ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম এবং উপকারিতা ও অপকারিতা
ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম নিয়ে আপনি চিন্তিত। আপনি কি এর উপকারিতা এবং আপকারিতা নিয়েও খুব চিন্তিত। তাহরে আমার এই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ভালো ভাবে পড়বেন। পড়া শেষে আপনার চেহারায় চিন্তার ভাবটা নাও থাকতে পরে।
এই পোস্টে আমি আপনাদের ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম এবং উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করব। এই বিষয় ছাড়াও এই পোস্টে আরো অনেক বিষয় সম্পর্কে জানানো হয়েছে। তাই আপনারা একটু সময় নিয়ে পোস্টটি করার চেষ্টা করবেন।
এই পোস্টে আরো যা যা থাকছেঃ ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম
- মুখে ব্যবহারের ভিটামিন ই ক্যাপসুল কি
- ভিটামিন ই ক্যাপসুল কোনটা ভালো
- মুখে ব্যবহারের ভিটামিন ই ক্যাপসুল-এর দাম কত
- ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
- ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম
- তৈলাক্ত ভাব দূর করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল
- নাইট ক্রিমের জন্য ভিটামিন ই ক্যাপসুল
- শরীর মোটা থামাতে ভিটামিন ই ক্যাপসুলের ব্যবহার
- ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের উপকারিতা
- ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের অপকারিতা
- ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহার নিয়ে লেখকের মন্তব্য
মুখে ব্যবহারের ভিটামিন ই ক্যাপসুল কি
ভিটামিন ই ক্যাপসুল একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ সম্পূরক যা শরীরে ভিটামিন ই এর প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ভিটামিন ই একটি ফ্যাট দ্রবণীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পাদনের সাহায্য করে। ইহা খাদ্য এবং সম্পূরক আকারে পাওয়া যায়।
এই ক্যাপসুল পানির সাহায্যে খাওয়া যায় অথবা কেটে তেলের মত মুখে, ত্বকে বা চুলে প্রয়োগ করা যায়। ইয়া সাধারণত টোকোফেরল এবং টোকোট্রায়েনল নামে দুটি প্রধান ধরনের ভিটামিন ই সমূহ ধারণ করে। এগুলো প্রাকৃতিক এবং সিন্থেটিক উভয় রূপে পাওয়া যায়। প্রাকৃতিক ভিটামিন এ সাধারণত বেশি কার্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়।
ভিটামিন ই সাধারণত স্বাস্থ্যকর ত্বক, চুলের স্বাস্থ্য, ইমিউনিটি সিস্টেম শক্তিশালী করুন, রক্ত সঞ্চালন উন্নত এবং চোখের স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেসব উৎস হতে ভিটামিন ই পাওয়া যায় সেগুলো সম্পর্কে আসুন জেনে নেওয়া যাক,
- বাদাম ও বীজ
- পাতা সবুজ সবজি
- সূর্যমুখী তেল
- অলিভ অয়েল
- শস্য জাতীয় খাবার ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল কোনটা ভালো
ভিটামিন ই ক্যাপসুল নির্বাচন করতে কিছু বিষয় মাথায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। বাজারে অনেক ব্র্যান্ড এবং ফর্মুলেশন পাওয়া যায়, তবে কিছু প্রধান বিষয় বিবেচনা করলে আপনি একটি মানসম্মত পণ্য বেছে নিতে পারেন। নিচে কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা আছে যার মাধ্যমে আপনি ক্যাপশন নির্বাচন করতে পারবেন।
- উপাদানঃ প্রাকৃতিক ভিটামিন ই (d-alpha-tocopherol) সাধারণত বেশি কার্যকরী এবং শরীর দ্বারা সহজে শোষিত হয়। প্রাকৃতিক ভিটামিন ই-এর জন্য লেবেলে "d-alpha-tocopherol" লেখা থাকে। যেখানে সিম থেকে ভিটামিন ই তে লেখা থাকে "dl-alpha-tocopherol".
