামের কৃষকদের কাছে থেকে সবজি কিনে তা শহরের বিভিন্ন দোকান বা খুচরা বাজারে বিক্রয় করতে পারেন। যদি আপনি সবজি বিক্রয়ের ক্ষেত্রে গ্রামে সামান্য পরিমান লাভ পেয়ে থাকেন তাহলে গ্রামের খুচরা বাজারেই বিক্রি করে দিবেন, কারণ বর্তমানে যাতায়াতের খরচ এবং বিভিন্ন আনুষাঙ্গিক চাঁদা থাকার কারণে শহরে এসে বিক্রি করলে আপনার লাভের পরিমাণ কমে যাবে। এজন্য আপনি শুরুতেই ১০,০০০ টাকা মুলধন নিয়ে ব্যবসা আরাম্ভ করতে পারেন।
মুদিখানার দোকান দিয়ে গ্রামে লাভজনক ব্যবসা
মুদিখানার দোকান এমন একটি দোকান যেখানে নিত্য প্রয়োজনীয় সকল পণ্য পাওয়া যায়। এই ব্যবসা সম্পর্কে সাধারণত সবারই ধারণা রয়েছে। এই ব্যবসাটি কাঁচা সবজির ব্যবসার মতো নয়, যেহেতু প্রতিনিয়তই মানুষের প্রয়োজনের জন্য বিভিন্ন পণ্য এই দোকানে পাওয়া যায় সেহেতু এই ব্যবসার চাহিদা অনেক বেশি।
তবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে এই ব্যবসায় বাকির পরিমাণ বেশি থাকে। তবে আপনাকে
খেয়াল রাখতে হবে বাকির পরিমাণ যেন না থাকে। ব্যবসায় বাকির পরিমাণ যদি বেশি হয়ে
যায় তাহলে আপনি আপনার মূলধনের বেশি অংশ সেখানে চলে যাবে। ফলে আপনি আপনার
ব্যবসাকে বড় করতে পারবেন না।
সেজন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ব্যবসায় বাকিতে পণ্য বিক্রি এড়িয়ে চলার
চেষ্টা করতে হবে। শুরুতেই আপনি অল্প পরিমাণ পুঁজি অর্থাৎ আনুমানিক এক লাখ টাকা
বিনিয়োগ করে এই ব্যবসা দাঁড় করাতে পারেন। পরে আপনি আস্তে আস্তে ব্যবসাকে
বড় করতে পারবেন, সেক্ষেত্রে প্রথমদিকে অবশ্যই আপনাকে বাকিতে পণ্য বিক্রি
বন্ধ রাখতে হবে।
এছাড়াও মাসের প্রথম দিকে এই ব্যবসায় প্রচুর চাপ দেখা যায়, কারণ আমাদের দেশে সাধারণত প্রথমদিকে বিভিন্ন অফিস আদালতে বেতন দিয়ে থাকে। সেজন্য গৃহস্থলীরা একটি মাসের সম্পূর্ণ হিসাব করে বাজার এই দোকান থেকে কিনে নিয়ে আসে। বছরে একটি অথবা দুটি হালখাতার ব্যবস্থা রাখবেন তাহলে আপনার বাকির পরিমাণ কমে যাবে। তবে বাকিতে যদি পণ্য দিতেই হয় সেক্ষেত্রে আপনাকে পণ্যের দামের উপর কৌশল অবলম্বন করতে হবে।
বিউটি পার্লারের ব্যবসা করে লাভবান হওয়া
বিউটি পার্লারের ব্যবসা করে আপনি লাভবান হতে পারেন। গ্রাম হোক আর শহর হোক সব জায়গার মেয়েদেরই একটি শখ থাকে তাদের সৌন্দর্যকে বর্ধিত করার। সেক্ষেত্রে বিউটি পার্লার একটি মাধ্যম, যার সাহায্যে মেয়েরা নিজেকে তাদের ইচ্ছামত সাজায়। শহরে বিউটি পার্লারের ব্যবহার খুব বেশি হয়ে থাকে, কিন্তু বর্তমানে গ্রামেও এর ব্যতিক্রম হয় না।
সেজন্যই এই চাহিদাটিকে কাজে লাগিয়ে আপনি একটি বিউটি পার্লারের ব্যবসা করে লাভবান
হতে পারেন। বর্তমানে প্রতিটি গ্রামকে শহরায়ন করার যে উদ্যোগ সরকার নিয়েছে
সেখানে বিউটি পার্লার একটি মাধ্যম যার সাহায্যে গ্রামের মেয়েদেরকে
শহরের মেয়েদের সাজে সাজিয়ে শহরায়নের লক্ষ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া
সম্ভব।
দিনে দিনে মেয়েরা নিজেদেরকে আধুনিক সাজে সাজানোর জন্য বিউটি পার্লারের চাহিদা
আস্তে আস্তে বেড়েই চলেছে এবং ভবিষ্যতে আরও বেশি বাড়বে। বিশেষ করে বিভিন্ন
অনুষ্ঠান এবং বিয়ের অনুষ্ঠানে অবশ্যই মেয়েরা বিউটি পার্লার ব্যবহার করে থাকে।
এজন্য আপনাকে প্রথমেই বিউটি পার্লারের বিভিন্ন কাঁচামালের ব্যবহার এবং অন্যান্য
পদ্ধতি সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে।
এই ব্যবসায় তুলনামূলক পুঁজি কম লাগে। প্রাথমিকভাবে একটি দোকানকে সুন্দরভাবে ডেকোরেশন করে বিউটি পার্লারের বিভিন্ন কাঁচামাল ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি কিনতেই আপনার কিছুটা টাকা খরচ হবে। কিন্তু পরে খরচা আর তেমন লাগে না। এই ব্যবসায় বাকির প্রবণতা খুব কম থাকে।
আপনি যদি নিজেই সৌন্দর্য বর্ধনের অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন তাহলে লাভ সবচেয়ে বেশি আসবে, আর যদি না পারেন তাহলে উন্নত মানের এবং অভিজ্ঞ ট্রেনারের সাহায্যে এই ব্যবসাটি করতে পারেন। এই ব্যবসার জন্য দোকানের জায়গা নির্বাচন সবচেয়ে প্রধান বিষয়। খেয়াল রাখতে হবে যেখানে লোকসমাগম বেশি সেখানে দোকানের জায়গা নির্বাচন করতে হবে। এছাড়াও যোগাযোগের ব্যবস্থা ভালো ও সহজ থাকা খুবই জরুরি।
গ্রামে মুরগি পালনের সাথে মাছ চাষ করে লাভবান হওয়া
বাঙালি মানেই মাছে ভাতে বাঙালি হতে চায় সবাই। বর্তমানে মাছ ও মাংসের চাহিদা বেড়েই চলেছে। সাধারণত মাংসের দাম গরীব লোকেদের ক্রয় সীমার উপরে হওয়ায় মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং গরিব লোকেরা মুরগির মাংসের উপর আগ্রহ বাড়িয়েছে। এই আগ্রহটাকে কাজে লাগিয়ে আপনি একই সাথে মাছ ও মুরগি পালন করে লাভবান হতে পারেন।
