OrdinaryITPostAd

ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসার সেরা আইডিয়া ১০টি




ফুতপাতে লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে আপনি কি চিন্তিত? আপনি হয়তো ভাবছেন ফুটপাতে কোন ব্যবসা করবেন এবং তা কিভাবে করবেন? আপনার সব চিন্তার সমাধান নিয়ে আমি আপনার কাছে হাজির এই পোস্ট নিয়ে। 
ছবি-১
সেজন্য আপনাকে একটু সময় নিয়ে আমার এই পোস্টটি শুরু হতে শেষ পর্যন্ত খুব মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। এর মাধ্যমে হযত আপনি আপনার পছন্দের আইডিয়াটি পেয়ে যাবেন এবং চিন্তা মুক্ত হবেন।

এই পোস্টে যা যা থাকছেঃ ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসার সেরা আইডিয়া ১০টি

ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসা

ছোটবেলা থেকেই আপনি যদি নিজেকে একজন বড় ব্যবসায়ী হিসেবে স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু বড় হওয়ার পর দেখলেন আপনার কাছে তেমন কোন মূলধন নেই বড় ব্যবসা শুরু করার মত। তখন আপনাকে অবশ্যই ছোটখাটো ব্যবসা দিয়ে শুরু করতে হবে। সেক্ষেত্রে ফুটপাতের অল্প পুজির ব্যবসা হতে পারে আপনার প্রধান লক্ষ্য।

ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসাকে অনেকে ছোট মনে করে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কোন ব্যবসা ছোট নয় বরং যারা এই সকল ব্যবসাকে নিয়ে সমালোচনা করে তাদের মনমানসিকতা ছোট। আপনি যদি বড় উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ফুটপাতে ব্যবসা শুরু করেন তাহলে অবশ্যই আপনি ভবিষ্যতে বড় একটি কোম্পানির মালিক হতে পারেন।

এরকম অসংখ্য উদাহরণ আপনারা নিজেরাও আপনাদের চারপাশে দেখতে পাবেন। তবে তার জন্য আপনাকে ব্যবসার কিছু নিয়ম-কানুন আছে তা মেনে চলতে হবে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সব সময় সততার সাথে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে। আপনার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপদান দিতে এই পোস্টে যেসব আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে তার যে কোন একটি আইডিয়া বেছে নিয়ে শুরু করতে পারেন।

বর্তমান সময়ে ফুটপাতে ব্যবসার আধিপত্য বেড়েই চলেছে। অনেকেই ফুটপাতের ব্যবসাকে নিয়ে কি মন্তব্য করল তার দিকে কর্ণপাত না করে ব্যবসার লাভের দিকে তাকিয়ে আপনি এই দিকে এগিয়ে আসতে পারেন। তাহলে আপনি আপনার লক্ষ্যে পৌছাতে পারবেন এই ব্যবসার কারণে।

আরোও পড়ুনঃ মহিলাদের ঘরে বসে ইনকাম মাসে ২০ হাজারের উপরে


ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসার সুবিধা

আপনি যদি ফুটপাতে ব্যবসা করতে চান তাহলে অনেক সুবিধা পাবেন। অল্প সামান্য পুজি নিয়ে এই ব্যবসা শুরু পারবেন এবং এই সকল ব্যবসায় লস হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম থাকে। বিশেষ করে জনসমাগম এলাকায় যদি আপনি এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন তাহলে দ্রুত আপনার ব্যবসা প্রসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অসুন জেনে নেই আর কি কি সুবিধা আছেঃ
  • সাধারণত ফুটপাতে ব্যবসা করতে ট্রেড লাইসেন্স বা অন্যান্য বৈধ কাগজপত্রের প্রয়োজন হয় না ফলে ঝামেলাও কমে যায়।
  • অতি অল্প মূলধনে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
  • লস হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম থাকে।
  • নিজের স্বাধীনতা অনুযায়ী ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন।
  • ব্যবসা পরিচালনার জন্য আলাদা কোনো অফিস বা দোকানের প্রয়োজন হয় না।
  • আপনি চাইলে ভ্যান গাড়ি নিয়ে ফুটপাতে নিদৃষ্ট প্রডাক্ট বিক্রি করতে পারেন।
  • স্বল্প পরিশ্রমে আপনি এই ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন।
  • এই ব্যবসা পরিচালনার জন্য অধীক জ্ঞানের প্রয়োজন হয় না।
  • ফুটপাতে ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য অতিরিক্ত কর্মচারীর প্রয়োজন নেই।
  • ফুটপাতে ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে বাড়তি খরচ খুবই কম।

ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসায় বাচ্চাদের খেলনা বিক্রি করা

ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসায় বাচ্চাদের খেলনা বিক্রি করা খুব ভালো একটি আইডিয়া হতে পারে। ছোট বাচ্চারা যখন বাহিরে যায় তখন বিভিন্ন সময় তারা খেলনার জন্য বায়না করে এমনকি নাছরবান্দা হয়ে পরে। সেসময় আপনি কাস্টমার দেখে ইচ্ছামত দাম নিয়ে খেলনাটি বিক্রয় করতে পরেন ফলে আপনার লাভও বেশি হবে। 

