OrdinaryITPostAd

টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ বোঝার সহজ উপায় ও করণীয়

 টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ বোঝার সহজ উপায় ও করনীয় সম্পর্কে আপনি জানতে চাচ্ছেন। টাইফয়েড জ্বর হলে ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। আপনারা প্রথম হতে শেষ পর্যন্ত আমার এই পোস্টটি পড়ুন। পড়া শেষে হয়ত টাইফয়েড জ্বর নিয়ে আপনার অজনা আর কিছু থাকবে না।  

ছবি-১

পূর্বে এই জ্বর খুব মারাত্মক ছিল কারণ সে সময় তেমন কোন সঠিক চিকিৎসা ছিল না। কিন্তু বর্তমানে আপনি যদি একটু সচেতন হন এবং সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করেন তাহলে খুব সহজেই টাইফয়েড জ্বর হতে মুক্ত হতে পারবেন।

এই পোস্টে যা যা থাকছেঃ টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ বোঝার সহজ উপায় ও করণীয়

টাইফয়েড জ্বর কি এবং কেন হয়

টাইফয়েড জ্বর একটি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ যা প্রধানত সালমোনেলা টাইফি নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংঘটিত হয়। এটি সাধারণত দূষিত খাদ্য বা পানীয়ের মাধ্যমে মানুষের দেহে প্রবেশ করে। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসেস-এর তথ্য অনুসারে সালমোনেলা ফুড পয়জনিং সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া। এটি প্রবেশের পর পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

টাইফয়েডের জীবাণু শরীরে ঢুকলে গুরুতর সব অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দ্রুত চিকিৎসা না করা হলে টাইফয়েড গুরুতর সংক্রমণ ও জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। যা রোগীর মৃত্যু ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় দ্বিগুণ। এই রোগের ফলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন ঘটে যেমন জ্বর, পেটের ব্যথা, মাথাব্যথা, দুর্বলতা এবং কখনো কখনো পেটের সমস্যার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। নিচে কয়েকটি প্রধান কারণ দেওয়া হলো -

  • দূষিত পানিঃ যদি আপনি এমন পানি পান করেন যা স্যালমোনেলা টাইফি ব্যাকটেরিয়া দ্বারা দূষিত।
  • দূষিত খাদ্যঃ এমন খাবার যা যথাযথভাবে রান্না করা হয়নি বা সংরক্ষিত হয়নি।
  • অপরিষ্কার পরিবেশঃ যেখানে পরিষ্কার পানি ও ভালো স্যানিটেশন ব্যবস্থা নেই সেখানে টাইফয়েডের জ্বরের ঝুঁকি বেশি থাকে।

টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ

টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণগুলো সাধারণত ধীরে ধীরে শুরু হয় এবং সময়ের সাথে সাথে তীব্র হতে পারে। লক্ষণগুলো দেখা দেওয়ার সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, কারণ টাইফয়েড জ্বর সময়মতো চিকিৎসা না করলে গুরুতর হতে পারে। সাধারণত রক্ত পরীক্ষা, মলমত্র পরীক্ষা এবং বোন ম্যারো কালচার ব্যবহার করে টাইফয়েড জল নির্ণয় করা যায়। নিম্নে কয়েকটি প্রধান লক্ষণ উল্লেখ করা হলো - 

  • উচ্চ জ্বরঃ টাইফয়েড জ্বর সাধারণত ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) পর্যন্ত উঠতে পারে এবং কয়েকদিন বা সপ্তাহ ধরে থাকতে পারে।
  • মাথাব্যথাঃ নিয়মিত বা স্থায়ী মাথাব্যথা থাকতে পারে।
  • পেটের ব্যথাঃ পেট ব্যথা এবং অস্বস্তি অনুভব হতে পারে, বিশেষ করে পেটের উপরের অংশ।
  • ক্ষুধামন্দা ওজন হ্রাসঃ টাইফয়েড জ্বরের ফলে খাবার অরুচি হতে পারে এবং ওজন কমতে পারে।
  • দুর্বলতা ও ক্লান্তিঃ শরীরে প্রচন্ড দুর্বলতা ও ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে।
  • শুকনো কাশিঃ শুকনো কাশি হতে পারে, বিশেষ করে জ্বরের প্রাথমিক পর্যায়ে।
  • বদহজম ও ডায়রিয়াঃ কিছু ক্ষেত্রে বদহজম এবং ডায়রিয়া হতে পারে, তবে কিছু ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্যও হতে পারে।
  • ত্বকের ফুসকুড়িঃ কিছু মানুষের ত্বকে গোলাপি রঙের ছোট ছোট দাগ বা ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে, যা প্রায় এক সপ্তাহের মধ্যে অদৃশ্য হয়ে যায়।
  • মানসিক বিভ্রান্তিঃ গুরুতর ক্ষেত্রে মানসিক বিভ্রান্তি, উত্তেজনা বা হ্যালুসিনেশন হতে পারে।
  • ঠান্ডা লাগা ও ঘাম হওয়াঃ মাঝে মাঝে ঠান্ডা লাগা এবং অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে।