মাছ চাষের জন্য সবচেয়ে ভালো স্থান হচ্ছে গ্রাম আবার মুরগি পালন বা উৎপাদনের জন্য
সবচেয়ে ভালো এবং নিরাপদ জায়গা হচ্ছে গ্রামের খোলামেলা পরিবেশ, যা শহরে
পাওয়া অসম্ভব। মুরগি পালন এবং মাছ চাষ একসাথে করতে হলে আপনাকে কয়েকটি কৌশল
অবলম্বন করতে হবে।
সেক্ষেত্রে মুরগি থাকার জন্য আলাদা কোন জায়গা ব্যবস্থা না করে আপনি যদি মাছের
চাষ করা কুকুরের উপরেই মুরগির থাকার জায়গা নির্বাচন করেন তাহলে আপনার অনেক
জায়গা কম লাগবে। এক্ষেত্রে কয়েক ধরনের মুরগি যেমন দেশি মুরগি, কক,
পোল্ট্রি, লেয়ার অথবা অন্য কোন জাতের মুরগি পালন করতে পারেন।
আপনি ইচ্ছা করলে ডিম পাড়া মুরগিও পালন করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনি একসাথে মাছ,
মাংস এবং ডিম সবই পেয়ে যাবেন। শুরুতেই আপনি অল্প পরিমাণে মুরগি এবং মাছ চাষ করতে
পারেন। সে ক্ষেত্রে প্রথমেই আপনি যদি ১০০টি দেশি মুরগি ৩ মাস পালন করেন
তাহলে কমপক্ষে আপনার ৮০০০ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। পরেরবার আপনি মুরগির সংখ্যা
আরো বাড়িয়ে ৫০০ থেকে ১০০০ পর্যন্ত করতে পারেন।
মাছের ক্ষেত্রেও আপনি এই পদ্ধতিটা অনুসরণ করতে পারেন। তবে দেশী মুরগি ছাড়া
অন্য মুরগি পালন করলে আপনাকে তার রোগবালাই সম্পর্কের সর্বাত্মক সচেতন থাকতে হবে
এবং খামারের ভিতরে প্রবেশ করার পূর্বে নিজেকে জীবাণুনাশক করতে হবে।
মুরগির ক্ষেত্রে পোল্ট্রি মুরগিগুলোর রোগ বালাই খুবই মারাত্মক আকার ধারণ করে, যা
আপনার সমস্ত খামারকে ধ্বংস করে দিতে পারে।
গ্রামে বালু বিক্রি করাকে লাভজনক ব্যবসায় দাঁড় করানো
দিন বদলের সাথে সাথে গ্রামের বাড়িগুলো আর আগের মত কাদামাটির তৈরি করে না সবাই চেষ্টা করে তাদের নিজের বাড়িটি ইটগাথুনির সাহায্যে ভালোভাবে সুন্দর করে তৈরি করা। এই ইটগাথুনির বাড়ি তৈরিতে বালু একটি প্রধান উপাদান, যা সাহায্য ছাড়া বাড়ি তৈরি করা সম্ভব নয়। সেজন্যই আপনি এই সুযোগটি কাজে লাগাতে পারেন। সাধারণত অল্প পুঁজিতেই আপনি এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন এবং পরে লাভ হলে বড় করতে পারবেন।
এছাড়াও এই ব্যবসাতে ভালো স্টক করে রাখার জন্য ফাঁকা জায়গার প্রয়োজন হয়, যা গ্রামে খুব সহজেই পাওয়া যায়। তবে আপনার ব্যবসা করার স্থানটির আশেপাশে যদি কোন নদী থাকে তাহলে আপনার খরচটি আরো কমে যাবে এবং লাভের পরিমাণ বেড়ে যাবে। নদী থেকে সব সময় ভালো উত্তোলন করা সম্ভব হয় না।
সেজন্যই ভাল উত্তোলনের মৌসুমে আপনি অল্প বিনিয়োগে প্রচুর পরিমাণে ভালো মজুদ করে রাখতে পারেন। সেই বালুগুলো অফমৌসুমে কিছুটা বেশি দামে বিক্রি করে মুনাফার পরিমাণ বাড়িয়ে নিতে পারেন। এছাড়াও নির্দিষ্ট মৌসুমে তো বালু বিক্রয় করতে পারবেন। কিন্তু তখন সরবরাহ বেশি থাকায় মুনাফার পরিমান কম থাকে। এই ব্যবসায় বড় সুবিধা হচ্ছে বাকি নেওয়ার প্রবণতা খুব কম থাকে।
সাধারণত আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের বালু পাওয়া যায়, যা বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে
বিভিন্ন কাজের জন্য বিভিন্ন রকম বালির প্রয়োজন হয়। সেজন্য আপনাকে কয়েক ধরনের
বালু রাখতে হবে, এর মধ্যে রয়েছে ভরাট বালু, চিকন বালু, মোটা বালু, ডুমার
বালু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এ ব্যবসা শুরুতে আপনি ৫০,০০০ টাকা বিনিয়োগ করে
বিভিন্ন ক্যাটাগরির বালু স্টক করতে হবে।
গ্রামে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে চাউল বিক্রি করা
বাঙালি বলতেই আমরা বুঝি মাছে ভাতে বাঙালি। এখানে ভাত মানেই আমরা চাউলকে বুঝি। সাধারণত চাউল একটি নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যবস্তু। যা প্রতিটি বাঙালি প্রতিদিন তিন বেলা অথবা দুই বেলা করে খায়। সেজন্য এর চাহিদা বছরে সব সময় হয়ে থাকে। সুতরাং আপনি এই চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে একটি চাউলের ব্যবসা দাঁড় করিয়ে লাভবান হতে পারেন।
এই চাউলের চাহিদা কখনোই কমবে না, যতদিন আসবে এর চাহিদা বাড়তেই থাকবে। গ্রামে
চাউলের ব্যবসা করা সবচেয়ে লাভজনক, কারণ গ্রামে হোক শহরে হোক সব চাউলই আসে গ্রাম
থেকে। সেজন্য আপনার বাসা যদি গ্রামে হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই এই ব্যবসাতে আপনি
লাভবান হতে পারবেন।
