OrdinaryITPostAd

গর্ভাবস্থায় পালং শাক খাওয়ার অজানা উপকারিতা ও অপকারিতা

গর্ভাবস্থায় পালং শাক খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে আপনি জানতে আগ্রহী। তাহলে আপনাকে আর খোঁজাখুঁজি করতে হবে না আমার এই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সময় নিয়ে ভালোভাবে পড়লেই গর্ভাবস্থায় পালং ও অন্যান্য শাক খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন।

ছবি-১

মেয়েদের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থা এমন একটি সময় যখন গর্ভধারিণী তার নিজের সমস্ত ব্যাপারে বিশেষ করে খাওয়ার ব্যাপারে খুব সচেতন থাকতে হয়। সেক্ষেত্রে পালং শাকসহ অন্যান্য শাক খাওয়ার কি কি উপকারিতা রয়েছে তা আমি এই পোস্টে আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করব।

এই পোস্টে আর যা যা থাকছেঃ গর্ভাবস্থায় পালং শাক খাওয়ার উপকারিতা

পালং শাকের পরিচিতি

পালং শাক (বৈজ্ঞানিক নামঃ Spinacia oleracea) একটি জনপ্রিয় শাক ও সবজি, যা Amarnathaceae পরিবারভুক্ত। এর আদিবাস মধ্য ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার কয়েকটি দেশে। পালং শাক সাধারণত একবর্ষজীব উদ্ভিদ, তবে কিছু ক্ষেত্রে দ্বিবর্ষজীবি পালং শাকও হতে পারে, যদি আপনি এরকম দেখতে পান তাহলে তা হবে বিরল।

এই গাছটি সাধারণত ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয় এবং এর পাতা ডিম্বাকার বা ত্রিভুজাকার হয়ে থাকে। পালং শাকের উৎপত্তিস্থল হলো ইরান, যা প্রাচীনকালে “পারস্য” নামে পরিচিত ছিল। এটি পরবর্তীতে মধ্যযুগের সময় ইউরোপে প্রবেশ করে এবং সারাবিশ্বে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

এটিকে আপনি কাঁচা অবস্থায় সালাত হিসেবে খেতে পারেন। তবে আমাদের দেশে সাধারণত রান্নায় করে বেশিরভাগ খাওয়া হয়ে থাকে। বিভিন্ন রকম তরকারি, ভাজি, স্যুপ ইত্যাদি হিসেবে খেতে পারেন। এই শাক সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে পরিচিত। তাই আপনিও ইচ্ছা করলে আপনার খাবার মেনুতে পালং শাককে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।

পালং শাকের পুষ্টি গুনাগুন

পালং শাকের পুষ্টি গুনাগুন অনেক, তাই এটি অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর সবজি হিসেবে পরিচিত। এই পুষ্টিগুণের কারণে এই শাক ত্রকটি আদর্শ স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি নিয়মিত খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা শরীরের সার্বিক সুস্থতা বজায় রাখতে করে সহায়ক হিসেবে কাজ। এখন আসুন জেনে নেওয়া যায় আরো কোন কোন পুষ্টিগুণ রয়েছে-

  • ক্যালোরিঃ প্রতি ১০০ গ্রাম পালং শাকে ২৩ ক্যালোরি থাকে, যা আপনার এবং বাচ্চার শরীরের জন্য কম। ইহা আপনার গর্ভের বাচ্চার ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা প্রদান করে।
  • প্রোটিনঃ প্রতি ১০০ গ্রাম পালং শাকে ২.৯ গ্রাম প্রোটিন থাকে, যা আপনার এবং বাচ্চার শরীরের প্রোটিন মেটানোর ভালো উৎস হিসেবে ধরতে পারেন। ইহা আপনার গর্ভের বাচ্চার বেশি গঠনের সহায়ক হতে পারে।
  • কার্বোহাইড্রেটঃ প্রতি ১০০ গ্রাম পালং শাকে ৩.৬ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে, যা তুলনামূলকভাবে আপনার এবং বাচ্চার জন্য কম।
  • ফাইবারঃ প্রতি ১০০ গ্রাম পালং শাকে ২.২ গ্রাম ফাইবার থাকে, আপনার এবং গর্ভের বাচ্চার জন্য খুব ভালো। এটি আপনার হজম প্রক্রিয়াকে সাহায্য করতে ভূমিকা রাখবে।
  • জলীয় উপাদানঃ প্রতি ১০০ গ্রাম পালং শাকে ৯১.৪ গ্রাম জলীয় উপাদান থাকে, যা আপনার এবং গর্ভের বাচ্চা পানির প্রয়োজন মেটাতে সহায়ক হতে পারে।
  • চিনিঃ প্রতি ১০০ গ্রাম পালং শাকে ০.৪ গ্রাম চিনি থাকে, যাব না এবং গর্ভের বাচ্চার জন্য সঠিক পরিমাণ।
  • ভিটামিন এঃ আপনার ও গর্ভের বাচ্চার চোখের জন্য একটি উপকারী। তবে অনেক সময় ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
  • ভিটামিন কেঃ প্রতি ১০০ গ্রাম পালং শাকে ৪৮৩ মিঃগ্রাঃ থাকে, যা আপনার শরীরের রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়াকে সাহায্য করবে।
  • ভিটামিন সিঃ প্রতি ১০০ গ্রাম পালং শাকে ২৮.১ মিঃগ্রাঃ থাকে, যা আপনার ও গর্ভের বাচ্চার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক হবে।
  • আয়রনঃ প্রতি ১০০ গ্রাম পালং শাকে ২.৭ মিঃগ্রাঃ থাকে, যা আপনার শরীরে এবং গর্ভের বাচ্চা শরীরে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।
  • ক্যালসিয়ামঃ প্রতি ১০০ গ্রাম পালং শাকে ৯৯ মিঃগ্রাঃ থাকে, যা আপনার শরীর এবং গর্ভের বাচ্চার শরীরের হাড় ও দাঁতের জন্য খুবই উপকারী হতে পারে।
  • ম্যাগনেসিয়ামঃ প্রতি ১০০ গ্রাম পালং শাকে ৭৯ মিঃগ্রাঃ থাকে, যা আপনার পেশি ও স্নায়ুর কার্যক্রমে সাহায্য করবে।
  • পটাশিয়ামঃ প্রতি ১০০ গ্রাম পালং শাকে ৫০৮ মিঃগ্রাঃ থাকে, যা আপনার শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষায় সাহায্য করবে।

