OrdinaryITPostAd

তুলসী পাতার অজানা ১০টি গোপন গুণাগুণ

তুলসী পাতার অজানা গোপন গুণাগুণ সম্পর্কে আপনি জানতে চান? আপনার বাসায় হয়তো তুলসী গাছ আছে আর মানুষের মুখেই শুধু শুনছেন যে তুলসী পাতার বহুগুন আছে। কিন্তু কি কি গোপন গুণাগুণ রয়েছে তা সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা নেই। 

ছবি-১

তাহলে অবশ্যই আপনাকে আমার এই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত খুব ভালোভাবে মনোযোগ সহকার পড়তে হবে। পড়া শেষে হয়ত আপনি তুলসী পাতাকে নিয়ে যে চিন্তা তা দূর হতে পারে। আপনি জানেন কিনা তুলসী গাছকে অনেক সময় ”গাছড়ার রাণী” বলা হয়।

এই পোস্টে যা যা থাকছেঃ তুলসী পাতার অজানা গোপন গুণাগুণ

তুলসী পাতার অজানা ইতিহাস 

আপনি হয়তো তুলসী পাতার ইতিহাস সম্পর্কে জানেন না। এই তুলসী গাছকে অনেক সময় ”গাছড়ার রাণী” অথবা “জীবনের স্পর্শমণি” বলে ডাকা হয়। সাধারণত অন্যান্য গাছের তুলনায় এই গাছের গুণাগুণ অনেক বেশি তাই একে গাছড়ার রাণী এবং এই গাছের সাহায্যে জীবন রক্ষা করা সম্ভব তাই একে জীবনের স্পর্শমণি বলে ডাকা হয়ে থাকে। 

আদিকাল থেকে ভারতের তুলসী গাছ লাগানো হয়ে থাকে। এছাড়াও এই গাছটি মধ্য আকিকা থেকে দক্ষিণ পূর্বে এশিয়ার গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলেও পাওয়া যায়। হিন্দুরা এই গাছটিকে পবিত্র বলে মনে করে তাই তারা তাদের দৈনন্দিন ধর্মীয় কাজে এই গাছটিকে ব্যবহার করে থাকে। 

প্রত্যেক বাসাতেই এই গাছটি দেখতে পাওয়া যায়। রান্না থেকে শুরু করে বিভিন্ন ঔষধী কাজে এই গাছটি ব্যবহার করা হয়। প্রাচীনকালে তুলসীকে শুদ্ধতার প্রতীক হিসাবে ধরা হত। বিশ্বাস করা হয় যে তুলসী গাছের সামনে গিয়ে এর গন্ধ নিলে অনেক সময় অনেক ধরনের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

এই গাছ দিয়ে বহুবিধি রোগ বালাই ভালো হয় যা পরবর্তীতে আলোচনা করা হয়েছে। পরিবেশবিদ ও বৈজ্ঞানিকরা তাজমহলকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য পাশে প্রায় ১০ লাখ তুলসী গাছ লাগিয়েছেন।

তুলসী পাতার  অজানা পুষ্টিগুণ

তুলসী পাতার  অজানা পুষ্টিগুণ জনতে পোস্টের এই অংশটি খুব ভালভাবে পড়তে হবে। তুলসী গাছে প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ বস্তু, খাদ্যগত ফাইবার, ফ্লাভোনয়েড এবং বিবিধ জৈব যৌগ রয়েছে। আসুন আমরা জেনে নেই আর কি কি পুষ্টিগুণ আছে (১০০গ্রাম তুলসীর মধ্যে)

  • জল - ৯২.০৬ গ্রাম
  • শক্তি - ২৩ কিলো ক্যাল
  • প্রোটিন - ৩.১৫ গ্রাম
  • চর্বি - ০.৬৪ গ্রাম
  • কার্বোহােইড্রেট - ২.৬৫ গ্রাম
  • ফাইবার - ১.৬ গ্রাম
  • চিনি - ০.৩০ গ্রাম
  • ক্যালসিয়াম - ১৭৭ মিলি গ্রাম
  • লোহা - ৩.১৭ মিলি গ্রাম
  • ম্যাগনেসিয়াম - ৬৪ মিলি গ্রাম
  • ফসফরাস - ৫৬ মিলি গ্রাম
  • পটাসিয়াম - ২৯৫ মিলি গ্রাম
  • সোডিয়াম - ৪ মিলি গ্রাম
  • জিঙ্ক ০.৮১ মিলি গ্রাম
  • ভিটামিন এ - ২৬৪ মিলি গ্রাম
  • ভিটামিন বি-১ - ০.০৩৪ মিলি গ্রাম
  • ভিটামিন বি-২ - ০.০৭৬ মিলি গ্রাম
  • ভিটামিন বি-৩ - ০.৯০২ মিলি গ্রাম
  • ভিটামিন বি-৬ - ০.১৫৫ মিলি গ্রাম
  • ভিটামিন বি-৯ - ৬৮ মাইক্রো গ্রাম
  • ভিটামিন সি - ১৮ মাইক্রো গ্রাম
  • ভিটামিন ই - ০.৮০ মাইক্রো গ্রাম
  • ভিটামিন কে - ৪১৪.৮ মাইক্রো গ্রাম