- ফর্মুলেশনঃ কিছু ভিটামিন ই সম্পূরক শুধু alpha-tocopherol নয় বরং অন্যান্য টোকোফেরল (beta, gamma, delta) এবং টোকোট্রায়েনল ধারণ করে। যা শরীরের জন্য আরও উপকারী হতে পারে।
- ডোজঃ ভিটামিন ই ক্যাপসুলের ডোজ সাধারণত ২০০ মিলিগ্রাম ও ৪০০ মিলিগ্রাম হয়। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী দোষ নির্বাচন করতে হবে।
- সার্টিফিকেশনঃ USP, NSF বা অন্য তৃতীয় পক্ষের সার্টিফিকেশন সহ ক্যাপসুলগুলো বেছে নিন। যা পণ্যের গুণমান এবং বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করে।
- ব্র্যান্ডের বিশ্বযোগ্যতাঃ স্বীকৃত এবং ভালো রিভিউ পাওয়া ব্র্যান্ডগুলি থেকে পণ্য নির্বাচন করুন।
- Nature Made: প্রাকৃতিক ভিটামিন এ সরবরাহ করে এবং সার্টিফাইড।
- Solgar: ভেজিটেরিয়ান ক্যাপসুল এবং উচ্চমানের প্রাকৃতিক ভিটামিন ই প্রদান করে।
- NOW Foods: মিশ্র টোকোফেরল সহ প্রাকৃতিক ভিটামিন ই সরবরাহ করে।
- Garden of Life: পুরো খাবারের উৎস থেকে তৈরি এবং অর্গানিক উপাদান ব্যবহার করে।
- Kirkland Signature: প্রাকৃতিক ভিটামিন ই এবং সাশ্রয়ী মূল্যের জন্য জনপ্রিয়।
মুখে ব্যবহারের ভিটামিন ই ক্যাপসুল-এর দাম কত
মুখে ব্যবহারের ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর দাম বিভিন্ন ব্রান্ড এবং ডোজ অনুযায়ী দাম ভিন্ন হতে পারে। অনলাইনের মাধ্যমে অথবা ফিজিক্যাল ফার্মেসিতে যেয়ে আপনি কিনতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন অনলাইন ফার্মেসিতে যেতে পারেন যা কিছুটা দাম কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। এখনে কয়েকটি সাধারণ ভিটামিন ই ক্যাপসুলের দাম উল্লেখ করা হলো-
ঔষধের নাম | ঔষধের পাওয়ার (mg) | ঔষধের সংখ্যা (প্রতি পাতা) | দাম (টাকা,২০২৪) |
---|---|---|---|
ই-ক্যাপ | ২০০ | ১৫ | ৭৫ |
ই-ক্যাপ | ৪০০ | ১৫ | ১০৫ |
ই-ক্যাপ | ৬০০ | ১০ | ৮০ |
লিফিল-ই | ২০০ | ১০ | ৪০ |
লিফিল-ই | ৪০০ | ১০ | ৬০ |
নেচার-ই | ২০০ | ১০ | ৫০ |
নেচার-ই | ৪০০ | ১০ | ৭০ |
ই-জেল | ২০০ | ১০ | ৪০ |
ই-জেল ডিএস | ৪০০ | ১০ | ৬০ |
ওভিট-ই | ২০০ | ১০ | ৪০ |
ওভিট-ই | ৪০০ | ১০ | ৬০ |
টোকোজেল | ২০০ | ১০ | ৬০ |
টোকোজেল | ৪০০ | ১০ | ৮০ |
ওভিট-ই | ২০০ | ১০ | ৪০ |
ই-সফট | ২০০ | ১০ | ৪০ |
ই-সফট | ৪০০ | ১০ | ৬০ |
ইকোভিট-এস | ২০০ | ১০ | ৪০ |
ইকোভিট | ৪০০ | ১০ | ৬০ |
ইভিটাক্যাপ | ২০০ | ১০ | ৫০ |
ইভিটাক্যাপ | ৪০০ | ১০ | ৭০ |
ভিগাক্যাপ | ২০০ | ১০ | ৫০ |
ভিগাক্যাপ | ৪০০ | ১০ | ৭০ |
ই-গোল্ড | ২০০ | ১০ | ৪০ |
ই-গোল্ড | ৪০০ | ১০ | ৬০ |
ই-ফিল | ২০০ | ১০ | ৪০ |
ই-ফিল | ৪০০ | ১০ | ৬০ |
ইনোভিট-ই | ২০০ | ১০ | ৪০ |
ইনোভিট-ই | ৪০০ | ১০ | ৬০ |
ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে, তবে এটি সরাসরি ত্বক ফর্সা করতে পারে না। ত্বকের স্বাভাবিক রং পরিবর্তনের জন্য অন্যান্য পুস্তিকর খাদ্য, পর্যাপ্ত পানি পান এবং সঠিক ত্বকের যত্নের রুটিন পালন করাও গুরুত্বপূর্ণ। ত্বক উজ্জ্বল এবং স্বাস্থ্যকর রাখার জন্য ভিটামিন ই-এর কয়েকটি উপায় আছে যা নিম্নে দেওয়া হলো-
- ভিটামিন ই ক্যাপসুল এবং অ্যালোভেরা জেল
- একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল কেটে তেল বের করে নিন।
- এটি অ্যালোভেরা জেলের সাথে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন।
- মিশ্রনটি মুখে প্রয়োগ করুন এবং ২০ থেকে ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