টাইফয়েড জ্বর হলে কি কি খাওয়া উচিত

টাইফয়েড জ্বর হলে শরীরের পুষ্টি এবং শক্তি ধরে রাখতে সঠিক খাদ্যাভাস বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হলে সাধারণত হালকা, সহজপাচ্য এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত। নিম্নে টাইফয়েড জ্বরে কি কি খাওয়া উচিত তার একটি তালিকা দেয়া হলোঃ

  • পানিঃ প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। ডিহাইড্রেশন এড়াতে শরীরে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করা প্রয়োজন। এছাড়া, ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন (ওআরএস) পান করা যেতে পারে।
  • ফল এবং ফলের রসঃ পাকা কলা, আপেল, পেয়ারা, আঙ্গুর এবং কমলার মত ফল খাওয়া যেতে পারে। এছাড়া ডাবের পানি ও ফ্রেশ ফলের রস পান করা ভালো।
  • হালকা স্যুপঃ চিকেন স্যুপ, সবজি স্যুপ এবং ডাল স্যুপ খাওয়া যেতে পারে এগুলো সহজপাচ্য এবং পুষ্টিকর।
  • ব্রেড এবং বিস্কুটঃ সাদা ব্রেড, ক্র্যাকার্স এবং বিস্কুট খাওয়া যেতে পারে। এগুলো হালকা এবং সহজে হজম হয়।
  • দুধ এবং দুধজাত পণ্যঃ দুধ, দুই এবং লাস্যি খাওয়া যেতে পারে। তবে দুধ ভালো ভাবে ফুটিয়ে পান করা উচিত।
  • পুডিং এবং খিচুড়িঃ ভাতের পুডিং এবং হালকা খিচুড়ি খাওয়া যেতে পারে। এগুলো হজমে সাহায্য করে।
  • নরম শাকসবজিঃ ভালোভাবে রান্না করা এবং ম্যাম করা শাকসবজি যেমন আলু, গাজর, লাউ ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।
  • প্রোটিনঃ ডাল, মসুর, সয়াবিন এবং সাদা মাংস খাওয়া যেতে পারে। তবে মাংসের পরিমাণ সীমিত রাখতে হবে।

টাইফয়েড জ্বর ভালো করার উপায়

টাইফয়েড জ্বর থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য সঠিক চিকিৎসা এবং যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই জ্বরের জন্য সবচেয়ে কার্যকর চিকিৎসা হলো অ্যান্টিবায়োটিক। চিকিৎসক স্যালমোনেলা টাইফি ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে উপযুক্ত অ্যান্টিবায়োটিক নির্ধারণ করে থাকেন। অ্যান্টিবায়োটিকের সাথে সাথে আর যে সব উপায় আছে তা দেওয়া হলো -

  • পানিশূন্যতা পূরণঃ ডায়রিয়া ও ঘামের কারণে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি বের হয়ে যায়। এজন্য পর্যাপ্ত পানি ও তরল যেমন ওআরএস, নারিকেল পানি, ফলের রস ইত্যাদি পান করা জরুরি।
  • পুষ্টিকর খাদ্যঃ পুষ্টিকরণ সহজপাচ্য খাদ্য খাওয়া উচিত যাতে শরীর দ্রুত সেরে ওঠে। নরম ও সঠিকভাবে রান্না করা খাবার যেমন খিচুড়ি, স্যুপ, ডাল, ফল ও সবজি খাওয়া যেতে পারে।
  • বেড রেস্টঃ পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে যাতে শরীর দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারে।
  • স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাঃ সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে যেমন খাবারের আগে এবং বাথরুম ব্যবহারের পরে ভালোভাবে হাত ধোয়া।
  • তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণঃ জ্বরের সময় শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঠান্ডা পানির পট্টি ব্যবহার করা যেতে পারে।