আপনি সাধারণত দুই ভাবেই ব্যবসাটি করতে পারেন। প্রথমটি হচ্ছে আপনি কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান অথবা চাউল পাইকারি দামে ক্রয় করে যানবাহনের সাহায্যে শহরে নিয়ে যেয়ে বড় কোন কোম্পানির কাছে অল্প কিছু মুনাফায় বিক্রি করে লাভবান হতে পারবেন, এক্ষেত্রে আপনার প্রাথমিক মূলধন আনুমানিক ৫ থেকে ১০ লক্ষ টাকা লাগবে, যা সর্বনিম্ন।
পরে আস্তে আস্তে আপনার মূলধন বাড়ির ব্যবসার প্রসার ঘটাতে হবে। দ্বিতীয়ত হচ্ছে আপনি সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান পাইকারি দামে ক্রয় করে তা চাউল করে খুচরা অথবা পাইকারি লোকাল মার্কেটে অর্থাৎ আপনার এলাকায় বিক্রয় করে লাভবান হতে পারেন। এই পদ্ধতিতে ব্যবসা করলে আপনার মুনাফা বেশি হবে তবে সময় বেশি লাগবে।
ওষুধের দোকান বা ফার্মেসির ব্যবসার দ্বারা লাভবান হওয়া
যে কোন দেশের মানুষের রোগ বালাই দিন দিন বেড়েই চলেছে, সে হারে ওষুধের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। ফলে সব বয়সী মানুষের ক্ষেত্রেই ওষুধকে একটি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য হিসেবে ধরা যায়। আমরা জানি, দেশের সব ভালো হাসপাতাল এবং ক্লিনিক সাধারণত শহরে অবস্থিত। সেজন্য এটার মনে করে ভুল হবে, যে শহরের মানুষেরই শুধু অসুখ হয়।
অসুখ গুরুতর হওয়ার সাথে সাথে গ্রামের মানুষরা শহরের চিকিৎসা নিয়ে আবার গ্রামে
ফিরে যায় এবং ওষুধ চলতেই থাকে। সেজন্য আপনি যদি গ্রামে একটি ভালো মানের ঔষধের
দোকান বা ফার্মেসী ব্যবসা প্রতিষ্ঠিত করেন তাহলে গ্রামের মানুষ ওষুধ কেনার জন্য
শহরে না যেয়ে আপনার দোকান থেকেই তাদের প্রয়োজনীয় ওষুধ ক্রয় করবে।
সে ক্ষেত্রে প্রথমে আপনাকে প্রয়োজন হলে ওষুধের দাম শহরে যেরকম দেওয়া হয় সেরকমই
আপনাকেও দিতে হবে। এতে আপনার লাভ কম হলেও গ্রাহক সংখ্যা আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে
ফলে লাভও আস্তে আস্তে বাড়তে থাকবে। প্রথম দিকে গ্রাহক সংখ্যা কম হতে পারে এটাই
স্বাভাবিক, কিন্তু আপনি যখন বিক্রয় মূল্য শহরের মতো রাখবেন তখন দেখবেন গ্রাহক
আস্তে আস্তে বাড়ছে।
ওষুধের দোকান বা ফার্মেসি দেওয়ার জন্য দোকানের স্থান নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও যোগাযোগ ব্যবস্থা এই ব্যবসার ক্ষেত্রে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আপনার বাসা যদি গ্রামের কোন মোর অথবা বাজারের কাছে হয়ে থাকে তাহলে আপনার জন্য এই ব্যবসাটি সবচেয়ে উত্তম।
গ্রামে লাভজনক ব্যবসার মধ্যে সরিষা বিক্রি করা
গ্রামে অথবা শহরের লোকেদের বিভিন্ন রান্নাবান্নার কাজে সরিষার তেল একটি প্রয়োজনীয় উপাদান হিসেবে অনেকেই ব্যবহার করে থাকে। তবে বেশিরভাগ পরিবার সয়াবিন তেল ব্যবহার করে থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তবে বর্তমানে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে অনেকেই এখন সরিষার তেলের উপর নির্ভরশীলতা বাড়িয়ে দিয়েছে।
এই আগ্রহটাকে কাজে লাগিয়ে আপনি খুব সহজেই গ্রামের পরিবেশে সরিষার তেলের বা সরিষা বিক্রি করার ব্যবসা শুরু করতে পারেন। যদি আপনি শুধু সরিষা বিক্রি করে ব্যবসা করতে চান তাহলে আপনার শুরুতেই অল্প পুজিতে আনুমানিক ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার মধ্যে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
তবে যদি সরিষার তেলের ব্যবসা করতে চান তাহলে সরিষা থেকে তেল বের করা মেশিন কিনতে হয়, যাকে গ্রামের ভাষায় ঘানি ভাঙ্গা বলা হয়। সেক্ষেত্রে আপনার প্রাথমিক খরচ অনেক বেড়ে যেয়ে আনুমানিক ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। সরিষার তেলের ব্যবসা করলে আপনার মুনাফার পরিমান বেড়ে যাবে, ফলে আপনি ব্যবসাটিকে খুব দ্রুত লাভজনক ব্যবসায় পরিণত করতে পারবেন।
গ্রামে লাভজনক ব্যবসা আছে রড সিমেন্টের দোকান
গ্রামের বাড়ি ঘর তৈরিতে বর্তমানে শহরের ছায়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ফলে বালুর সাথে সাথে রড সিমেন্টের দোকানের ব্যবসার চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। আপনি ইচ্ছা করলে এই চাহিদাকে মেটানোর জন্য রড সিমেন্টের দোকান দিতে পারেন। তবে এই ব্যবসার আইডিয়াটি অনেক লাভজনক কিন্তু মূলধন অনেক লাগবে।
শহরের বাসাবাড়ি তৈরিতে রোড সিমেন্ট সাধারণত শহরের বিভিন্ন দোকান অথবা সরাসরি
কোম্পানি থেকে বর্তমানে অনেকেই ক্রয় করছে। কিন্তু গ্রামে এভাবে সম্ভব
হয়নি সেজন্যই যারা বাড়িঘর তৈরি করে তারা গ্রামের বাজারের রড সিমেন্টের দোকান