ক্যান্সার রোগীদের জন্য তুলসী পাতার অজানা গোপন গুণাগুণ

আপনারা নিশ্চয় জানেন ক্যান্সার হলো শরীরে কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। বর্তমান সময়ে ক্যান্সার  চিকিৎসা পদ্ধতিতে প্রচুর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ায় সারা বিশ্বে ব্যাপক গবেষণা হচ্ছে এবং এই চিকিৎসায় প্রাকৃতিক বিকল্পও খোঁজা হচ্ছে।

এই প্রবণতা কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন গবেষক তাদের গবেষণায় তুলসীকে ক্যান্সার বিরোধী বৈশিষ্ট্যের জন্য সংযুক্ত করে। একটি প্রাক-ক্লিনিক্যাল গবেষণায় তুলসী এবং নিমের পাতার নির্যসকে ব্যবহার করা হয়েছিল। এই গবেষণাটি প্রদর্শক করে যে তুলসীর নির্যাস পাকস্থলী ক্যান্সার প্রতিরোধে করতে কার্যকর ভুমিকা পালন করে।

যার ফলে দেখা গেছে যে, কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে। আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে তুলসীতে আরসলিক এবং ওলিয়ানলিক এ্যাসিড রয়েছে যার প্রচুর ক্যান্সার বিরোধী ক্রিয়া আছে। 

তুলসীর একটি বিকিরণের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে সুরক্ষা দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে যা স্বাস্থ্যবান কোষগুলোকে বিতরণের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে রক্ষা করে। তাহলে আপনি দেখতে পাচ্ছেন প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য প্রদাহ প্রতিরোধ করে যা ক্যান্সারের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে তুলসী পাতার অজানা গোপন গুণাগুণ

ফ্রি র‌্যডিক্যাল হল অস্থিতিশীল অনু যা সবল কোষের ক্ষতি করে এবং ফলত ক্যান্সারের মতো রোগ এবং কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা দেখা দেয়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হলো প্রাকৃতিক উপাদান যা ফ্রি র‌্যাডিক্যাল থেকে হওয়া ক্ষয় প্রতিরোধ করে। তাই ফ্রি র‌্যাডিক্যাল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টর মধ্যে একটা ভারসাম্য বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এই দুটির মধ্যে অমিলের কারণে অক্সিডেটিভ চাপ বাড়ে। প্রচুর পরিমানে গবেষণা দেখা গেছে যে, তুলসীর অক্সিডেটিভ চাপ ক্ষয় রোধের ক্ষমতা রয়েছে। এর পেছনে মূল কারণ হচ্ছে তুলসীতে আছে উচ্চ মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

একটি পশু ভিত্তিক গবেষণা করে দেখা গেছে একটি ভেষজে পাউডারে (যার প্রধান উপাদান তুলসী) প্রচুর পরিমাণে ক্যাটালেস এবং গলুথাথিওন ট্রান্সফেরেসরের মত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে।

চুল পড়া রোধে তুলসী পাতার অজানা গোপন গুণাগুণ

চুল পড়া রোধে তুলসী পাতার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। মানুষের বয়স যত বাড়ে তত তারা বিভিনান সমস্যার সম্মুখীন হন। যা শুধুমাত্র তাদের ত্বক নিয়েই নয়, তাদের চুল নিয়েও হতে পারে। চুল পেকে যাওয়া, চুল পড়া, চুল পাতলা হয়ে যাওয়ার এবং টাক পড়ে যাওয়া হল সাধারণ সমস্যা যা মানুষ বয়স বাড়ার সাথে সাথে সম্মুখিন হয়।

চুলের সমস্যার সবচেয়ে সাধারণ কারণগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো চাপ, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, বংশগত সমস্যা এবং কিছু ধরণের ওষুধের ব্যবহার। তুলসী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের চুলপাকা কমিয়ে দেয় এবং ক্ষতিকর ইয়ুভি আলো থেকে হওয়া ক্ষয়কে কমিয়ে দিতে দেখা গেছে।