গর্ভাবস্থায় কতটুকু শাকসবজি খাওয়া উচিত

গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলা অন্যান্য সাধারণ মানুষের চেয়ে অনেক বেশি ক্ষুধার্ত হয়ে থাকে, কারণ সে দ্রুত বর্ধনশীল ভ্রুনকে পুষ্টি সরবরাহ করে। সেজন্য ক্ষুধার্তকে নিবারণ করার জন্য আপনাকে অল্প করে ঘন ঘন খাবার খাওয়ার প্রয়োজন। এভাবে অল্প পরিমাণে কিন্তু ঘন ঘন খাবার খেলে হজম দ্রুত হয় ফলে পেট ফাঁপা এবং গ্যাসের সমস্যা এড়িয়ে চলা যায়।

এই সময় টিনজাত সবজি এড়িয়ে চলা ভালো এবং মৌসুমী তাজা বা টাটকা সবজি বেছে নেওয়া ভাল। আপনি দৈনিক সাধারণত ২.৫ থেকে ৩ কাপ (প্রায় ৫০০ গ্রাম) শাকসবজি খেতে পারেন। এগুলো রান্না করে খাওয়ায় ভালো তবে কাঁচা খেলে তা ভালোভাবে পরিষ্কার করা হয়েছে কিনা তার নিশ্চিত করতে হবে।

শাকসবজিতে সাধারণত শক্তি, ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার থাকে। অনেকেই শাকসবজির পরিপূরক হিসেবে বিভিন্ন ওষুধ খেয়ে থাকেন, যার বেশিরভাগই রাসায়নিক জাতীয় পদার্থ দ্বারা তৈরি। তাই নিজেকে ভিটামিনের পরিপূরক গ্রহণের থেকে বিরত রাখুন। এটি আপনার এবং আপনার আনাগত সন্তানের জন্য মঙ্গলজনক।

গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পেট ফাঁপায় করণীয়

গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পেট ফাঁপা গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে একটি সাধারন সমস্যা, তবে কিছু সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করলে আপনি এই সমস্যাগুলো কমাতে সক্ষম হবেন। এখন আসুন জেনে নেওয়া যায় সমস্যা থেকে পরিত্রাণের কয়েকটি পদ্ধতি-

  • কষ্ট কাঠিন্য প্রতিরোধে করণীয়ঃ
    • আঁশযুক্ত খাবার - প্রচুর পরিমাণে ফল, শাকসবজি, লিগুম জাতীয় খাবার এবং সম্পূর্ণ শস্য খাওয়া উচিত। এগুলো হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে, মলকে নরম রাখতে সাহায্য করে ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য কমে যায়।
    • পানি পান - গর্ভবতী নারীদেরকে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা অত্যাবশ্যকীয়। কারণ এটিও মলকে নরম রাখতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে সহায়ক।
    • ব্যায়াম করা - গর্ভবতী নারীদেরকে প্রতিদিন নিয়মিত হাটাহাটি বা হালকা ব্যায়াম করা উচিত। এটি অন্ত্রের কার্যকলাপ বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও নিয়মিত ব্যায়াম রক্ত প্রবাহ বাড়ায় এবং হজম প্রক্রিয়াকে সক্রিয় রাখে।
    • আয়রন সাপ্লিমেন্ট - সাধারণত গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকরা আয়রন খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যদি কোষ্ঠকাঠিন্য বৃদ্ধি পায় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আয়রনের সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করতে হবে।
  • পেট ফাঁপা প্রতিরোধে করণীয়ঃ
    • ছোট ছোট খাবার - বড় বড় খাবারের পরিবর্তে আপনি ছোট ছোট খাবার খেতে পারেন। এটি আপনার হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করবে এবং পেট ফাঁপা কমাতে সাহায্য করবে।
    • গ্যাস সৃষ্টি করে এমন খাবার এড়িয়ে চলা - ব্রকলি, বাঁধাকপি এবং বীজ জাতীয় খাবার আপনাকে কম খেতে হবে, কারণ এগুলো গ্যাস সৃষ্টি করতে পারে। 
    • ধীরে ধীরে খাওয়া - গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের খাবার ধীরে ধীরে ভালভাবে চিবিয়ে খাওয়া উচিত। এটি হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে এবং পেট ফাঁপা কমাতে সাহায্য করবে।
    • আরামদায়ক পোশাক - গর্ভবতী মেয়েদের পেটের উপর চাপ পড়ে এমন পোশাক এড়িয়ে চলা উচিত। সব সময় ঢিলেঢালা এবং আরামদায়ক পোশাক পরিধান করা উচিত। কারণ এটি পেট ফাঁপা কমাতে সাহায্য করবে।

গর্ভাবস্থায় যেসব খাবার খাওয়া ক্ষতিকারক

গর্ভাবস্থায় যেসব খাবার খাওয়া ক্ষতিকারক তা সকল গর্ভবতী মায়েদের জানা প্রয়োজন। চিকিৎসকরা সবসময়ই গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর খাবারের পরামর্শ দিয়ে থাকে। তবে কি খাবেন তা নির্ধারণ করার সময় আপনাকে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আপনার নিজের এবং আপনার অনাগত সন্তানের স্বাস্থ্যের জন্য আপনাকে অনেক খাবার ছেড়ে দিতে হবে যা পূর্বে আপনার জন্য ভালো ছিল।