হতে রড ও সিমেন্ট কিনে ব্যবহার করে। এই ব্যবসায় অনেক সময় গ্রাহকরা বাকিতে
কিনতে চায়, কিন্তু আপনাকে তা কৌশলে এড়িয়ে যেতে হবে।
এই ব্যবসায়ীর শুরুতে যে মূলধন প্রয়োজন হয় তার ব্যবস্থা করতে আপনি বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। তার মধ্যে প্রথমেই আপনি অল্প পুঁজি দিয়ে কিছু মালামাল তুলে পরে সরাসরি কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে লোনের মাধ্যমে মাল তুলে সেই মাল বিক্রি করে কোম্পানিকে আসল দামটি দিয়ে লাভের অংশটি আপনি নিজের কাছে রেখে ধীরে ধীরে ব্যবসাকে বাড়াতে পারেন।
এছাড়াও বর্তমানে ব্যবসা করার জন্য বিভিন্ন ব্যাংক ব্যবসায়িক লোন দিচ্ছে। এই
ব্যাংকগুলোর বিভিন্ন অফারগুলো আপনাকে পর্যালোচনা করে, ব্যাংক নির্বাচন
করে, সেই ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে আপনার ব্যবসাকে বৃদ্ধি করতে পারেন। যেহেতু বাকি
কিছুটা হবেই সেহেতু বছরে একবার অথবা দুইবার হালখাতার ব্যবস্থা করতে
পারেন।
গ্রামে বিজনেস আইডিয়ার মধ্যে থাইগ্লাসের ব্যবসা
গ্রামে বিজনেস আইডিয়ার মধ্যে ফাই গ্লাসের ব্যবসার আইডিয়াটি বর্তমানে খুব ভালো একটি আইডিয়া। শহরের বাসাবাড়ির জানালা এবং অন্যান্য কাজেও থাই গ্লাস ব্যবহার হয়ে থাকে, কিন্তু বর্তমানে গ্রামেও জানালা বা অন্যান্য ক্ষেত্রে থাই গ্লাসের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। ফলে আপনি যদি গ্রামে ব্যবসা দাঁড় করাতে চান তাহলে এই ব্যবসাটি করতে পারেন।
যেহেতু এই ব্যবসার উপকরণগুলো সৌখিনতা এবং শখ পূরণের জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে
সেহেতু এই ব্যবসায় বাঁকির পরিমাণ কম হবে। এই ব্যবসায় দোকানঘর ডেকোরেশনের
প্রয়োজন হয় না শুধুমাত্র কয়েকটি কর্মচারী এবং কিছু থাই গ্লাস সেটিং এর জন্য
কাঁচামালের প্রয়োজন হয়। ফলে আপনি অল্প পুজিতেই আনুমানিক ১ থেকে ১.৫ লক্ষ টাকার
মধ্যে এই ব্যবসা দাঁড় করাতে পারবেন।
ছাই এবং গ্লাসের বিভিন্ন ধরন আছে প্রথমেই আপনাকে সব ধরনের থাই এবং গ্লাস ব্যবহার করা থেকে এড়িয়ে চলতে হবে, কারণ আপনার পুঁজি অল্প। পরে যখন আপনি লাভ করতে করতে ব্যবসা কে বড় করবেন তখন আপনাকে সব ধরনের থাই এবং ক্লাস রাখতে হবে। এছাড়াও কিছু ব্যবসায়িক কৌশল অবলম্বন করতে হবে যেমন আপনি বিভিন্ন ডিজাইনের ক্যাটালগ দোকানে রাখতে পারেন। যা গ্রাহককে আরো আকৃষ্ট করবে।
প্রাইভেট অথবা টিউশনির মাধ্যমে গ্রামে লাভবান হওয়া
ছেলে মেয়ের পড়াশোনাকে নিয়ে সব বাবা-মাই খুবই চিন্তিত। এই চিন্তাকে কাজে লাগিয়ে আপনি প্রাইভেট অথবা টিউশনির মাধ্যমে গ্রামে লাভবান হতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই যে বিষয়ে প্রাইভেট অথবা টিউশনি দিবে সে বিষয় সম্পর্কে আপনার সম্পূর্ণ ধারণা থাকতে হবে, যেন আপনি খুব সহজেই আপনার স্টুডেন্টকে বোঝাতে পারেন।
বর্তমানে প্রাইভেট ও টিউশনির চাহিদা আস্তে আস্তে বেড়েই চলেছে, কারণ ছেলেমেয়েদের
হাতে মোবাইল ফোন বা গেমখেলা জাতীয় বিভিন্ন ডিভাইস দেখা যায়, যা পড়াশোনার উপর
ছেলেমেয়েদের আগ্রহ কমিয়ে দেয়। সে কারণেই অনেক অভিভাবকগণ
তাদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য প্রাইভেট টিউটর অথবা কোচিং সেন্টারের
ব্যবস্থা করে।
অল্প পুঁজিতে গ্রামে লাভজনক ব্যবসায় অনলাইন সেবা প্রদান
বর্তমান যুগ অনলাইনে যুগ। স্কুলের বেতন থেকে শুরু করে চাকুরীতে অ্যাপ্লিকেশন করা পর্যন্ত সবখানেই অনলাইন এর মাধ্যমে বিভিন্ন কাজ করা হয়ে থাকে। যা গ্রামের অনেক মানুষই বুঝতে পারে না। সেক্ষেত্রে আপনি যদি এই ব্যবসাটি গ্রামে দাঁড় করাতে পারেন তাহলে খুবই অল্প পুঁজিতে একটি লাভজনক ব্যবসা হিসেবে অনলাইন সেবা প্রদানকে বেছে নিতে পারেন।
তবে এক্ষেত্রে আপনাকে দোকানের পজিশনটি জনবহুলপূর্ণ এলাকায় হতে হবে। এই ব্যবসা শুরুতেই আনুমানিক ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা লাগবে। এই ব্যবসার মধ্যে যে বিষয়গুলো আপনাকে জানতে হবে তার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন স্কুল কলেজে ভর্তির ফরম পূরণ, চাকুরীর এপ্লিকেশন করা, জমির খাজনা দেওয়া, এনআইডি সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
তবে এই সেবাগুলো আপনার দোকানে থাকার পাশাপাশি যদি মোবাইলে টাকা ট্রান্সফারের
অপশনটি যেমন-বিকাশ, নগদ, টেলিগ্রাম, ইউক্যাশ, শিওর ক্যাশ ইত্যাদি থাকে তাহলে
লাভের পরিমাণ আরো বেড়ে যাবে। কারণ কোন পাওয়ার পূরণ করার পরে তার জন্য যে অনলাইন
চার্জ সেটি এ অনলাইন টাকা ট্রান্সফারের মাধ্যমে আপনি পরিশোধ করতে পারেন।