টাইফয়েড জ্বর কতদিন থাকে

টাইফয়েড জ্বর সাধারণত চিকিৎসা ছাড়া ৩ থেকে ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। তবে সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসা নিলে লক্ষণগুলো অনেক দ্রুত (৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে) উন্নতি শুরু করে এবং পুরোপুরি সুস্থ হতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। পূর্বে চিকিৎসা ব্যবস্থা অনুন্নত থাকার কারণে এই জ্বরের কারণে অনেক সময় মৃত্যুও হয়েছে।

যখন কোন চিকিৎসা ব্যবস্থা ছিল না তখন এই রোগের ১ থেকে ২ সপ্তাহের মধ্যে লক্ষণগুলো ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হত। এরপর ২ থেকে ৩ সপ্তাহ পর্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর থাকতো। এরপর ৩ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে জ্বর এবং অন্যান্য লক্ষণগুলো ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে।

ছবি-২

চিকিৎসা নিলে সুস্থতার সময় অনেক কমে যায় এবং জটিলতা কম হয়। টাইফয়েড জ্বর সঠিকভাবে চিকিৎসা না করলে গুরুতর জটিলতা দেখা দিতে পারে, যেমন অন্ত্রের ছিদ্র বা রক্তপাত, যার জীবন হুমকির মধ্যে পড়তে পারে। তাই টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং চিকিৎসা সম্পন্ন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

শিশুর টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ

শিশুর টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের মতই, তবে কিছু পার্থক্য থাকতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে এইসব উপসর্গ আরও সূক্ষ্ম এবং কিছু সময়ে ভিন্ন হতে পারে। নিম্নে সেই লক্ষণগুলো উল্লেখ করা হলো -

  • উচ্চ জ্বরঃ শিশুর শরীরের তাপমাত্রা ১০৪-১০৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৩৯-৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) পর্যন্ত উঠতে পারে। জ্বর মাঝে মাঝে বেড়ে যেতে পারে এবং কিছু সময়ের জন্য কমতে পারে।
  • দুর্বলতা ও ক্লান্তিঃ শিশুরা সাধারণত খুব দুর্বল ও ক্লান্ত অনুভব করতে পারে তারা খেলাধুলা করতে বা স্বাভাবিক কার্যকলাপ করতে অনিচ্ছুক হতে পারে।
  • মাথাব্যথাঃ শিশুদের মাঝে মাঝে মাথা ব্যথা থাকতে পারে।
  • পেটের ব্যথা ও অস্বস্তিঃ শিশুদের পেটে ব্যথা, অস্বস্তি বা ফুলে যাওয়া অনুভূতি হতে পারে।
  • বমি ও ডায়রিয়াঃ কিছু শিশুদের বমি হতে পারে এবং ডায়রিয়া হতে পারে। তবে কিছু ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্যও দেখা দিতে পারে।
  • ক্ষুধামন্দা ও ওজন হ্রাসঃ টাইফয়েড জ্বরের ফলে শিশুদের ক্ষুধা কমে যেতে পারে এবং ওজন হ্রাস পেতে পারে।
  • শরীরের ফুসকুড়িঃ শিশুদের ত্বকে গোলাপি রঙের ছোট ছোট দাগ বা ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে, যা প্রায় এক সপ্তাহের মধ্যে অদৃশ্য হয়ে যায়।
  • খিটখিটে ভাবঃ শিশুদের মধ্যে খিটখিটে বা বিরক্তিভাব দেখা দিতে পারে।
  • ঠান্ডা লাগা ও ঘাম হওয়াঃ মাঝে মাঝে ঠান্ডা লাগা এবং অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে।
  • পানিশূন্যতাঃ ডায়রিয়া এবং বমির কারণে শিশুদের শরীরে পানিশূন্যতা হতে পারে।

শিশুদের টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সময়মতো চিকিৎসা না হলে টাইফয়েড জ্বর গুরুতর হতে পারে এবং অন্যান্য সার্থকতা জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। শিশুদের সঠিক যত্ন পর্যাপ্ত তরল পান করতে দিন এবং পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়াতে চেষ্টা করুন।