ছবি-২

গর্ভাবস্থায় কিছু খাদ্যতালিকার বিধি-নিষেধ অনুসরণ করে আপনি নিশ্চিত করতে পারেন, একটা সুস্থ শিশু এবং একটি নিরাপদ প্রসব। গর্ভাবস্থায় কিছু খাবার এড়িয়ে চলা উচিত, যা মায়ের শরীরের পাশাপাশি তারা অনাগত সন্তানের ক্ষতি করতে পারে। চলুন দেখে নেওয়া যাক গর্ভবতী মায়েদের কি কি খাবার এড়িয়ে চলা উচিত-

  • কাঁচা ডিমঃ কাঁচা বা কম সিদ্ধ করা ডিম খাওয়া ঠিক নয়, কারণ এর কারণে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। কাঁচা ডিমে সালমোনেলা নামক এক প্রকার ব্যাকটেরিয়া থাকে যা জ্বর, বমি বমি ভাব এবং ডায়রিয়ার জন্য দায়ী হতে পারে। সেজন্য ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করার জন্য ডিম ভালোভাবে সিদ্ধ করে খেতে পারেন।
  • কাঁচা দুধঃ কাঁচা দুধও খাওয়া ঠিক নয়, কারণ এই দুধে লিস্টেরিয়া নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে যা মা ও অনাগত শিশুর উভয়ের জন্য বিপদজনক হতে পারে। সেজন্য দুধ ফুটানোর আগে পান করা থেকে বিরত থাকুন। কাঁচা দুধ থেকে তৈরি খাবার, যেমন নরম পনির ও অন্যান্য খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
  • কাঁচা বা অল্প সিদ্ধ করা মাংসঃ কাঁচা বা অল্প সিদ্ধ করা মাংস খাওয়া উচিত নয় এবং এরকম প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন সসেজ, সালামি, পেপারেনি ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে। অল্প সিদ্ধ করা মাংসে সালমোনেলা, কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে, যা গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সেজন্য মাংসকে অন্তত ১৪৫° তাপমাত্রায় রান্না করে খাওয়া উচিত।
  • কলিজাঃ কলিজা বা কলিজা থেকে তৈরি খাবারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ বিদ্যমান থাকে। তবে ভিটামিন এ এর অত্যাধিক পরিমাণ গ্রহণ গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে বিশেষ করে বিপদজনক। অনেকেই এই সময়ে অতিরিক্ত ভিটামিন গ্রহণ করার জন্য এবং অনাগত শিশুর বিকাশের জন্য এসব খাবার খায়, এটি একেবারেই ভুল সিদ্ধান্ত। সেজন্য পরিমাণমতো কলিজা খাওয়া উচিত।
  • কিছু সামুদ্রিক মাছঃ গর্ভাবস্থায় দৈনন্দিন খাবার তালিকায় মাছকে আপনি অবশ্যই বেছে নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে সামুদ্রিক মাছকে ব্যবহার করতে পারেন, যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, তবে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং অত্যাধিক পরিমাণে খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। সামুদ্রিক মাছে পারদ জাতীয় পদার্থ বেশি থাকে, যা শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে ক্ষতি সাধন করে। এছাড়াও টুনা ফিশ, শার্কসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছে অতিরিক্ত মাত্রায় পারদ থাকে, যার বিষক্রিয়ায় গর্ভস্থ ভ্রুণের ক্ষতি হতে পারে।
  • কাঁকড়া খাওয়াঃ কাঁকড়া খেতে অনেকেই পছন্দ করেন। এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। তবে গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত কাঁকাড়া খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত। এতে জরায়ুর উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে অভ্যন্তরীণ রক্তপাত হতে পারে। এছাড়াও এতে উচ্চমাত্রায় কোলেস্টেরল রয়েছে, যা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ক্ষতিকর।
  • ক্যাফেইন গ্রহণঃ আপনারা জানেন কফি বা চা জাতীয় ক্যফেইন ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় এটি গ্রহণের পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে, কারণ এতে অনাগত শিশু ওজন কম নিয়ে জন্ম হয়, এমনকি সময়ের আগেও গর্ভপাতের ঝুঁকি থাকে। এছাড়াও গর্ব অবস্থায় মাকে ধূমপান ও অ্যালকোহল গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে, যা মা ও বাচ্চা উভয়ের জন্য ভয়ংকর ক্ষতিকর হতে পারে।
  • কাঁচা পেঁপেঃ কাঁচা পেঁপে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ক্ষতিকর, কারণ কাঁচা পেঁপেতে ল্যাটেক্স নামক একটু উপাদান থাকে যা গর্ভপাতের কারণ হতে পারে। এ ল্যাটেক্স জরায়ুকে সংকোচন করে, যার কারণে প্রসব বেদনা শুরু হতে পারে। এছাড়াও এতে পাপাইন উপাদান থাকে, যা সাধারণত প্রসব ত্বরান্বিত করতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
  • পাকা পেঁপেঃ গর্ভাবস্থায় পাকা পেঁপে খাওয়াতে তেমন কোন সমস্যা হয় না। তবে সেটি যদি গাছপাকা হয় তাহলে সবচেয়ে ভালো, কারণ বর্তমানে বেশিরভাগ সময়ই পেঁপে রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে পাকানো হয়। এ জাতীয় পাকা পেঁপে খাওয়া গর্ভবতী নারী এবং শিশুর দের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
  • ফলের রসঃ ফ্রেস বা অপ্রাস্তরিত ফলের রসে কোলাই এবং সালমোনেলা নামক কিছু ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা গর্ভবতী নারীদের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। সে জন্য গর্ভাবস্থায় ফলের রসকে এড়িয়ে চলায় শ্রেয়। তবে ফলের রস যদি প্রাস্তরিত হয় তাহলে তা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
  • সুশীঃ এতে একপ্রকার জাপানি খাবার, যা অনেকের কাছেই খুব প্রিয়। এই খাবার তৈরিতে অল্প সিদ্ধ করা মাংস এবং সামুদ্রিক মাছ ব্যবহার করা হয়, যেখানে ব্যাকটেরিয়া বিদ্যমান থাকে, যা অনেক রোগের কারণ হতে পারে। সে কারণে এই খাবারটি খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দেওয়ায় শ্রেয়।
  • অ্যালকোহল যুক্ত খাবারঃ এই জাতীয় খাবার আপনার অনাগত সন্তানের বিভিন্ন অঙ্গ যেমন ব্রেইন, নার্ভ ইত্যাদি তৈরিতে বাধা প্রদান করে। এখানে অ্যালকোহল বলতে শুধুমাত্র মদকেই বোঝানো হয়নি। অ্যালকোহল রয়েছে এসব জাতীয় খাবারকে বোঝানো হয়েছে।
  • আনারসঃ গর্ভধারণের প্রথম তিন মাস গর্ভবতী মেয়েদেরকে আনারস খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। কারণ এতে ব্রোমেলাইন নামক এক ধরনের উপাদান রয়েছে, যা গর্ভবতী নারীর ডায়রিয়া, অ্যালার্জি থেকে শুরু করে গর্ভপাতের কারণ হতে পারে। সেজন্য গর্ভকালীন সময়ে খাদ্য তালিকায় এই ফলটি বাদ দেওয়াই শ্রেয়।
  • পর্যাপ্ত পরিষ্কার করণঃ শাক সবজি ও ফলের গায়ে বিভিন্ন ধরনের পরজীবী থাকে, যা গর্ভবতী নারী এবং অনাগত শিশুর জন্য মারাত্মক হুমকি হতে পারে। সেজন্য শাক সবজি ও ফলমূল খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালো হবে ধুয়ে নিতে হবে।
  • অন্যান্য ক্ষতিকারক বিষয়ঃ গর্ভাবস্থায় দৈনন্দিন খাবার তালিকায় তাজা বা টাটকা খাদ্য রাখা উত্তম। এসময় ফ্রিজের সংরক্ষিত খাবার বা অতিরিক্ত গরম খাওয়ার না খাওয়াই ভালো। তবে নতুন কোন খাবার খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