তবে এক্ষেত্রে সময়ের সাথে সাথে আপনাকে আপডেট থাকতে হবে।
বিকাশ ও মোবাইল লোডের মাধ্যমে গ্রামে লাভবান হওয়া
বিকাশ ও মোবাইল লোডের মাধ্যমে গ্রামে লাভবান হওয়া যায় খুব দ্রুত। সেক্ষেত্রে আপনাকে অনেক সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। বিশেষ করে টাকা পাঠানোর সময় মোবাইল নাম্বারটা সঠিকভাবে বারবার গ্রাহকের কাছ থেকে শুনে দেখে নিতে হবে প্রয়োজন হলে গ্রাহককে নাম্বারটি দেখিয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরে টাকা পাঠাতে হবে।
এই ব্যবসার জন্য আপনাকে প্রথমেই একটি জনবহুলপূর্ণ এলাকায় আপনার দোকানটি নিতে
হবে। এই ব্যবসার সব থেকে বেশি সুবিধা হচ্ছে অতি অল্প পুঁজিতে ব্যবসা করা সম্ভব।
এছাড়াও আরেকটি সুবিধা হচ্ছে প্রতিদিন বিভিন্ন অপারেটর বা মোবাইল সেবা প্রদানকারী
সংস্থা আপনার দোকানে এসে তাদের বিভিন্ন অফার সম্পর্কে আপনাকে অবহিত
করে যাবে।
যা আপনার ব্যবসার ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা হবে। এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো এই ব্যবসায়
লাভ কিছুটা কম কিন্তু আপনি যদি বিকাশ বা অন্য টাকা ট্রান্সফারের সেবার মাধ্যমে
বিভিন্ন কাজ যেমন বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল, গ্যাসের বিল, বিভিন্ন ধরনের
ট্যাক্স, জমির খাজনা ইত্যাদি দিতে পারেন তাহলে আপনার লাভের পরিমাণ বেড়ে
যাবে এবং দ্রুত আপনার ব্যবসাকে প্রসারিত করতে পারবেন।
বিকাশ অথবা এরকম অন্যান্য টাকা ট্রান্সফার মাধ্যমগুলোর সাহায্যে বর্তমানে অনেকেই প্রতারণার শিকার হচ্ছে। সেজন্য আপনাকে সাবধানতা ও বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে হবে। বিশেষ করে টাকা পাঠানোর সময় গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা হাতে না পাওয়া পর্যন্ত মোবাইলে টাকা সেন্ড করবেন না। আবার টাকা রিসিভ করার সময় অবশ্যই নিজস্ব মূল টাকার সাথে গ্রাহক হতে প্রেরিত টাকা যোগ হয়েছে কিনা তা ভালোভাবে চেক করে নিবেন।
গ্রামে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে হস্তশিল্পর ব্যবসা
শহরের আধুনিক বাসা বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের হস্তশিল্প ব্যবহার করে থাকে। এই হস্তশিল্পগুলো শহরের দোকানে আসে মূলত গ্রাম থেকে। গ্রামে এমন অনেক মহিলা আছে যারা প্রশিক্ষণ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের হাতের কাজ করে থাকে, যা তাদের নিজের সংসারের খরচ মিটাতে ভূমিকা রাখে।
আপনি গ্রামে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে হস্তশিল্পের ব্যবসা করতে পারেন। এই ব্যবসায়
লাভের পরিমাণ বেশি এবং অল্প পুঁজিতে আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫ হাজারের মধ্যে আরম্ভ করা
সম্ভব।হস্তশিল্প মূলত হাতের নিখুঁত কাজ, যা মানুষ নিজের শখ ও সৌখিনতা পূরণ
করতে ব্যবহার করে থাকে। এই শিল্পটি সাধারণত গ্রামের মহিলারাই বেশি করে
থাকে।
তবে কিছু ক্ষেত্রে পুরুষরাও এক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে আছে। আপনি এই ব্যবসা শুরু করতে
চাইলে প্রথমে আপনাকে গ্রামের বাজারে একটি দোকান নিতে হবে এবং গ্রামের
মহিলাদের নিকট হতে পাইকারি দামে পণ্য ক্রয় করে তার শোরুমে রেখে অথবা সরাসরি
শহরের কোন একটি শোরুমের সাথে যোগাযোগ করে পণ্য বিক্রয় করতে পারেন।
যেহেতু এই পণ্যটি সৌখিনতার কাজে ব্যবহৃত হয় সেহেতু এর দাম পরিবর্তনশীল।
আপনি কাস্টমার দেখে, পণ্যের গুণগত মান দেখে, পণ্যের চাহিদা দেখে দাম নির্ধারণ
করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে আপনার মুনাফার পরিমানটা অনেক বেড়ে যাবে। এবং আপনি খুব
দ্রুতই আপনার ব্যবসাকে একটি লাভজনক ব্যবসা হিসেবে পরিণত করতে পারবেন।
সার, বীজ ও কীটনাশকের দোকান দিয়ে লাভবান হওয়া
বাংলাদেশের গ্রামগুলো সাধারণত কৃষি নির্ভরশীল। দেশের অধিকাংশ কৃষক গ্রামে বসবাস করে এবং তারা গ্রামে তাদের ফসল আবাদ করে। যা শহরের মানুষেরা তাদের কাছ থেকে কিনে তাদের দৈনন্দিন খাবার পূরণ করে থাকে। সেজন্যই গ্রামের প্রতিটি কৃষকের সার, বীজ ও কীটনাশকের প্রয়োজন হয়। আপনি ইচ্ছা করলে এসবের দোকান দিয়ে ব্যবসা করতে পারেন।
আপনার বাসা যদি গ্রামে হয়ে থাকে তবে এই ব্যবসাটি সবচেয়ে ভালো একটি ব্যবসা। কারণ এই ব্যবসায় বিভিন্ন পণ্য সাধারণত খুব ভোড়ে কৃষকের প্রয়োজন হয়। তবে এই ব্যবসার সব থেকে খারাপ দিক হচ্ছে, বাকিতে প্রচুর পরিমাণে বিক্রি করতে হয়। সেজন্য শুরুতে আপনার মূলধনের পরিমাণ বেশি লাগবে যা আনুমানিক ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকার মত।