টাইফয়েড জ্বর হলে কি গোসল করা যায় জানুন

টাইফয়েড জ্বর হলে গোসল করা যেতে পারে, তবে কিছুটা সতর্কতা মেনে চলা উচিত। গোসল করা শরীরকে আরাম দিতে পারে এবং তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করতে পারে। গরম বা ঠান্ডা পানিতে গোসল করা এড়িয়ে চলুন। কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো, যা শরীরকে আরাম দেবে এবং হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তন এড়িয়ে চলবে।

গোসলের সময় খুব বেশি দীর্ঘ না হওয়াই উচিত। বেশি সময় ধরে গোসল করলে শরীরের তাপমাত্রা পরিবর্তিত হতে পারে যার শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। পরিষ্কার পানিতে গোসল করুন এবং পরিষ্কার তোয়ালে ব্যবহার করুন যাতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ না হয়। গোসলের পর পর্যাপ্ত পানি নিন এবং শরীরকে গরম রাখার চেষ্টা করুন। ভেজা চুল বা ভেজা কাপড় পড়ে না থাকাই ভালো।

যদি শরীর খুব দুর্বল থাকে বা কোন গুরুতর জ্বর থাকে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। চিকিৎসক কখন গোসল করা নিরাপদ তা আপনাকে জানাতে পারবেন। এছাড়াও টাইফয়েড জ্বর হলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত তাপমাত্রা মাপুন এবং প্রয়োজনে ঠান্ডা পানির পট্টি ব্যবহার করুন। যথাযথ বিশ্রাম এবং পুষ্টিকর খাদ্য ও পর্যাপ্ত পানি গ্রহণ করুন।

টাইফয়েড জ্বর কি ছোঁয়াচে জানুন

টাইফয়েড জ্বর ছোঁয়াচে হতে পারে, তবে এটি সরাসরি একজন থেকে আরেকজনের মাধ্যমে ছড়ায় না। এটি মূলত ফেকাল অরাল রুটের মাধ্যমে ছড়ায়, যা দূষিত খাদ্য বা পানির মাধ্যমে ছড়ায়। স্যালমোনেলা টাইফি ব্যাকটেরিয়া দূষিত খাবার বা পানির মাধ্যমে একজনের শরীরে প্রবেশ করে তারপর সংক্রমণ ঘটায়।

আক্রান্ত ব্যক্তির মল বা প্রসাবের মাধ্যমে খাদ্য ও পানির উৎস দূষিত হতে পারে এবং অন্যরা যখন এই দূষিত খাদ্য বা পানি গ্রহণ করে, তখন তাদের মধ্যে সংক্রমণ ঘটে। এছাড়াও আক্রান্ত ব্যক্তির সঠিকভাবে হাত না ধোঁয়া এবং তারপর খাদ্য প্রস্তুত করা বা পরিবেশন করে এবং অন্যদের সে খাবার খাওয়ার মাধ্যমে সংক্রমণ ঘটতে পারে।

অপরিষ্কার এবং নিরাপদ স্যানিটেশন ব্যবস্থা থাকার কারণে টাইফয়েড ব্যক্তিরা সহজেই ছড়াতে পারে। যেহেতু এই রোগ সরাসরি ছোঁয়াচে নয় সেহেতু টাইফয়েড জ্বরের রোগীকে কিছু বিষয়ে সতর্ক হতে হবে যেমন - পরিস্কার পানি পান করতে হবে, পরিষ্কার ও সঠিকভাবে রান্না বান্না করা খাদ্য গ্রহণ করতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে, সেমিটেশন ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে এবং প্রয়োজন ও সময়মতো টিকা গ্রহণ করতে হবে।

টাইফয়েড এর ক্ষতিকর দিক

টাইফয়েড এর যদি সঠিকভাবে চিকিৎসা না করা হয় তবে এটি বিভিন্ন গুরুতর জটিলতা ও ক্ষতিকর দিক সৃষ্টি করতে পারে। টাইফয়েড জ্বরের কিছু ক্ষতিকর দিক নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ

  • আন্ত্রিক পেরফোরেশন বা পেটের অন্ত্র ফুটো হওয়াঃ এটি সবচেয়ে গুরুতর জটিলতা। আন্ত্রিক প্রাচীর ক্ষতিগ্রস্ত হলে অন্ত্রে ফুটো হতে পারে, যা পেরিটোনাইসিস (পেটের অভ্যন্তরীণ প্রদাহ) সৃষ্টি হতে পারে। এটি জীবনঘাতী হতে পারে এবং জরুরি অস্ত্র পাচারের প্রয়োজন হয়।
  • অভ্যন্তরীণ রক্তপাতঃ টাইফয়েডের কারণে অন্ত্রের লাইনিং ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যা অভ্যন্তরীণ রক্তপাতের কারণ হতে পারে। এটি বিশেষ করে যদি জ্বর গুরুতর হয় বা সংক্রমণ দীর্ঘস্থায়ী হয়।
  • ব্যাকটেরিয়ার সঞ্চালনঃ টাইফয়েডের ব্যাকটেরিয়া রক্তে প্রবাহিত হয়ে অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যেমন - যকৃৎ, তলপেট, হার্ট বা মস্তিষ্কে সঞ্চালিত হতে পারে যারও জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
  • সেপটিসেমিয়াঃ টাইফয়েড ব্যাকটেরিয়া রক্তে প্রবাহিত হলে সেপটিসেমিয়া (রক্তবাহিত সংক্রমণ) সৃষ্টি হতে পারে, যা গুরুতর এবং জীবনসংহারী হতে পারে।
  • কিডনি, লিভার ও প্লীহা সমস্যাঃ দীর্ঘস্থায়ী টাইফয়েড সংক্রমণ কিডনি, লিভার ও প্লীহার উপর প্রভাব ফেলতে পারে এবং কিডনি সংকট বা অন্যান্য কিডনি সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
  • মস্তিষ্কের সমস্যাঃ খুব বিরল ক্ষেত্রে টাইফয়েডের ব্যাকটেরিয়া মস্তিষ্কে প্রবাহিত হতে পারে এবং এনসেফালাইটিস বা মেনিনজাইটেসের কারণ হতে পারে।
  • অন্যান্য সংক্রমণঃ টাইফয়েড জ্বর শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দিতে পারে, যা অন্যান্য সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  • হাড় ও গাঁটে সংক্রমণঃ দীর্ঘমেয়াদী টাইফয়েড জ্বরের ফলে হাড় ও গাঁটে সংক্রমণ হতে পারে, যা ব্যথা এবং অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।
  • ডিহাইড্রেশনঃ ডায়রিয়াবা উচ্চ জরের কারণে ডিহাইড্রেশন হতে পারে, যা চিকিৎসা না করলে মারাত্মক হতে পারে।
  • মায়োকার্ডাইটিসঃ টাইফয়েড জ্বরের ফলে হৃদপেশীর প্রদাহ (মায়োকার্ডাইটিস) হতে পারে, যার হৃদপিণ্ডের কার্যক্ষমতা কমে দিতে পারে। 

টাইফয়েড টেস্ট এর নাম

টাইফয়েড জ্বর নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়। সেজন্য আপনাকে প্রথমেই লক্ষণগুলো চিহ্নিত করার পরে একজন ভালো চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। তার পরামর্শ অনুযায়ী টাইফয়েড জ্বরের জন্য বিভিন্ন টেস্ট করতে হবে। টাইফয়েড জ্বরের জন্য সাধারণত যেসব টেস্ট করা প্রয়োজন তা নিম্নে দেওয়া হলো-

  • Widal টেস্টঃ এটি একটি সেরোলজিক্যাল পরীক্ষা যা রোগীর রক্তে স্যালমোনেলা টাইফি এবং স্যালমোনেলা প্যারাটাইফি ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে এন্টিবডি শনাক্ত করে।
  • Typhidot টেস্টঃ এই পরীক্ষা দ্রুত নির্ভরযোগ্য। এটি এবং এন্টিবডি শনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয়, যা সংক্রমনের প্রাথমিক এবং পরবর্তী পর্যায় নির্দেশ করে।
  • Blood Culture টেস্টঃ টাইফয়েড সংক্রমনের সুনির্দিষ্ট পরীক্ষার মধ্যে একটি। রোগের রক্তের নমুনা নিয়ে ব্যাকটেরিয়া কালচার করা হয়। এটি স্যালমোনেলা টাইফি ব্যাকটেরিয়া সনাক্ত করার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি।
  • Stool Culture টেস্টঃ রোগীর মল নমুনা নিয়ে ব্যাকটেরিয়া কালচার করা হয়। এটি সংক্রমনের দ্বিতীয় সপ্তাহে কার্যকর।
  • Bone Marrow Culture টেস্টঃ এটি সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা, বিশেষ করে যদি অন্য পরীক্ষায় সঠিক ফলাফল না পাওয়া যায়।
  • Polymerase Chain Reaction (PCR) টেস্টঃ এই পরীক্ষা স্যালমোনেলা টাইফি ব্যাকটেরিয়ার জিনগত উপাদান শনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয়। এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং নির্ভরযোগ্য।