- এটি ত্বকের ময়েশ্চারাইজিং বৃদ্ধি করবে এবং উজ্জ্বলতা আনবে।
- ভিটামিন ই এবং লেবুর রস
- একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল কেটে তেল বের করে নিন।
- এটি এক চা চামচ লেবুর রসের সাথে মিশিয়ে মুখে প্রয়োগ করুন।
- ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
- লেবুর রস ত্বকের দাগ হ্রাস করতে সাহায্য করবে এবং ভিটামিন ই ত্বকের পুনর্জীবন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে।
- ভিটামিন ই এবং মধু
- একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল কেটে তেল বের করে নিন।
- এটি এক চা চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে মুখে প্রয়োগ করুন।
- ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
- মধু প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ত্বকেকে উজ্জ্বল করবে।
- ভিটামিন ই এবং নারিকেল তেল
- একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল কেটে তেল বের করে নিন।
- এটি নারিকেল তেলের সাথে মিশিয়ে মুখে এবং শরীরে প্রয়োগ করুন।
- এটি ত্বকেকে গভীরভাবে ময়েশ্চারাইজ করবে এবং উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে।
- সাবধানতা
- ত্বকের সংবেদনশীলতা পরীক্ষার জন্য প্রথমে একটি প্যাচ টেস্ট করুন।
- ভিটামিন ই ত্বকে সরাসরি প্রয়োগ করার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনার ত্বক এতে সহনশীল।
- অতিরিক্ত লেবুর রস বা অন্য এসিডিক উপাদান ব্যবহারে সাবধান থাকুন, কারণ এটি ত্বকে জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম
ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের ত্বকের আদ্রতা বজায় থাকে, বলিরেখা কমে এবং ত্বক উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যবান হয়। সঠিক পদ্ধতি ও নিয়ম মেনে চললে আপনার ত্বক ভালো থাকবে এবং ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান পাবেন। নিম্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের কয়েকটি নিয়ম দেওয়া হলোঃ
- সরাসরি ব্যবহারের পদ্ধতিঃ
- প্রথমে আপনার মুখ ভালোভাবে ফেসওয়াশ দিয়ে পরিষ্কার করুন এবং মুছে নিন।
- একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল কেটে নিন এবং তেলটি বের করে নিন।
- তেলটি আপনার আঙ্গুলে নিয়ে মুখে আলতো করে মেসেজ করুন। বিশেষ করে শুষ্ক বা বলিরেখাযুক্ত জায়গায় ভালোভাবে লাগান।
- ইহা রাতভর রেখে দেন এবং সকালে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
- নাইট ক্রিম হিসেবে ব্যবহারের পদ্ধতিঃ
- এক টেবিল চা চামচ নারকেল তেল বা জলপাই তেল নিন।
- ২-৩ টি ভিটামিন ই ক্যাপসুল কেটে তেলটির সাথে মেশান।
- রাতে মুখ পরিষ্কার করে এই মিশ্রণটি মুখে লাগান এবং সকালে ধুয়ে ফেলুন।
- ফেস মাস্ক হিসেবে ব্যবহারের পদ্ধতিঃ
- এক টেবিল চা চামচ অ্যালোভেরা জেল এবং১ চামচ মধু নিন।
- ২-৩ টি ভিটামিন ই ক্যাপসুল কেটে মিশ্রণটির সাথে মেশান।
- এই মেশিনটি মুখে লাগান এবং ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন। পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
- মশ্চেরাইজার হিসেবে ব্যবহারের পদ্ধতিঃ
- আপনার প্রতিদিন ময়েশ্চারাইজারে ১-২ ফোঁটা ভিটামিন ই তেল মিশিয়ে ব্যবহার করুন।
তৈলাক্ত ভাব দূর করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল
ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করে মুখের তৈলাক্ত ভাব বা তেলতেলে ভাব দূর করা কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে, কারণ ভিটামিন ই তেল নিজেই ভারী এবং ময়েশ্চারাইজিং। তবে আপনি যদি ভিটামিন ই তেলকে কিছুটা হালকা উপাদানের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারে তাহলে ত্বকের তেলতেলে ভাব কমাতে সাহায্য করবে। এখন আসুন জেনে নেওয়া যাক আর কোন কোন উপায়ে রয়েছে-
- ভিটামিন ই এবং অ্যালোভেরা জেল
- একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল কেটে তেল বের করে নিন এবং এটি অ্যালোভেরা জেলের সাথে মিশিয়ে মুখে প্রয়োগ করুন।
- অ্যালোভেরা জেল হালকা এবং শীতল, যা ত্বকের তেলতেলে ভাব কমাতে সাহায্য করে।
- ভিটামিন ই এবং টি ট্রি অয়েল
- ভিটামিন ই তেলের সহিত কয়েক ফোটা টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে মুখে প্রয়োগ করুন।
- টি ট্রি ওয়েল অ্যান্টিসেপটিক এবং আন্টি-ইনফ্লামেটরি গুণাবলী রয়েছে যা ব্রণ এবং তেলতেলে ভাব কমাতে সাহায্য করে।
- ভিটামিন ই এবং গোলাপজল
- ভিটামিন ই তেল এবং গোলাপজল মিশিয়ে একটি স্প্রে বোতলে রাখুন। প্রতিদিন মুখ ধোয়ার পর স্প্রে করুন।
- গোলাপ জল ত্বককে সতেজ করে এবং তেলতেলে ভাব কমাতে সাহায্য করে।
- ভিটামিন ই এবং মুলতানি মাটি (ফুলার’স আর্থ)
- মুলতানি মাটির সাথে ভিটামিন ই তেল এবং পরিমাণ মতো পানি মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এটি মুখে প্রয়োগ করুন। কিছুক্ষণ পর তা শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।
- মুলতানি মাটি অতিরিক্ত তেল শোষণ করে এবং ত্বককে মসৃণ করে।
- ব্যবহার করার সময় কিছু পরামর্শ
- সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার এই মিশ্রণগুলো ব্যবহার করুন।
- প্রতিবার ব্যবহারের আগে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন।
- ব্যবহারের পর হালকা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন, যাতে ত্বক শুষ্ক না হয়ে যায়।
নাইট ক্রিমের জন্য ভিটামিন ই ক্যাপসুল
ভিটামিন এ ক্যাপসুল দিয়ে নাইট ক্রিম তৈরি করা খুবই সহজ এবং এটি ত্বকের জন্য বেশ উপকারী হতে পারে। ভিটামিন ই ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে ফ্রি র্যাডিক্যাল থেকে সুরক্ষা দিতে এবং বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে। ইহা নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের স্বাস্থ্য এবং উজ্জ্বলতা বাড়বে। নিম্নে একটি সহজ নাইট ক্রিম তৈরীর পদ্ধতি দেওয়া হলঃ
- উপকরণঃ
- ভিটামিন ই ক্যাপসুল - ২-৩টি
- নারিকেল তেল বা জলপাই তেল - ১ টেবিল চা চমচ
- অ্যালোভেরা জেল - ১ টেবিল চা চমচ
- আপনার পছন্দের অ্যাসেনশিয়াল অয়েল (ঐচ্ছিক) - ২-৩ ফোঁটা
- প্রস্তুত প্রণালীঃ
- একটি ছোট পাত্রে নারিকেল তেল বা জলপাই তেল হালকা গরম করুন যাতে এটি তরল হয়ে যায়।
- ২-৩টি ভিটামিন ই ক্যাপসুল কেটে তেলের মধ্যে ভিটামিন ই বের করে নিন।
- অ্যালোভেরা জেল তেলের সাথে মেশান। ইহা ত্বকের শীতলতা বজায় রাখতে এবং ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করতে সাহায্য করবে।
- আপনার পছন্দের অ্যাসেনশিয়াল ২-৩ ফোঁটা যোগ করুন। এটি নাইট ক্রিমে একটি সুন্দর গন্ধ যোগ করবে এবং অতিরিক্ত সুবিধা দিতে পারে।
- সব উপকরণ ভালোভাবে মেশান যাতে একটি মসৃণ ক্রিম তৈরি হয়।
- এই মিশ্রণটি একটি পরিষ্কার কন্টেনারে রেখে দিন এবং প্রতি রাতে ব্যবহার করুন।