তবে চেষ্টা করবেন শুরুতেই বাকিতে সার, ব্রীজ ও কীটনাশক না বিক্রয় করার।
যেহেতু ব্রিজ ও কীটনাশক বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন ক্যাটাগরি পাওয়া যায়
সেহেতু আপনাকে অনলাইনে বিভিন্ন গ্রুপের সাথে যুক্ত থাকতে হবে। সেখান থেকে কোন
রোগবালাই-এ কোন কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় তা সম্পর্কে জেনে আপনি আপনার
কাস্টমারকে সাহায্য করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে কাস্টমারে যেরকম উপকার হবে সেখান থেকে আপনার মুনাফা বেশি হবে। সেজন্য অনলাইনে বিভিন্ন গ্রুপের সাথে যুক্ত অবশ্যই হতে হবে। আপনি যদি এই সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে অবশ্যই অন্য কারো সাহায্য নিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য জেনে তা কৃষককে বলে তাদের প্রয়োজন মিটিয়ে আপনি আপনার ব্যবসাকে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে পরিণত করতে পারবেন।
গ্রামে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে লাইব্রেরীর দোকান দেওয়া
একটি মানসম্মত ব্যবসা বলতে গেলে গ্রামে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে লাইব্রেরীর দোকান দিতে পারেন। যারা লেখাপড়া করে তাদের প্রায়ই বই-খাতা প্রয়োজন হয়। বর্তমানে গ্রামের অধিকাংশ পরিবার তাদের ছেলেমেয়েকে লেখাপড়া করার জন্য চাপ প্রদান করছে। ছেলেমেয়েরাও লেখাপড়ার উপর আগ্রহ প্রকাশ করছে। এই আগ্রহকে কাজে লাগিয়ে আপনি লাইব্রেরীর দোকান দিতে পারেন।
এছাড়াও বর্তমান সরকারের লেখাপড়ার প্রতি বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে গ্রামে প্রায়
প্রতিটা পরিবারেই আগ্রহ অনেক বেড়ে গেছে। বর্তমানে প্রতিযোগিতামূলক শিক্ষা
ব্যবস্থায় ভালো ফলাফল করতে গেলে সাধারণ বইয়ের পাশাপাশি কিছু বিশেষ বই পড়তে
হয়। সেক্ষেত্রে আপনি গ্রামের স্কুলের শিক্ষকদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে
বিশেষ ধরনের কিছু বইয়ের রাখতে পারেন।
যা আপনাকে আশেপাশের অন্যান্য লাইব্রেরির দোকান হতে আলাদা করবে। ফলে আপনার দোকানে গ্রাহকের সংখ্যা আস্তে আস্তে বেড়ে যাবে। বইয়ের সাথে কলম, পেন্সিল, রাবার, স্কেল ইত্যাদি আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র বিক্রি করতে পারেন। শহর থেকে পাইকারি দামে এসব বই ও জিনিসপত্র কিনে গ্রামে খুচরা করে আপনি আপনার ব্যবসাকে লাভজনক ব্যবসায় পরিণত করতে পারেন।
মাশরুম চাষ করে স্বল্প পুঁজিতে গ্রামে লাভজনক ব্যবসায়ী হওয়া
মাশরুম চাষ করে আপনিও স্বল্প পুঁজিতে গ্রামে লাভজনক ব্যবসায়ী হয়ে উঠতে পারেন। মাশরুম সম্পর্কে অনেকেই হয়তো জানে না, কিন্তু বর্তমানে এর চাহিদা অনেক এবং দিন দিন তা বেড়েই চলেছে। সচরাচর দেখা গেছে মাশরুম সাধারণত শহরের মানুষের কাছে খুব জনপ্রিয় একটি খাবার। তবে সবাই এর চাষ করতে পারে না সেজন্য আপনাকে অবশ্যই প্রশিক্ষণ নিতে হবে।
এই মাশরুম একটি উচ্চ পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার। যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য
খুবই উপকারী। সেজন্য এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এর জন্য ছায়াবেষ্টিত
অন্ধকারাচ্ছন্ন জায়গার প্রয়োজন যা আপনি গ্রামে ইচ্ছামত তৈরি করে নিতে পারবেন।
এই ব্যবসা সবথেকে বড় সুবিধা হচ্ছে শুরুতেই অতি অল্প খরচ আনুমানিক ৩০ থেকে
৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত থাকলেই ব্যবসা দাঁড় করাতে পারবেন।
যেহেতু গ্রামে এর চাহিদা কম সেহেতু গ্রামে এই ব্যবসা করে লাভবান হতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে গ্রামে মাশরুমের চাষ করে তা যানবাহনের সাহায্যে শহরে নিয়ে বিক্রি করলে লাভের পরিমাণ আপনার বেড়ে যাবে। শহরে কিছু সংখ্যক বাসা বাড়িতেি এটি রান্না করে খাওয়া হয়, তবে বিভিন্ন মোড়ে ভাজাপোড়া, চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ইত্যাদিতে মাশরুম প্রচুর পরিমাণে ব্যবহৃত হয়। সেজন্য সরাসরি আপনি যদি সে সব জায়গাতে বিক্রয় করতে পারেন তাহলে আপনার লাভের পরিমাণ অনেক বেড়ে যাবে।
দুধ ও দুগ্ধজাতীয় দ্রব্যের ব্যবসা গ্রামে করে লাভবান হওয়া