গর্ভাবস্থায় যেসব পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উপকারী

গর্ভকালীন সময়ে আপনার দৈনন্দিন খাবার তালিকা সুষম, স্বাস্থ্যকর পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই সময় আপনার এবং আপনার অনুগত সন্তানের বাড়তি পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে হবে। বিশেষ করে গর্ভের শিশুর উপযুক্ত গঠন ও বিকাশ নিশ্চিত করতে হবে। আসুন জেনে নেওয়া যাক গর্ব অবস্থায় গর্ভাবস্থায় কোন কোন খাবার খাওয়া উপকারী-

  • দুগ্ধ জাতীয় খাবারঃ গর্ভকালীন অবস্থায় আপনার বাচ্চার ভ্রুণের সঠিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য অতিরিক্ত প্রোটিন এবং ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন হয়, যা আপনি জাতীয় খাবার যেমন ছানা, ঘোল বা মাঠা, দই ইত্যাদি হতে পারেন। এর মধ্যে দই গর্ভবতী মহিলাদের জন্য সবচেয়ে উপযোগী, কারণ ইহা হজম শক্তি বৃদ্ধি করে পেটের সমস্যা দূর কর যা প্রায় প্রতিটি গর্ভবতী নারীর সাধারণ সমস্যা।
  • শুঁটি জাতীয় খাবারঃ এই জাতীয় খাবারের মধ্যে রয়েছে ডাল, মটরশুঁটি, ছোলা, সয়াবিন, চিনাবাদাম ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এই জাতীয় খাবার খুব সহজলভ্য এবং এর মধ্যে আঁশ, প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস এবং ভিটামিন বি৯ উপাদান থাকে, যা গর্ভবতী নারীর প্রথম তিন মাস খুবই জরুরী ও অনাগত শিশুর ওজন স্বাভাবিক রাখতে সহায়তাকা করে।
  • মিষ্টি আলুঃ এই আলুর মধ্যে প্রচুর পরিমাণ বিটা ক্যারেটিন থাকে, যা শরীরে প্রবেশের পর ভিটামিন এ তে পরিণত হয়। ইহা আপনার ও বাচ্চার শরীরের বিভিন্ন কোষ, টিস্যু এবং ভ্রুনের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রাণী হতে প্রাপ্ত ভিটামিন এ হতে উদ্ভিদ হতে প্রাপ্ত ভিটামিন এ উত্তম। ফলে গর্ভকালীন সময়ে প্রতিটি না গর্ভবতী নারীকে দৈনন্দিন খাবার তালিকায় মিষ্টি আলুকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
  • রুই মাছঃ এই মাছে আপনার এবং আপনার শিশুর জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ওমেগা ৩ ফ্যটি অ্যাসিড থাকে, যা উভয়ের রক্তের ইপিও এবং ডিএইচএ লেভেল বৃদ্ধি করে। এই উপাদানগুলো ভ্রুনের ব্রেইন এবং চোখ তৈরিতে সাহায্য করে। সাধারণত সামুদ্রিক মাছে এসব উপাদান পাওয়া যায়। এছাড়াও এতে ভিটামিন ডি রয়েছে, যা উভয়ের শরীরের হাড়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
  • ডিমঃ ইহা একটি মৌলিক খাবার যেখানে ৭৭ ক্যালরি শক্তি এবং প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং চর্বি থাকে। এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান থাকে। এই ডিম কোলিনের প্রধান উৎসদাতা, যা ভ্রুণের ব্রেইন তৈরিতে সহযোগিতা করে এবং শিশুর বিভিন্ন প্রকার সমস্যা দূর করে।
  • ফুলকপি এবং সবুজ শাকসবজিঃ এই জাতীয় খাবার আপনার এবং আপনার গর্ভে থাকা সন্তানের প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে। এগুলোর মধ্যে অতি প্রয়োজনীয় আঁশ, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ভিটামিন এ, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি উপাদান থাকে। সঠিক পরিমাণে সবুজ শাকসবজি গ্রহণ করলে অনাগত সন্তানের ওজন সঠিক থাকে।
  • মাংসঃ গরুর মাংস, খাসির মাংস, মুরগির মাংস এবং অন্যান্য মাংসে উচ্চমানসম্পন্ন প্রোটিন থাকে। বিশেষ করে গরুর মাংস রয়েছে অধিক পরিমাণে আয়রন, কোলিন এবং বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন, যা গর্ভকালীন সময়ে বিভিন্ন চাহিদা পূরণ করে থাকে। গর্ভকালীন সময়ের মধ্যবর্তীসময়ে আয়রনের অভাব দেখা দিতে পারে, যার কারণে রক্তস্বল্পতা দেখা যায় এবং সময়ের পূর্বেই সে জন্মগ্রহণ করতে পারে। অনেক গর্ভবতী নারীর মানুষের প্রতি অনীহা কাজ করে সেক্ষেত্রে অন্য যেকোন হালাল মাংস গ্রহণ করতে পারে।