পুরুষ আথবা মহিলা উভয়েরই অতিরিক্ত চুল পড়া এবং টাক হয়ে যাওয়া একটি গুরুতর সমস্যা।একটি গবেষণা দেখা গেছে যে, তুলসীর মূলের সংস্কৃতি সেই এনজাইমের ক্রিয়া প্রতিরোধ করে যেটি চুল পড়ার জন্য দায়ী। এই মূলের সংস্কৃতি নতুন করে চুল গজানোর ক্ষেত্রেও সাহায্য করে। মাত্র দুই মাস ব্যবহারে শতকরা ৩১ ভাগ চুল পড়া কমে।

ত্বকের জন্য তুলসী পাতার অজানা গোপন গুণাগুণ

বর্তমান সময়ে পুরুষ এবং মহিলা উভয়েই তাদের ত্বক নিয়ে খুবই চিন্তিত। সবার মাথায় শুধু একটি চিন্তা ঘুরেফিরে আসে কিভাবে ত্বককে আরো মসৃণ এবং সুন্দর করা যায়। সেক্ষেত্রে আপনি আপনার ত্বকের পরিচর্যায় তুলসীকে কাজে লাগাতে পারেন। তুলসী আপনার জন্য আশীর্বাদ স্বরুপ হতে পারে।

সাধারন বা প্রাথমিক চিকিৎসায় তুলসী পাতার দ্বারা ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা নিরাময় করা সম্ভব। এই তুলসীকে নিয়ে প্রচুর গবেষণা করা হয়েছে, যেখানে সুস্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হয়েছে যে, তুলসী চর্মরোগ, সোরিয়াসিস, কুষ্ঠের মত বিভিন্ন ত্বকের সমস্যা থেকে রক্ষা করার সম্ভবতা আছে।

তুলসী পাতার রসে ছত্রাক বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তাই খোলা ঘায়ের উপর লাগালে সেটা একটি দুর্দান্ত অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে।। তুলসীর পাতা থেকে তৈরি করা পেস্ট ত্বকের উপরে লাগালে তা পোকামাকড় কামড় থেকে হওয়া ক্ষতিকে প্রতিরোধ করতে পারে। তুলসীতে আরর্সলিক এ্যাসিড আছে যা বলিরেখা প্রতিরোধ করে ত্বককে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে, ক্ষত সারায় তাড়াতাড়ি এবং ত্বকের ক্যান্সার থেকে রক্ষা করে।

আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, তুলসির পাতা আউরিয়াসের বিরুদ্ধে কার্যকর ভুমিকা পালন করে যা ত্বকের সংক্রমণের জন্য প্রধানত দায়ী। তুলসীতে সাধারনত ক্যাম্ফর, ইউক্যালিপটল, ইউজেনল এবং বিটা-ক্যারোফিলিন থাকে তাই ইহা জীবাণু বিরোধী ক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে থাকে।

দাঁত ও মাড়ির জন্য তুলসী পাতার অজানা গোপন গুণাগুণ

আমার মত আপনারও হয়ত একটি প্রবাদ শুনেছেন যে দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম  কেউ বোঝে না। এই দাঁত ও মাড়ির ক্ষেত্রে তুলসী পাতার অজানা অনেক গুণাগুণ রয়েছে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, তুলসীর কয়েকটা পাতা চিবিয়ে খেলে তা দাঁতের স্বাস্থ্যবিধি ভালো রাখে।

ছবি-২

তুলসীতে স্ট্রেপটোকোকস মিউটান্স নামক এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া আছে যা দাঁতের ক্ষয় রোধে কার্যকর ভুমিকা রাখে। এই ব্যাকটেরিয়া থাকার পেছনে প্রধান করাণ হচ্ছে তুলসী গাছে ক্যারাকল, তেতপিন এবং সেসকুইতেরপিন বি-ক্যারফিলিনের উপস্থিতি।

তুলসীতে থাকা ইউজিনল এটিকে একটি ভালো বেদনানাশক হিসেবে পরিচিতি দান করে যা দাঁতের ব্যথা কমায়। রোদে শুকনো তুলসী পাতাকে পাউডার বানিয়ে তা দাঁতের ব্রাশ কারার কাজে ব্যবহার করা যায়। জিঞ্জিভাইটিস খুবই সাধারণ একটি মাড়ির সমস্যা যার কারণে মাড়ি ফুলে যায়। তুলসীর পাউডার দিয়ে মাড়ি মালিশ করলে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