দুধ ও দুগ্ধজাতীয় দ্রব্যের ব্যবসা গ্রামে করে লাভবান হতে পারেন। দুধ বলতে গরুর দুধকে আপনি গ্রাম থেকে কিনে শহরে যে বিক্রি করে লাভবান হতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আপনার লাভের পরিমাণ কম হবে, কিন্তু আপনার যদি নিজস্ব গরুর খামার থাকে সেক্ষেত্রে সে খামার থেকে দুধ নিয়ে গ্রামে শহরে নিয়ে যে বিক্রি করলে লাভের পরিমাণ বেশি হবে।
এজন্য আপনাকে একটি গরু খামার করতে হবে, যা গ্রামে খুব সহজে করা যাবে। গ্রামে
খামার করলে বিভিন্ন সুবিধা পাওয়া যায় এর মধ্যে আছে খোলামেলা পরিবেশ, গরুর খাবার
সহজলভ্যতা, কাজের লোক ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। দুগ্ধজাতীয় দ্রব্যের মধ্যে
রয়েছে দই, পনির, মাখন ইত্যাদি। গ্রামে ও শহরে এসব দুগ্ধজাতীয় খাবারের বেশ
চাহিদা রয়েছে।
এই চাহিদাকে কাজে লাগে আপনাকে সহজেই গ্রামে একটি খামার স্থাপন করে সেখান থেকে দুধ
এবং দুগ্ধজাতীয় দ্রব্যের ব্যবসা করে লাভবান হতে পারবেন। এক্ষেত্রে
আপনাকে অবশ্যই আমার পরিচালনার প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা থাকতে হবে। গরুর বিভিন্ন অসুখ
এবং কোন সমস্যা হলে কি খাওয়াতে হবে না খাওয়াতে হবে সেগুলো সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে
হবে।
বর্তমানে অনলাইন প্লাটফর্মে এগুলো সম্পর্কে বেশ কয়েকটি গ্রুপ রয়েছে, যেখানে নিয়মিত একটি গরুর খামার ও গরুর বিভিন্ন সমস্যার সমাধান নিয়ে বিভিন্ন রকম বাস্তব অভিজ্ঞতা শেয়ার করা থাকে, যা আপনার ব্যবসার খামার পরিচালনার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। গরুর একটি ছোট্ট খামার করতে আনুমানিক ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকার মধ্যে শুরু করতে পারেন। তবে খামাকে বড় করার জন্য পরে সরকার হতে ঋণের ব্যবস্থা করতে পারবেন।
অল্প পুঁজিতে গ্রামে লাভজনক ব্যবসায় বেকারির দোকান
স্বল্প পুঁজিতে গ্রামে লাভজনক ব্যবসায় বেকারির দোকান আইডিয়াটিকে আপনি বেছে নিতে পারেন। এই ব্যবসাটি গ্রামের জন্য এবং অল্প পুঁজিতে সহজে ব্যবসার দাঁড় করানো এবং লাভবান হওয়া সম্ভব। বেকারির দোকান বলতে আমরা সাধারণত সেই সব দোকানকে বুঝায় যেখানে বিভিন্ন ধরনের বিস্কুট, চানাচুর, চকলেট, পাউরুটি ইত্যাদি বিক্রি করা হয়।
এই ব্যবসার ক্ষেত্রে শ্রমিকের প্রয়োজন হয়. যা আপনি গ্রামের খুব সহজে পেয়ে যাবেন, সাথে সাথে সেসব শ্রমিকের মজুরি কম হয়ে থাকে। ফলে আপনার লাভের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে এবং খুব দ্রুতই নিজের ব্যবসাকে লাভজনক ব্যবসায় পরিণত করতে পারবেন। তবে এই ব্যবসায় আপনার যদি এ বিষয়ে কোন প্রশিক্ষণ থেকে থাকে তাহলে সব থেকে ভালো হয়।
অমৌসুমী ও বিদেশী ফল উৎপাদন করে গ্রামে লাভবান হওয়া
অমৌসুমী ও বিদেশী ফল উৎপাদন করে গ্রামে লাভবান হওয়া সম্ভব। অমৌসুমী ফল বলতে আমরা সাধারণত সেইসব ফলকে বুঝায় যা মৌসুম ছাড়া অন্য মৌসুমে হয়ে থাকে, যার মধ্যে রয়েছে তরমুজ, হলুদ তরমুজ ইত্যাদি। বিদেশি ফল বলতে আমরা সাধারণত সেই সব ফলকে বোঝায় যেসব ফল বিদেশি কিন্তু বাংলাদেশেও হয়ে থাকে।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে ড্রাগন ফল, নাশপাতি, রাম্বুটান ফল, আরবের খেজুর, মাল্টা, স্ট্রবেরী, মালবেরি ফল, ব্যানানা আম, মিষ্টি তেতুল, কমলালেবু, আঙ্গুর, হলুদ তরমুজ, অ্যাভোকাডো, রকমেলন, আলুবোখারা, চেরি ইত্যাদি। অমৌসুমী ও বিদেশী ফল উৎপাদনের ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই অভিজ্ঞ ট্রেইনার এর কাছ থেকে ট্রেনিং দিতে হবে।
এছাড়াও এসব ফল উৎপাদনের ক্ষেত্রে আপনাকে লোকাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাথে
যোগাযোগ রাখতে হবে। মৌসুমি ফল অন্য মৌসুমে উৎপাদনের ক্ষেত্রে যেরকম কষ্ট করতে হয়
সেরকম দামও বেশি পাওয়া যায়। ফলে ব্যবসায় দ্রুত লাভবান হওয়া সম্ভব।
গ্রামে এসব ফলের উৎপাদন খুব সহজেই করা সম্ভব, কারণ সেখানে চাষ করা জমি অনেক
পাওয়া যায় এবং কাজ করার জন্য লোকবল খুব সহজেই পাওয়া যায়।
এক্ষেত্রে আপনি যদি শহরে এসব ফলের প্রয়োজন শুরু করতে চান তাহলে জমির খরচ বেড়ে
যাবে এবং লাভের পরিমাণ কমে যাবে। সেজন্যই আপনার বাসা যদি গ্রামে হয়ে থাকে তাহলে
গ্রামে জমি নিয়ে এসব ফলের উৎপাদন করে অতি অল্প সময়ে আপনি আপনার ব্যবসাকে লাভজনক
ব্যবসা হিসেবে দাঁড় করাতে পারবেন।
স্বল্প পুঁজিতে গ্রামে লাভজনক ব্যবসা করার প্রতিবন্ধকতা