  • মাছের যকৃতের তেলঃ এই তেল সাধারণত মাছের কলিজার পাশে থাকে, যার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি এবং ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। ভিটামিন ডি-এর অভাবে গর্ভবতী মহিলার উচ্চরক্তচাপ বেড়ে যায়, হাত পা ফুলে যায়, প্রসবের সাথে প্রোটিন বের হয়ে যায় ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। এই তেল গ্রহণে শিশুর ওজন বৃদ্ধি পায়। অত্যাধিক ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড মায়ের রক্তকে তরলীকরণ করে ফলে সবসময়ই পরিমাণ মতো এই তেল খাওয়া উচিত।
  • শুকনো ফলঃ শুকনো ফল বলতে সাধারণত বাজারের সচরাচর যেসব ফল পাওয়া যায়। এরমধ্যে আপেল, কমলা, বেদেনা, খেজুর, আঙ্গুর, আলুবোখারা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি, আঁশ, বিভিন্ন ভিটামিন, আয়রন, পটাশিয়াম এবং খনিজ উপাদান বিদ্যমান থাকে, যা গর্ভবতী নারী এবং অনাগত শিশুর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় আপনি সর্বোচ্চ একবারই শুকনো ফল গ্রহণ করতে পারবেন।
  • পর্যাপ্ত পানি পান করাঃ গর্ভকালীন সময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা উচিত, যা গর্ভবতী নারীকে হাইড্রেটেড রাখে এবং মাথাব্যথা, রাগ, ক্লান্তি, খারাপ মেজাজ এবং স্মৃতিশক্তি কমানো দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও পর্যাপ্ত পানি পানের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়, যা প্রত্যেক গর্ভবতী নারীর সাধারণ সমস্যা। সেজন্য দৈনিক অন্তত ২ লিটার পানি পান করা আবশ্যক।

গর্ভাবস্থায় সকালে যেসব খাবার খাওয়া উপকারী

গর্ভাবস্থায় সকালে পুষ্টিকর এবং শরীরের ভারসাম্যযুক্ত খাবার খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি সারাদিনের শক্তির যোগান দেয় এবং বর বস্তু শিশুর সঠিক বিকাশের সাহায্য করে। নিম্নে বর্ণিত খাবার গুলো গর্ভাবস্থায় সকালে খাওয়া আপনার এবং আপনার শিশুর জন্য পুষ্টিকর এবং উপকারী হতে পারে। তবে, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা সব সময় ভালো। এখন জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় সকালে কোন কোন খাবার খাওয়া উপকারী-

  • ওটসঃ ওটসে ফাইবার, আয়রন এবং প্রোটিন রয়েছে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে এবং শরীরে শক্তি প্রদান করে। এছাড়াও এতে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট আস্তে আস্তে রক্তে শর্করা বৃদ্ধি করে, যা গর্ভাবস্থায় রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
  • ফলমূলঃ তাজা ও টাটকা ফল যেমন কলা, আপেল, বেরি ইত্যাদিতে ভিটামিন সি, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে।
  • ডিমঃ প্রোটিন এবং কোলিনের একটি চমৎকার উৎস হচ্ছে ডিম, যা শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়তা করে। এছাড়াও এতে থাকা ভিটামিন ডি হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
  • দুগ্ধজাত খাবারঃ দুধ জাতীয় খাবার যেমন ছানা, দই, মাঠা ইত্যাদিতে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং ভিটামিন ডি থাকে, যা হাড় এবং দাঁতের গঠনে ভূমিকা রাখে। এ ধরনের খাবার আপনার অনাগত সন্তানের জন্য খুবই উপকারী।
  • নাশপাতি ও মিষ্টি আলুঃ এগুলোতে থাকা বিটা-ক্যারোটিন শরীরে প্রবেশের পর ইহা ভিটামিন এ তে পরিবর্তিত হয়, যা আপনার এবং আপনার অনাগত সন্তানের ত্বক, চোখ এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করবে।
  • বাদাম ও বীজ জাতীয় খাবারঃ বাদাম ও বীজ জাতীয় খাবার যেমন আখরোট, আমন্ড, চিয়া সিড এবং ফ্ল্যাক্স সিডে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, প্রোটিন এবং ফাইবার থাকে, যা মস্তিষ্কের বিকাশ ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