টাইফয়েড জ্বরের ঔষধের নাম

টাইফয়েড জ্বরের ঔষধ বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ ব্যবহার হয়। চিকিৎসক রোগীর অবস্থার উপর ভিত্তি করে ওষুধ নির্ধারণ করেন। টাইফয়েড জ্বরের চিকিৎসায় সাধারণত ব্যবহৃত কিছু অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের নাম নিম্নে দেওয়া হলো -

  • Ciprofloxacin বা সিপ্রোফ্লক্সাসিনঃ এই গ্রুপের কয়েকটি ব্যবসায়িক নাম Ciprocin, Cipron, Cipro, Ciproxin ইত্যাদি। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে টাইফয়েড জ্বরের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
  • Azithromycin বা অ্যাজিথ্রোমাইসিনঃ এই গ্রুপের কয়েকটি ব্যবসায়িক নাম Azithrocin, Azithro, Azithromycin, Azithral ইত্যাদি। শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্কদের উভয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। যারা ফ্লোরোকুইনোলোন (Fluoroquinolone) গ্রহণ করতে পারেন না তাদের জন্য উপযোগী।
  • Cefixime বা সেফিক্সিমঃ এই গ্রুপের কয়েকটি ব্যবসায়িক নাম Cef-3, Suprax, Cefim, Zifi ইত্যাদি। এটি টাইফয়েড জ্বরের চিকিৎসা ব্যবহৃত তৃতীয় প্রজন্মের এই গ্রুপের সেফালোস্পোরিন (Cephalosporin) অ্যান্টিবায়োটিক।
  • Ceftriaxone বা সেফট্রিয়াক্সোনঃ এই গ্রুপের কয়েকটি ব্যবসায়িক নাম Rocephin, Ceftron, Ceftriax, C-Triax ইত্যাদি। গুরুতর টাইফয়েড সংক্রমণের ক্ষেত্রে ইনজেকশন এর মাধ্যমে প্রয়োগ করা হয়।
  • Amoxicillin বা এমোক্সিসিলিনঃ এই গ্রুপের কয়েকটি ব্যবসায়িক নাম Amoxil, Mox, Amoxy, Amopen ইত্যাদি। শিশু ও জনপ্রাপ্তবয়স্কদের এই ওষুধ গ্রহণ করতে পারেন।
  • Levofloxacin বা লেভোফ্লোক্সাসিনঃ এই গ্রুপের কয়েকটি ব্যবসায়িক নাম ইত্যাদি। এটি একটি অ্যান্টিবায়োটিক, যা টাইফয়েডের চিকিৎসায় কার্যকর হতে পারে।
  • Ampicillin বা অ্যাম্পিসিলিনঃ এই গ্রুপের কয়েকটি ব্যবসায়িক নাম ইত্যাদি। এটি একটি পেনিসিলিন শ্রেণীর অ্যান্টিবায়োটিক, যা টাইফয়েড চিকিৎসায় ব্যবহৃত হতে পারে।
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন ওষুধ গ্রহণ করবেন না। টাইফয়েড জ্বরের সঠিক চিকিৎসা নির্ভর করে রুগীর অবস্থা, সংক্রমণের মাত্রা এবং পূর্ববর্তী ওষুধের প্রতিক্রিয়ার উপর। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধের সঠিক ডোজ এবং সময়কাল মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ। এন্টিবায়োটিক কোর্স সম্পূর্ণ করতে হবে, এমনটি যদি উপসর্গগুলো আগে থেকে কমে যায়।