- ব্যবহারের পদ্ধতিঃ
- নাইট ক্রিম লাগানোর আগে আপনার মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন।
- অল্প পরিমান ক্রিম নিন এবং মুখে ও গলায় আলতো করে মেসেজ করে লাগান।
- সকালে মুখ ধুয়ে ফেলুন এবং আপনার প্রতিদিনের ত্বক যত্নের রুটিন অনুসরণ করুন।
শরীর মোটা থামাতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর ব্যবহার
ভিটামিন ই ক্যাপসুল-এর ব্যবহার শরীরকে মোটা করে না কারণ ইহা এমন একটি ভিটামিন যা মূলত অ্যন্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং শরীরের বিভিন্ন শরীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। তবে যদি ভিটামিন ই ক্যাপসুল গ্রহণের পর ওজন বৃদ্ধি লক্ষ্য করেন তাহলে তা অন্য খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাপন বা স্বাস্থ্যগত কারণ হতে পারে।
বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত যদি এরকম কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করেন। ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারে শরীর মোটা না হওয়ার যেসব কারণগুলো রয়েছে তার মধ্যে প্রধান কারণ কয়েকটি এখানে উল্লেখ করা হলো-
- ক্যালরি নেইঃ ভিটামিন ই নিজেই কোন ক্যালোরি সরবরাহ করে না। ওজন বাড়ানোর জন্য প্রয়োজন হয় ক্যালরি উদ্বৃত্ত, যা ভিটামিন ই থেকে পাওয়া যায় না।
- চর্বি সংরক্ষণ করে নাঃ ভিটামিন ই শরীরের চর্বি সংরক্ষণ বা চর্বি কোষ তৈরি করার কোন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে না।
- পুষ্টি শোষণঃ ভিটামিন ই শরীরে অন্য পুষ্টির শোষণ এবং ব্যবহারকে সাহায্য করতে পারে, কিন্তু ইহা নিজে থেকে ওজন বাড়ায় না।
- অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের ভূমিকাঃ ভিটামিন ই প্রধানত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে, যে কোষের ক্ষতি রোধ করে এবং শরীরের সঠিক কার্যক্রম বজায় রাখতে সাহায্য করে। ইহা চর্বি বা ক্যালরির সাথে সরাসরি সম্পর্কিত নয়।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের উপকারিতা
ভিটামিন ই ক্যাপসুল ত্বকের জন্য একটি কার্যকরী এবং উপকারী উপাদান। এটি ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করতে এবং বিভিন্ন ত্বকের সমস্যার সমাধানে সাহায্য করতে পারে। আপনার ত্বকের ধরন এবং সংবেদনশীলতা অনুযায়ী ব্যবহার করুন। এখন আসুন জেনে নেওয়া যাক আর কোন কোন উপকারিতা রয়েছে-
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রভাবঃ ভিটামিন ই একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ত্বককে ফ্রি রেডিক্যালের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এটি ত্বকের কোর্সকে পুনর্জীবিত করতে সাহায্য করে এবং বার্ধক্যের লক্ষণ কমাতে সহায়ক।
- ত্বকের ময়েশ্চারাইজিংঃ ভিটামিন ই ত্বকের ময়েশ্চার ধরে রাখতে সহায়ক। এটি শুষ্ক এবং ক্ষতিগ্রস্ত ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত হয়। ভিটামিন ই-এর তেল ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে এবং ত্বককে নরম এবং মসৃণ করে।
- দাগ এবং দাগ হ্রাসঃ ভিটামিন ই ত্বকের দাগ এবং দাগ হ্রাস করতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের পুনর্জীবন প্রক্রিয়া-ত্বরান্বিত করে এবং ত্বকের টোন উন্নত করে।