পাকতন্ত্রজনিত রোগের জন্য তুলসী পাতার অজানা গোপন গুণাগুণ

বিশ্বে এমন মানুষ খুব কম পাওয়া যাবে যারা সমস্ত জীবনে একবারও পাকতন্ত্রজনিত সমস্যায় পরেনি। তুলসী পাতা এই পাকতন্ত্রজনিত রোগের ক্ষেত্রে বিশেষ ভুমিকা রাখে। পাকতন্ত্রজনিত রোগের মধ্যে পরে বিরক্তিজনক পেটের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পায়ুর চিড়। এর মধ্যে কিছু রোগ দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং তা মলাশয়ের ক্যান্সারের মত জটিল সমস্যায় রূপান্তরিত হতে পারে।

এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, তুলসী পাতায় পাকতন্ত্রজনিত রোগের চিকিৎসার সম্ভাব্যতা রয়েছে। তুলসী থেকে তৈরি পাচন এই রোগ তাড়াতাড়ি সারাই বলে শোনা যায়। ফলে রোগীর খিদে বাড়ায়। তুলসীর রেচকের বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে এবং পয়ঃপ্রণালী নিয়মিত রাখে।

তুলসী পাতার রস ডিসেন্ট্রি এবং পরিপাক নালীর প্রদাহ (ডিসপেপসিয়া) রোগকে দ্রুত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। একটি প্রাক-ক্লিনিক্যাল গবেষণায় দেখা গেছে যে, তুলসীর সেবনে অম্বল, গ্যাস্ট্রিক ও আলসারের মত দৈনন্দিন সমস্যা কমে।

ক্লান্তি দূরীকরনের জন্য তুলসী পাতার অজানা গোপন গুণাগুণ

জীবন মানেই কাজ আর কাজ মানেই ক্লান্তি থাকবেই। এই ক্লান্তি দূর করার জন্য আপনি তুলসী পাতাকে ব্যবহার করতে পারেন। কারণ এই পাতার রসে এমন কিছু বিশেষ উপাদান রয়েছে যা আপনার ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করবে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে,  তুলসী শারীরিক, মানসিক, রাসায়নিকের পাশাপাশি বিপাকীয় চাপের বিরুদ্ধেও কার্যকর ভুমিকা পালন করে।

একটি প্রাক-ক্লিনিক্যাল গবেষণা করা হয়েছিল তুলসির ক্লান্তি দূরকরণের সক্ষমতা যাচাই করতে। সেই গবেষণায় দেখা গেল যে, রসের মধ্যকার করটিসল শরীরের ক্লান্তি উৎপন্নকারী হরমোনকে বেড়ে উঠতে প্রতিরোধ সৃষ্টি করে। গবেষণায় আরো পওয়া যায় যে, তুলসীতে থাকা আরসলিক এ্যাসিডও এই ধরনের প্রতিরোধ সৃষ্টি করার জন্য ভুমিকা পালন করে।

চোখের যত্নে তুলসী পাতার অজানা গোপন গুণাগুণ

চোখের যত্নে তুলসী পাতার অনেক গুণাগুণ রয়েছে। চোখ হলো মানুষের দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ গুলোর মধ্যে একটি। আপনারা জানেন বয়স যত বাড়তে থাকে চোখের দৃষ্টিশক্তি তত দুর্বল হতে থাকে এবং চোখের রোগ হওয়ার সম্ভাবনা তীব্রভাবে বৃদ্ধি পায়। চোখের কয়েকটি সাধারণ রোগগুলো হলো বয়সজনিত ম্যাকুলার ক্ষয়, ছানি এবং গ্লুকোমা (চোখের প্রেসার বেড়ে যাওয়া)। 

আয়ুর্বেদ বিদ্যায় সবসময়ই তুলসীকে চোখের ওষুধের জন্য মূল উপাদান হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। সেই বিদ্যা অনুযায়ী তুলসী পাতার নির্যাস যখন চোখের ড্রপ হিসেবে ব্যবহার করা হয় তখন গ্লুকোমা, ছানি এবং অঞ্জনির মত কষ্টকর চোখের সমস্যা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

কানের ব্যথায় তুলসী পাতার অজানা গোপন গুণাগুণ

কানের ব্যথার জন্য তুলসী পাতাকে ব্যবহার করা যেতে পারে। বিভিন্ন প্রকার প্রদাহের অথবা কোন ক্ষত অথবা কোন সংক্রমণের কারণে কানে ব্যথা হতে পারে। বিভিন্ন গবেষণা প্রমান করে যে, তুলসী কানের ব্যথা এবং সংক্রমণ কমাতে কার্যকর ভুমিকা পালন করে থাকে। তুলসী পাতা এবং টাটকা রসুনের রস থেকে তৈরি করা তুলসী তেল ব্যবহার করা যেতে পারে কানের ব্যথা কমাতে।