গর্ভাবস্থায় পালং শাক খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় পালং শাক খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা খুব কমই জানি। অনেকেই জানে যে এই শাক শুধুমাত্র রক্তের হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। তবে এছাড়াও এই শাক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত অনেক সুবিধা রয়েছে যা নিম্নে দেওয়া হলো-

  • শিশুর জ্ঞানীয় বিকাশে সহায়তা করেঃ এই শাকে থাকা ফলিক অ্যাসিডের কারণে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়, কারণ এটি গর্ভপাত রোধে সহায়তা করে। এটি ভ্রূণের মেরুদন্ড এবং জ্ঞানীয়  বিকাশে অবদান রাখে। এই শাক আয়রনের উৎস হওয়ই রক্তকণিকা তৈরিতে সহায়তা করে, যা গর্ভাবস্থার রক্তস্বল্পতা ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
  • মেজাজ ভালো রাখতে সহায়তা করেঃ এই শাকে ভিটামিন বি এর উপস্থিতি থাকায় গর্ভাবস্থায় আপনার মেজাজ উন্নত করতে সহায়তা করে। এই শাক খাওয়াতে আপনি হতাশা, মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ খুব সহজেই রোধ করতে পারবেন।
  • হাড় এবং দাঁতের স্বাস্থ্য বৃদ্ধিতেঃ পালং শাকে থাকা ক্যালসিয়াম অনাগত শিশুর হাড়ের স্বাস্থ্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে সাথে সাথে গর্ভবতী মায়ের হাড় ও দাঁতের স্বাস্থ্য বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখে। এর পাশাপাশি ক্যালসিয়াম ধমনীতে রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধে সহায়তা করে, যা স্নায়ু ও পেশিগুলোর কার্যকারিতা ভিত্তি করে।
  • কোলেস্টেরলের মাত্রা ব্যালেন্স করতেঃ পালং শাকে ভিটামিন ই থাকায় গর্ভাবস্থায় ফ্রি র‌্যাডিক্যাল ক্ষরণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করে যা দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা ভারসাম্য করতে সহায়তা করে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতেঃ পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে, যা হিউম্যান সিস্টেম শক্তিশালী করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও এই শাক খাওয়ার মাধ্যমে আপনি সর্দি এবং ঘন ঘন অসুস্থতাকে বিদায় জানাতে পারেন।
  • রক্তচাপের স্তর নিয়ন্ত্রণে রাখতেঃ পালং শাকে থাকা নাইট্রেট শরীরে রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও এতে উচ্চ পটাশিয়াম উপাদান থাকে, যা রক্তচাপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
  • দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতেঃ এই শাকে ভিটামিন বি ১ এবং ভিটামিন বি ২ বিদ্যমান থাকে, যা আপনার এবং আপনার অনাগত সন্তানের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এছাড়াও এগুলো দেহের অভ্যন্তরে প্রজননের টিস্যু এবং অঙ্গগুলোর বিকাশে সহায়তা করে।
  • ত্বক উজ্জ্বল করতেঃ এই শাক প্রটিনের উৎস হিসেবে পরিচিত, যা কোষগুলো মেরামত করতে, দেহে অ্যামিনো এসিড তৈরি করতে এবং ত্বক, পেশী এবং হাড়ের সুস্থতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।

গর্ভাবস্থায় পালং শাক খাওয়ার অপকারিতা

গর্ভাবস্থায় পালং শাক খাওয়ার অপকারিতা রয়েছে। যদিও আপনারা জেনেছেন গর্ভাবস্থায় পালং শাক খাওয়া নিরাপদ এবং পুষ্টিকর তথাপিও অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে অক্সালেট থাকে, যা অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে কিডনিতে পাথর তৈরি হতে পারে।

এই অক্যালেট শরীরে ক্যালসিয়াম শোষণে বাধা প্রদান করে। যার ফলে গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হতে পারে, যা হাড়ের স্বাস্থ্যে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়াও পালং শাকে থাকা ভিটামিন কে রক্ত পাতলাকারী ওষুধের সাথে প্রতিক্রিয়া করতে পারে, যা রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়ায় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

আপনারা জানেন পালং শাকে উচ্চ মাত্রায় আয়রন থাকে ফলে অতিরিক্ত পরিমাণে পালং শাক খেলে আয়রনের পরিমাণ বেড়ে যায়, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় পালং শাক খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত এবং পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হলে সকালে খাবারের তালিকা

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হলে খাবারের তালিকা অনুযায়ী খাবার খাওয়া উত্তম। গর্ভকালীন সময়ে নারীদের বিভিন্ন ধরনের হরমোনের পরিবর্তন দেখা যায়। এর ফলে কারো কারো ডায়াবেটিকস হয়ে থাকে, যার প্রধান কারণ অতিরিক্ত ওজন। গর্ভধারণের পূর্বে কারো ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেশি থাকে।

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হলে মোট ক্যালরির শর্করা জাতীয় খাবার (৫০ থেকে ৬০ শতাংশ), আমিষ বা প্রোটিন জাতীয় খাবার (২০ থেকে ২৫ শতাংশ) বাকিটা স্নেহ বা ফ্যাট জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া সারাদিনের মোট ক্যালরির প্রায় ৩০ শতাংশ সকালের নাস্তায়, ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ দুপুরের খাবার এবং ২০ শতাংশ রাতের খাবার গ্রহণ করতে হবে।

বাকি ১৫ থেকে ২০ শতাংশ দুই থেকে তিনবার হালকা নাস্তা হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে। আমাদের দেশের স্বাভাবিক উচ্চতার সাধারণ পরিশ্রম করা ডায়াবেটিকস রোগীর দিনে ১,৮০০ হতে ২,০০০ কিলোক্যালরি খাবার প্রয়োজন হয়। সে হিসেবে সকালের নাস্তায় ৫০০ কিলোক্যালরি খাবার খেতে হবে। নিম্নে কয়েক ধরনের পছন্দের তালিকা দেওয়া হলো-