টাইফয়েড জ্বরের ঘরোয়া চিকিৎসা

টাইফয়েড জ্বরের জন্য প্রাথমিক এবং চিকিৎসকের নির্দেশিত চিকিৎসা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তবে, কিছু ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করে রোগীকে স্বস্তি দেওয়া যেতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে, ঘরোয়া চিকিৎসা কখনোই মূল চিকিৎসার বিকল্প নয় এবং ঘরোয়া চিকিৎসা প্রয়োগ করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। নিম্নে কিছু ঘরোয়া চিকিৎসা দেওয়া হলো-

  • হাইড্রেশন বা পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পানঃ প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। ডায়রিয়া বা ঘামানোর কারণে শরীর থেকে যেসব তরল হারিয়ে যায়, তা পুনরুদ্ধারের জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি। সেক্ষেত্রে নারিকেল পানি, ফলের রস, স্যুপ ইত্যাদি পান করা যেতে পারে।
  • পর্যাপ্ত বিশ্রামঃ টাইপার শরীরকে দুর্বল করে দেয়, তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রামের প্রয়োজন।
  • হালকা জাতীয় খাদ্যঃ হালকা ও সহজপাচ্য খাদ্য গ্রহণ করুন। যেমন চালের ভাত, ‍স্যুপ, পাকা কলা, টোস্ট ইত্যাদি। ভারী, মসলাদার বা তেলযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
  • গরম পানির সেঁকঃ শরীরের ব্যথা ও বেশি শিথিল করতে গরম পানির সেঁক বা গরম পানিতে ভেজানো তোয়ালে ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • আদা ও মধুঃ আদা ও মধুর মিশ্রণ টাইফয়েড জ্বরের উপসর্গ লাঘব করতে সহায়ক হতে পারে। আদায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যার রক্তকে বিশুদ্ধ করতে সাহায্য করে। এছাড়া কিডনি থেকে অযাচিত পদার্থ বের করে দিতেও সাহায্য কর ফলে শরীর পরিষ্কার হয়। এক চা চামচ আদার রস এবং এক চা চামচ মধু মিশিয়ে পান করা যেতে পারে।
  • তুলসী পাতাঃ তুলসী পাতার রস টাইফয়েড জ্বরের জন্য উপকারী হতে পারে। তুলসী পাতা গরম পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি পান করতে পারেন। এছাড়া অল্প মধু বা আদার রস বা গোলমরিচের গুড়ো দিয়ে তুলসী পাতা খাওয়া যেতে পারে। টাইফয়েডের ব্যাকটেরিয়া তাড়াতে খুব সাহায্য করতে পারে।
  • ধনিয়া বীজঃ ধনিয়া বীজ পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি ঠান্ডা করে পান করা যেতে পারে।
  • আপেল সিডার ভিনেগারঃ আপেল সিডার ভিনেগার পানি মিশিয়ে পান করা যেতে পারে। এটি হাইড্রেশন বজায় রাখতে সাহায্য করে।
  • কাঁচা রসুনঃ কাঁচা রসুনের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুন রয়েছে যা টাইফয়েডের জীবাণু ধ্বংস করতে সহায়ক হতে পারে।
  • মেথি বীজঃ মেথি বীজ পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেই পানি পান করুন। এটি জ্বর কমাতেও হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

টাইফয়েড পরবর্তী সমস্যা

টাইফয়েড জ্বর সঠিকভাবে চিকিৎসা না হলে বা সম্পূর্ণরূপে সুস্থ না হলে পরবর্তী সমস্যা হতে পারে। এই সমস্যাগুলো গুরুতর হতে পারে এবং জীবনহানির ঝুঁকি বাড়তে পারে। সেজন্য টাইফয়েড জ্বরের পরবর্তী সমস্যা মোকাবেলার জন্য নিয়মিত চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে। এখন জেনে নেওয়া যাক টাইফয়েড জ্বরের পরবর্তী উল্লেখযোগ্য সমস্যাগুলো -