প্রচন্ড মাত্রার ওটাইটিস মিডিয়া হলো একটি বেদনাদায়ক অবস্থা যা কানে হ্যামোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা নামক একটি ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত হয়ে থাকে। একটি প্রাক-ক্লিনিক্যাল গবেষণায় দেখা গেছে যে, তুলসীর তেল এই জীবাণু বিরোধী ক্রিয়ায় যথেষ্ট ও কার্যকর ভুমিকা রাখে। গবেষণাটি প্রমান করে যে, তুলসী তেল কানে দিলে এই রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব।

তুলসী পাতার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

আপনারা এতক্ষন জানলেন তুলসীর অসংখ্য গুনাবলীর কথা। এছাড়াও আরো অনেক গুণাগুণ আছে যা হয়ত পরের পোস্টে তুলে ধরার চেষ্টা করব। এর অনেক গুণাগুণ আছে বিধায় একে বহুগুণী গাছ বলা হয়ে থাকে। এখন আসুন জেন নেই এই তুলসী পাতার কয়েকটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ

  • অতিরিক্ত পরিমাণে তুলসী সেবন গর্ভবতী মহিলা (মা ও বাচ্চা) উভয়ই দীর্ঘমেয়াদী জটিলতার সম্মুখীন হতে পারেন। তুলসী জরায়ু সংকোচন করার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই গর্ভবতী মহিলাদের তুলসীর সেবন করার আগে ডাক্তারি পরামর্শ অবশ্যই নেওয়া উচিত।
  • প্রাক-ক্লিনিক্যাল গবেষণায় দেখা গেছে যে, তুলসী শারীরিক উত্তেজনার মাত্রা কমায়। যেসব মহিলারা গর্ভধারণের চেষ্টা করছেন বা যারা বাচ্চাদের বুকের দুধ খাওয়ান, তাদের তুলসীর সেবন এড়িয়ে চলা উচিত। তুলসীর নিয়মিত সেবক পুরুষদের মধ্যেও উত্তেজনা কমায় এমনকি শুক্রাণুর পরিমান কমে যায় যা বাচ্চা নেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করে।
  • ইউজিনল হলো তুলসীতে একটি শক্তিশালী যৌগ। এর মধ্যে প্রদাহ বিরোধী, জীবাণু বিরোধী এবং অ্যান্টিসেপ্টিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তারপরও ইউজিনল অপরিমিত সেবনে অগভীর শ্বাস, মুখ এবং গলার প্রদাহ, বমিভাব, দ্রুত হৃদস্পন্দন, হৃদরোগ এবং ঝিমুনির কারণ হতে পারে।

তুলসী পাতার অজানা গোপন গুণাগুণ সম্পর্কে লেখকের মতামত

তুলসী পাতার অজানা গোপন গুনাগুন পোস্টে আমি আপনাদের জানানোর চেষ্ট করেছি বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে তুলসী পাতার কার্যকারী ভুমিকার কথা। আপনার জেনেছেন তুলসী হলো জীবনের একটি স্পর্শমনি যার প্রচুর স্বস্থ্যপকারিতা রয়েছে। এই পোস্টে যেসব রোগ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে তাছাড়াও দৈনন্দিন বিভিন্ন ছোট ছোট রোগে এর কার্যকারিতা ব্যপক।

ইহা ব্যাকটেরিয়া বিরোধী, জীবানু বিরোধী এবং ছত্রাক বিরোধী বৈশিষ্ট্য পদর্শন করে এবং প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে রয়েছে। তবুও গর্ভবতী মহিলাদের এবং যেসব মহিলারা গর্ভধারণ করতে চাইছেন তাদের তুলসী এড়িয়ে চলা উচিত। তাই তুলসী সেবনের আগে গর্ভবতী মহিলাদের অবশ্যই ডাক্টরের পরামর্শ নিতে হবে।

ছবি-৩

ইহার অতিমাত্রার সেবনে পুরুষদের মধ্যে শুক্রানুর পরিমান কমিয়ে দেয়। তাই পুরুষদের তুলসীকে পরিমান মত সেবন করতে হবে যা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো হবে। আপনার যদি কোন সমস্যা থেকে থাকে তাহলে এই পোস্টের মূল উপাদান তুলসী পাতা পরিমান মত সেবন করুন দেখবেন সমাধান অবশ্যই পাবেন।

ভবিষ্যতে আরোও বিস্তারিত পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হব। সেই পর্যন্ত সবাইকে ধন্যবাদ। সুস্থ্য ও ভাল থাকবেন........ সবসময় হাসিখুসি থাকার চেষ্টা করবেন......

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অজানা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url