  • পছন্দ-১ঃ চারটি লালা আটার রুটি, একটি সেদ্ধ ডিম কুসুমসহ এবং ১-২ কাপ রান্না মিক্সড সবজি।
    • ক্যালরিঃ একটি ৩০ গ্রাম রুটিতে, ৭৫ কিলোক্যালরি করে মোট ৩০০ কিলোক্যলরি, একটি সেদ্ধ ডিমে ৭০ কিলোক্যালরি, সবজিতে ৪০ কিলোক্যালরি, সবজি রান্নার তেলে ৪৫ কিলোক্যালরি এবং এক কাপ লিকার চায়ে ২০ থেকে ২৫ কিলোক্যালরি করে সর্বমোট ৪৮০ কিলোক্যালরি হয়।
  • পছন্দ-২ঃ দুই কাপ সেদ্ধ চালের ভাত, একটি সেদ্ধ ডিম কুসুমসহ অথবা মাছ অথবা মাংস, ১-২ কাপ রান্না মিক্সড সবজি এবং ১-২ কাপ পাতলা ডাল।
    • ক্যালরিঃ দুই কাপ ভাতে (২৪০ গ্রাম) ৩০০ কিলোক্যালোরি, ডিম/মাছ/মাংসে ৭০ কিলোক্যালরি, সবজি ডাল গড়ে ৫০ কিলোক্যালরি, সবজি রান্না তেলে ৫০ কিলোক্যালরি, চিনি ছাড়া চায়ে ২৫ কিলোক্যালরি করে সর্বমোট ৪৯৫ কিলোক্যালরি হয়।
  • পছন্দ-৩ঃ ২৫০ মিলিলিটার সর ছাড়া দুধ, ৩ টেবিল চা চামচ ওটস, ২ টেবিল চা চামচ চিয়া সিডস, একটি আপেল/কলা।
    • ক্যালরিঃ ২৫০ মিলিলিটার দুধে ২০০ কিলোক্যালরি, ৩ চামচ ওটসে ১৫০ কিলোক্যালরি, ২ চামচ চিয়া সিডসে ৪০ কিলোক্যালরি, আপেল/কলায় ৬০ কিলোক্যালরি, ১ কাপ চায়ে ২৫ কিলোক্যালরি করে সর্বমোট ৪৭৫ কিলোক্যালরি হয়।
  • পছন্দ-৪ঃ ২০০ গ্রাম লো-ফ্যাট টক দই, ৫০ গ্রাম বার্লিফ্ল্যাক্স, ২ চা চামচ চিয়া সিডস. ১টি কলা।
    • ক্যালরিঃ ২০০ গ্রাম লো-ফ্যাট টক দইয়ে ৩০০ কিলোক্যালরি, ৫০ গ্রাম বার্লিফ্ল্যাক্সে ৫৫ কিলোক্যালরি, ২ চামচ চিয়া সিডসে ৪০ কিলোক্যালরি, আপেল/কলায় ৬০ কিলোক্যালরি, ১ কাপ চায়ে ২৫ কিলোক্যালরি করে সর্বমোট ৪৮০ কিলোক্যালরি হয়।
  • পছন্দ-৫ঃ ২টি পরোটা, ১টি সেদ্ধ ডিম, মিক্সড সবজি কম তেলে বা তেল ছাড়া।
    • ক্যালরিঃ ২টি পরোটায় ৩০০ কিলোক্যালরি, ১টি সেদ্ধ ডিমে ৭০ কিলোক্যালরি, মিক্সড সবজি ২০ কিলোক্যালরি, সবজি রান্না তেল ১০ মিঃলিঃ-এ ৯০ কিলোক্যালরি, ১ কাপ চায়ে ২৫ কিলোক্যালরি।

গর্ভাবস্থায় কচুর শাক খাওয়ার উপকারিতা 

গর্ভাবস্থায় কচুর শাক খাওয়ার উপকারিতা অনেক রয়েছে। কচুর শাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন এ, বি ও সি থাকে, যা গর্ভবতী মায়ের পুষ্টির চাহিদা পূরণে সহায়ক। আয়রন আপনার শরীরের রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সহায়ক, ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁতের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

এছাড়াও কচুর শাকের ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে, যা গর্ভাবস্থায় প্রায় প্রতিটি মেয়েরই সাধারণ একটি সমস্যা। এতে ফোলেটের পরিমাণ বেশি থাকে, যা গর্ভের শিশুর সঠিক বৃদ্ধি ও বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে।

কচুর শাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণাবলী মায়ের দেহের কোষগুলোকে সুরক্ষিত রাখে, যা গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও এই শাকের মধ্যে এমন এক উপাদান রয়েছে, যা দূষিত রক্তকে বিশুদ্ধ বা পরিষ্কার করতে সহায়তা প্রদান করে। সেজন্যই সপ্তাহে অন্তত একদিন আপনি কচুর শাককে খাদ্য মেনুতে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। 

গর্ভাবস্থায় মিষ্টি কুমড়ার শাক খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় মিষ্টি কুমড়ার শাক খাওয়ার উপকারিতা অন্যান্য শাকের মতোই পাওয়া যায়। মিষ্টি কুমড়ার শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি এবং ফাইবার থাকে যা গর্ভবতী মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এবং শিশুর ত্বক ও দৃষ্টি শক্তি বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। 