- সানবার্ন থেকে রক্ষাঃ ভিটামিন ই ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর ইউভি রশ্মি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের সানবার্ন কমাতে এবং ত্বকের ক্ষতি হ্রাস করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
- ত্বকের প্রদাহ হ্রাসঃ ভিটামিন ই-এর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি প্রভাব রয়েছে, যা ত্বকের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এটি সংবেদনশীল ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত হয় এবং ত্বকের লালচে ভাব কমাতে সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
- বলিরেখা এবং ফাইন লাইন হ্রাসঃ ভিটামিন ই বলিরেখা এবং ফাইন লাইন হ্রাস করতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের ইলাস্টিসিটি বৃদ্ধি করে এবং ত্বককে তরুণ এবং উজ্জ্বল রাখে।
- ত্বকের রঙ উন্নতঃ ভিটামিন ই ত্বকের রঙ উজ্জ্বল করতে এবং ত্বকের টোন সমান করতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের দাগ এবং পিগমেন্টেশন কমাতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের অপকারিতা
ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের কিছু সম্ভাব্য অপকারিতা রয়েছে, যা ব্যবহারের আগে জানা জরুরি। এই অপকারিতা বিশেষত অতিরিক্ত ব্যবহারে বা সংবেদনশীল ত্বকে হতে পারে। তবে সঠিক পরিমাণ এবং সঠিক পদ্ধতিতে ব্যবহারের মাধ্যমে এ ধরনের সমস্যা এড়ানো সম্ভব। এখন আসুন জেনে নেওয়া যায় তার কোন কোন অপকারিতা রয়েছে-
- এলার্জিক প্রতিক্রিয়াঃ ভিটামিন ই তেল ব্যবহারে কিছু মানুষের ত্বকে এলার্জিক প্রতিক্রিয়া হতে পারে। যেমনঃ লালচে ভাব, ফুসকুড়ি, চুলকানি, ফোলা উল্লেখযোগ্য।
- ত্বকের অতিরিক্ত তেলতেলে ভাবঃ অতিরিক্ত ভিটামিন ই তেল ব্যবহারে ত্বক অতিরিক্ত তেলতেলে হতে পারে, যা বিশেষত তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এটি ব্রণ এবং অন্যান্য ত্বকের সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
- ছিদ্র বন্ধ হওয়াঃ ভিটামিন ই তেল ভারি হওয়ার কারণে ত্বকের ছিদ্র বন্ধ হতে পারে। এটি ত্বকে ব্রণ এবং ব্ল্যাকহেডের সমস্যা বাড়াতে পারে।
- হাইপারপিগমেন্টেশনঃ কিছু ক্ষেত্রে ভিটামিন ই তেল ব্যবহারে ত্বকের পিগমেন্টেশন বাড়তে পারে, যা ত্বকের রঙকে অসমান করতে পারে।
- সংবেদনশীল ত্বকের প্রতিক্রিয়াঃ সংবেদনশীল ত্বকে ভিটামিন ই তেল ব্যবহারে প্রতিক্রিয়া হতে পারে। এটি ত্বককে আরো সংবেদনশীল এবং লালচে করতে পারে।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহার নিয়ে লেখকের মন্তব্য
ভিটামিন ই ক্যাপসুল মূলত ত্বক এবং চুলের তথা রূপচর্চায় ব্যবহৃত একটি সম্পূর্ণ পরীক্ষিত পন্থা। তবে আপনি কিছু না বুঝে শুনে শুধুমাত্র ক্যাপসুল খেলেই ভিটামিন ই এর উপকার পাবেন না। আর যদি খেতেই চান তবে ক্যাপসুল না খেয়ে ভালো সুষম খাবারের মাধ্যমে ভিটামিন এ শরীরে দেওয়ার চেষ্টা করুন।
শাকসবজি, বাদাম, ডিম ইত্যাদি বেশি করে খান। ত্বক আর চুলতো ভালো থাকবেই আর কোন একটা ঝুকিয়ে নিতে হবে না। আশা করি আজকের এই পোস্টে আপনারা ভিটামিন ই ক্যাপসুল সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ একটি ধারণা পেয়েছেন। ভবিষ্যতে এরকম আরো পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে আমি হাজির হব। ততদিন সুস্থ থাকবেন, ভালো থাকবেন এবং নিজের ত্বক এবং চুলের প্রতি যত্নশীল হবেন।
পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ.....
অজানা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url