স্বল্প পুঁজিতে গ্রামে লাভজনক ব্যবসা শুরু করতে গেলে আপনি বেশ কয়েকটি প্রতিবন্ধকতার টি সম্মুখীন হতে পারেন। তবে ব্যবসার ধরন, বাজারে চাহিদা ও স্থানীয় অর্থনৈতিক অবস্থা অনুযায়ী অন্যান্য প্রতিবন্ধকতাও থাকতে পারে। এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় সঠিক পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ এবং আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন। আসুন জেনে নেওয়া যাক উল্লেখযোগ্য কয়েকটি প্রতিবন্ধকতা-
- পুঁজির অভাবঃ গ্রামে অনেকেই স্বল্প পুঁজিতে ব্যবসা শুরু করতে চান। কিন্তু অনেক সময় দেখা গেছে প্রাথমিক বিনিয়োগের অভাবে সঠিকভাবে ব্যবসা শুরু এবং প্রসারিত করা সম্ভব হয়না।
- প্রশিক্ষণের অভাবঃ অধিকাংশ গ্রামীণ উদ্যোক্তা যথাযথ প্রশিক্ষণ ও ব্যবসায়িক দক্ষতার অভাবে ব্যবসা পরিচালনায় ক্ষেত্রে সংসার সম্মুখীন হন। এর ফলে ব্যবসায় লাভের পরিমাণ কম হয় এবং ব্যবসা প্রসারিত করতে সময় বেশি লাগে।
- বাজারজাতকরণ সমস্যাঃ ব্যবসায় টিকে থাকতে এবং আপনার লাভের পরিমাণ বাড়াতে এই সমস্যাটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে। গ্রামে উৎপাদিত পণ্য শহরের বাজারে পৌঁছানো অনেক সময় কঠিন হতে পারে।
- যোগাযোগের সমস্যাঃ গ্রামের সাথে শহরের যোগাযোগের অবকাঠামো গুলো যদি উন্নত না হয় তাহলে পণ্যের মান খারাপ হবে এবং ন্যায্য দাম পাবেন না। এছাড়াও পরিবহন স্বল্পতা
- প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও দক্ষতার অভাবঃ বর্তমান যুগ প্রযুক্তির যুগ, যে কোন কাজে প্রযুক্তির ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। সেজন্য আপনাকে অবশ্যই প্রযুক্তিগত জ্ঞান থাকতে হবে এবং সময়ের পরিক্রমায় নিজেকে আপডেট করতে হবে। যদি তা না পারেন তাহলে আপনার ব্যবসার প্রসার ঘটবে না।
- প্রশিক্ষণ ও পরামর্শের অভাবঃ অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা গেছে গ্রামের উদ্যোক্তাগণ যথাযথ প্রশিক্ষণ ও ব্যবসায়িক দক্ষতার অভাবে ব্যবসা পরিচালনায় সমস্যার সম্মুখীন হন। সেজন্যই যে ব্যবসা করছেন সে অনুযায়ী সঠিক প্রশিক্ষণ এবং সেই ব্যবসা মোতাবেক এক বা একাধিক পরামর্শক থাকতে হবে। তা না হলে ব্যবসায় লাভ না হয়ে লস হবে।
- সরকারি ও বেসরকারি সহায়তার অভাবঃ সরকারি ও বেসরকারি সহায়তা না থাকলে অল্প পুঁজিতে ব্যবসা দাঁড় করানো অথবা ব্যবসাকে এগিয়ে নেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে। সেজন্য সরকারি ও বেসরকারি সহায়তা পাওয়ার জন্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
- স্থানীয় ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণের সমস্যাঃ যেহেতু আপনি স্বল্প পুঁজিতে ব্যবসা করতে চাচ্ছেন তাহলে অবশ্যই স্থানীয় ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। স্থানীয় ব্যাংক ও এনজিও আপনাকে যেন ঋণ প্রদান করে সেই জন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করে ব্যবসা করতে হবে।
অল্প পুঁজিতে গ্রামে লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কের লেখকের মন্তব্য
অল্প পুঁজিতে গ্রামে লাভজনক ব্যবসার অনেক রকম আইডিয়া এই পোস্টে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আপনার পছন্দমত যেকোন একটিকে বেছে নিয়ে আপনি আপনার ব্যবসা শুরু করতে পারেন। অনেকে মনে করেন কেবলমাত্র শহরেই ব্যবসা করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করা যায়। কিন্তু আপনার ধারণা ভুল, কারণ বর্তমানে গ্রামের প্রকৃতি দ্রুত বদলে যাচ্ছে।
গ্রামে আস্তে আস্তে শহরের ছোঁয়া পেয়ে যাচ্ছে। তাই আপনি ইচ্ছা
করলেই গ্রামের বাড়তি সুযোগ সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে নিজের একটি লাভজনক ব্যবসা
দাঁড় করাতে পারেন। তবে প্রথমে হয়তো আপনাকে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।
সেক্ষেত্রে আপনাকে ধৈর্যধারণ করতে হবে এবং ব্যবসাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে
হবে।
এই পোস্টে আমি চেষ্টা করেছি স্বল্প পুঁজিতে গ্রামে লাভজনক ব্যবসার অনেকগুলো আইডিয়া সম্পর্কে। এসব আইডিয়াগুলোর মধ্যে আপনার যোগ্যতা ও সামর্থ্য অনুযায়ী যে কোন একটিকে বেছে নিয়ে একটি ব্যবসা দাঁড় করাতে পারেন। তবে যে কোন ব্যবসা দাঁড় করানোর আগে অবশ্যই আপনার আশেপাশের পরিবেশ বা এলাকার চাহিদা সম্পর্কে যাচাই করতে হবে।
আজ এ পর্যন্তই ভবিষ্যতে এই পোস্টের কোন আপডেট নিয়ে অথবা নতুন কোন পোস্ট নিয়ে
আপনাদের মাঝে হয়তো উপস্থিত হবো। সবাই সুস্থ থাকবেন, ভালো থাকবেন এবং নিজের
ব্যবসার প্রতি সম্পূর্ণ মনোনিবেশ দিবেন। আশা করি সাফল্য অবশ্যই পাবেন। ধন্যবাদ
সবাইকে........
অজানা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url