  • অন্ত্রের ছিদ্রঃ টাইফয়েড জ্বরের কারণে অন্ত্রের প্রাচীর দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং ছিদ্র হতে পারে। এটি একটি গুরুতর অবস্থা এবং দ্রুত চিকিৎসা না করলে প্রাণঘাতী হতে পারে।
  • অন্ত্রের রক্তক্ষরণঃ অন্ত্রের রক্তক্ষরণ টাইফয়েড জ্বরের একটি জটিলতা। এটি হঠাৎ ঘটে এবং প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে পারে, যা রোগের জন্য বিপদজনক হতে পারে।
  • ডিলিরিয়ামঃ টাইফয়েড জ্বরের সময় বা পরে মানসিক বিভ্রান্তি, উত্তেজনা বা হ্যালোসিনেশন দেখা দিতে পারে।
  • মানসিক অবসাদঃ দীর্ঘমেয়াদী টাক হওয়ার জ্বরের পরে মানসিক অবসাদ দেখা দিতে পারে।
  • সেপসিসঃ টাইফয়েডের ব্যাকটেরিয়া রক্তপ্রবাহে ছড়িয়ে পড়লে সেপসিস হতে পারে, যা একটি জীবন হুমকিস্বরূপ সংক্রমণ।
  • পিত্তথলির সংক্রমণঃ টাইফয়েড জ্বরের পর পিত্তথলিতে সংক্রমণ হতে পারে, যা কোলেসিস্টাইটিস নামে পরিচিত।
  • দুর্বলতা এবং ক্লান্তিঃ টাইফয়েড জ্বরের পর অনেক রোগী দীর্ঘ সময় ধরে দুর্বলতা এবং ক্লান্তি অনুভব করতে পারে।
  • পুষ্টির অভাবঃ টাইফয়েড জ্বরের কারণে ক্ষুধামান্দা এবং ওজন হ্রাসের ফলে তীর অভাব দেখা দিতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
  • পুনরায় সংক্রমণঃ যদি টাইফয়েড জ্বর সম্পূর্ণভাবে নিরাময় না হয় এবং ব্যাকটেরিয়া যদি শরীরের থেকে যায় সেক্ষেত্রে তা আবার সংক্রমণ ঘটাতে পারে।

টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ ও করণীয় নিয়ে লেখকের মন্তব্য

টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ ও করণীয় পোস্টটি পড়ে আপনারা আশাকরি অনেক উপকৃত হবেন। আপনারা জেনেছেন স্যালমোনেলা টাইফি নামক ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবে এই টাইফয়েড জ্বর হয়ে থাকে। তবে এখানে উল্লেখ্য যে, এখানে শুধু জ্বর হয় না এছাড়াও আরো অনেক উপসর্গ দেখা দেয়। ফলে জ্বরের সঙ্গে সেগুলোর মোকাবেলাও করতে হয়।

সেজন্য ডাক্তারের সার্বক্ষণিক পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন এবং সাথে সাথে পুষ্টিকর খাবার এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ করতে হবে। ওষুধ সেবনের পাশাপাশি যদি আপনারা ঘরোয়া চিকিৎসা গ্রহণ করেন তাহলে টাইফয়েডের উপসর্গগুলো উপশম করতে সহায়ক হতে পারে। তবে এটি সব সময় মনে রাখবেন ঘরোয়া চিকিৎসা সাধারণ চিকিৎসার বিকল্প নয়।

ছবি-৩

এই প্রাকৃতিক প্রতিকারগুলো সুপারিশকিত ওষুধ এবং থেরাপি ছাড়াও ব্যবহার করা যেতে পারে। যদি আপনার রোগ নির্ণয় হয়, জ্বরবিকার আপনার পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া আরো আরামদায়ক করতে পারে। আপনার শরীরকে টাইফয়েড জ্বর কাটিয়ে ওঠার সর্বোত্তম সুযোগ দিতে বিশ্রাম, হাইড্রেশন এবং একটি সুষম খাদ্যকে অগ্রাধিকার দিন।

আমার এই পোস্টটিতে টাইফয়েড জ্বরের বিভিন্ন লক্ষণ বোঝার কিছু সহজ উপায় এবং এর থেকে আরোগ্য লাভের কিছু করণীয় উপায় সম্পর্কে আমি জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি জ্বর হতে টাইফয়েড জ্বর থেকে সুস্থ হতে আমার এই পোস্টটি আপনাদের অনেক কাজে লাগবে। আজ এ পর্যন্তই ভবিষ্যতে আরো কোন পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব সে পর্যন্ত সবাইকে ধন্যবাদ।


সবাই সুস্থ থাকবেন, ভালো থাকবেন এবং নিজের স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখবেন। সবাইকে ধন্যবাদ.....

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অজানা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url