ইহা চোখের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এই শাকে ফাইবার থাকার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে যা গর্ভাবস্থায় সাধারণ একটি সমস্যা। এছাড়াও এতে ফোলেটের উচ্চমাত্রায় থাকে, যা শিশুর মস্তিষ্ক এবং মেরুদন্ডের সঠিক গঠনের নিশ্চয়তা প্রদান করে এবং জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধে সাহায্য করে।

মিষ্টি কুমড়া শাকে থাকা আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে, যা গর্ভবতী নারীদের রক্তশূন্যতা রোধে সাহায্য করে। সেজন্য সুষম পুষ্টি পেতে আপনি মিষ্টি কুমড়ার শাককে সপ্তাহে অন্তত একদিন অথবা দুইদিন খাদ্য তালিকার ভেতর অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় কলমি শাক খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় কলমি শাক খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে সব গর্ভবতী নারীদের জানার প্রয়োজন রয়েছে। এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, সি ও বি-১ থাকে, যা গর্ভবতী মায়ের পুষ্টির চাহিদা পূরণ ও গর্ভস্থ শিশুর স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এতে থাকা ক্যালসিয়াম গর্ভবতী মায়ের হাড়ের স্বাস্থ্য এবং শিশুর হাড় ও দাঁতের বিকাশে সহায়তা করে।

এই শাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন বিদ্যমান থাকে, যা গর্ভে থাকা শিশুর হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে সাথে সাথে গর্ভবতী নারীদের রক্তশূন্যতা প্রতিরোধেও সাহায্য করে থাকে। এতে থাকা ভিটামিন এ ও সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষায় সাহায্য করে।

কলমি শাকে ফাইবারের পরিমাণও অনেক থাকে, যা হজমের সহায়তা করে যা হজমে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। ইহা গর্ভাবস্থায় নারীদের একটি সাধারন সমস্যা হিসেবে ধরা হয়। সেজন্য গর্ভাবস্থায় সুষম খাদ্যাভাসের অংশ হিসেবে আপনি কলমি শাককে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় লাল শাক খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় লাল শাক খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে ভালোভাবে জানা প্রয়োজন, কারণ এই শাক বাংলাদেশে বেশ পরিচিত একটি শাক। অন্যান্য শাক থেকে এই শাক একটু আলাদা তার রং এবং স্বাদের জন্য। এটি সাধারণত শীতকালীন ফসল কিন্তু বর্তমানে সবসময়ই এই শাক পাওয়া যায়। এখন আসুন জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় এই শাক খাওয়ার অন্যান্য উপকারিতা-

  • লাল শাকের প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে। যা গর্ভবতী এবং অনাগত শিশুর দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায়। এছাড়াও অন্ধত্ব ও রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে।
  • রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে এই শাকের ভূমিকা অতুলনীয়। যার কারনে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়।
  • এই শাক রক্তশূন্যতা রোধ করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এই শাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে যা গর্ভবতী নারীর রক্তশূন্যতা রোধ করতে বিশেষ অবদান রাখে।
  • এই শাকে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, স্নেহ, শর্করা এবং ভিটামিন এ, ভিটামিন বি২, ভিটামিন সি, ক্যারোটিন ও অন্যান্য খনিজ উপাদান থাকে, যা গর্ভবতী নারীর দেহে শক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। সাধারণত গর্ভপাতের সময় গর্ভধারিনের প্রচুর শক্তির প্রয়োজন হয়।
  • লাল শাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ থাকে, যা হজম শক্তিকে বৃদ্ধি করে। ফলে গর্ভবতী নারীর গর্ভাবস্থার সাধারণ সমস্যার একটি বদহজম-এর আশঙ্কা কমে যায়।
  • এই শাকে এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া এতে থাকা অ্যামাইনো এসিড, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন ই, পটাশিয়াম এবং ভিটামিন সি শরীরে বিদ্যমান একাধিক টক্সিন উপাদান দূর করে। ফলে শরীরে ক্যান্সারের কোষ জন্ম নিতে পারে না।
  • এই শাকে যেসব উপাদান রয়েছে তা গর্ভবতী নারীর ও অনাগত সন্তানের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

গর্ভাবস্থায় পালং শাক খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য

এই পোস্টে আমি আপনাদের গর্ভাবস্থায় পালং শাক খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতা বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। এছাড়াও এখানে অন্যান্য শাক নিয়েও আমি আলোচনা করেছি। বিশেষ করে পালং শাকের উপায় দিক সম্পর্কে আপনি জানার পর বুঝতেই পারছেন যে এটি পরিমাণ মত খাওয়া উচিত।

আপনারা আগেই জেনেছেন গর্ভাবস্থায় শরীরের শারীরিক চাহিদা বেড়ে যায়। এই চাহিদা মেটানোর জন্য অন্যান্য খাবারের সাথে পালং শাক একটি মাধ্যম হতে পারে, তবে এটিই একমাত্র উপাদান নয়। গর্ভবতী মেয়েদের ক্ষেত্রে গর্ভকালীন সময় একটু অত্যন্ত স্পর্শকাতর সময়।

ছবি-৩

এই সময় নতুন কোন খাদ্যাভাস খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হলে অবশ্যই কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে করা উচিত। এক্ষেত্রে আমার পরামর্শ হচ্ছে, ডাক্তারি পরামর্শ মেনে চলা সাথে সাথে উপরে বর্ণিত গ্রহণ করা খাদ্য তালিকা অনুযায়ী খেতে হবে এবং এড়িয়ে চলা খাদ্য তালিকা অনুযায়ী খাদ্যকে বাদ দিয়ে চলায় শ্রেয়।

আজ এই পর্যন্তই, ভবিষ্যতে এই পোস্টের কোন আপডেট অথবা নতুন কোন পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব সে পর্যন্ত সবাই সুস্থ থাকবেন, ভালো থাকবেন, নিজের এবং অনুগত সন্তানের দিকে খেয়াল রাখবেন।


পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ......

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অজানা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url