বর্তমানে অনেকেই এই ব্যবসাটি করছে। তবে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে কোন জাতীয় খেলনার উপর বাচ্চাদের অগ্রহটা বেশি থাকে। সেসব খেলনা অনেকগুলো নিয়ে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে অথবা হেঁটে হেঁটে বিক্রি করতে পারেন। সাধারণত ফুটপাতে খেলনা বিক্রির ক্ষেত্রে আপনাকে মিডিয়াম দামের খেলনা দোকানে রাখতে হবে।

কোন খেলনাগুলো আকর্ষণীয় ও আনন্দদায়ক তা আপনাকে জানতে হবে। যেসব জায়গায় বাচ্চাদের সমাগম বেশি সেসব স্থানে এই ব্যবসার জন্য স্থান নির্বাচন করতে হবে। আসুন জেনে নেই সাধারণত কোন কোন জায়গায় এই ব্যবসা করা সম্ভবঃ

  • মার্কেটের সামনে ফুটপাতে 
  • কোন কিন্ডারগার্ডেন স্কুলের সামনে ফুটপাতে
  • পার্কের সামনে ফুটপাতে
  • শিশু হাসপাতাল অথবা ডাক্টরের চেম্বারের সামনে ফুটপাতে
  • বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরাঘুরির জায়গায় ফুটপাতে ইত্যাদি।

অল্প কিছু টাকা থাকলেই এই ব্যবসা শুরু করা সম্ভব। সাধারণত ফুটপাতে বাচ্চাদের খেলনা বিক্রির ব্যবসা করতে আপনাকে শুরুতেই দুই থেকে তিন হাজার টাকা মূলধন প্রয়োজন হতে পারে। আস্তে আস্তে অভিজ্ঞতা বাড়লে মূলধনের পরিমান বাড়াতে পারেন।

আরোও পড়ুনঃ খালি পেটে কাাঁচা রসুন খাওয়ার নিয়ম-উপকারিতা ও অপকারিতা 


ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসায় চা ও কফি বিক্রি করা

এমন অনেক মানুষ আছে যারা এই আইডিয়াটি এড়িয়ে যেতে চাইবেন। সবারই একটাই কথা মনে বারবার আসতেই পারে তা হলো “শেষ পর্যন্ত রাস্তায় চা বিক্রি করব”। তবে মনে রাখবেন এই আইডিয়াটিতে গ্রাহক প্রচুর হয় এবং লাভও খুব বেশি হয়। এই ব্যবসার আইডিয়াটি সাধারণ চা বা কফি বিক্রির দোকান নিয়ে নয় একটু বিশেষ ধরনের চা বা কফিকে নিয়ে।

আপনারা হয়ত খেয়াল করবেন শহরের বিভিন্ন মোড়ে বিভিন্ন ধরনের কয়েকটি চায়ের দোকান দেখা যায় যেখানে উদ্যোক্তারা থাকে তরুণ। এরা নরমাল চা বিক্রির পাশাপাশি বিশেষ ধরনের চা বিক্রি করে যেমন ইরানি চা, তন্দুরি চা, সরের চা, মাল্টা চা, মরিচা চা, তেঁতুল চায় ইত্যাদি। 

ছবি-২
এসব বিশেষ ধরনের চায়ের বেশ চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে তরুণদের পছন্দে চা এগুলো। দেশের কোন কোন স্থানে দিনে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত চা বিক্রি করে থাকে। এই চা-কফির দোকানে কাস্টমারদের জন্য বসার সিট দেওয়া লাগে না। কাস্টমাররা দাঁড়িয়ে চা খায়। তাই এর জন্য আপনার বেশি জায়গার প্রয়োজন হবে না। আসুন জেনে নেই এই ব্যবসা করতে কি কি প্রয়োজনঃ

  • প্রথমে আপনাকে বিভিন্ন ধরনের চা বানানো শিখতে হবে। এরজন্য কিছুটা সময় লাগবে কারণ কাঁচা হাতে চা সব সময় মজা হয় না। যখন আপনি ভালোভাবে চা বানাতে পারবেন তখন ব্যবসায় নেমে পড়বেন।
  • একটি ভাল লোকালয়যুক্ত স্থান নির্বাচন করতে হবে। স্থান নির্বাচনটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এর উপরেই বেশিরভাগ নির্ভর করছে আপনার সফলতা। এই স্থান নির্বাচন সাধারণত মেইনরোডের পাশে, কোন মোড়ের কাছে অথবা কোন মার্কেটের পাশে হলে ভাল হবে।
  • এরপর নিদৃষ্ট্ স্থানে ব্যবসা করার জন্য কার সাথে কথা বলতে হবে তা পাশের দোকানদার হতে জেনে তার সাথে কথা বলতে হবে।
  • একটি ভ্রাম্যবান দোকান বানাতে হবে। ইহা হতে পারে একটি ভ্যান গাড়ি অথবা একটি কভার ভ্যান।
  • এরপর এই দোকানের ভেতর চুলা, সিলিন্ডার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখতে হবে।
  • আপনি ইচ্ছা করলে অনলাইনের মাধ্যমে ভালো মানের চা পাতা এবং কফি ক্রয় করতে পারেন। এছাড়া বিভিন্ন ডেলিভারি ম্যান আছে দৈনিক দিনের শুরুতেই আপনার প্রয়োজনীয় চা পাতা এবং কফি দিয়ে যাবে।

ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসায় ঠান্ডা ড্রিংকস বিক্রি করা

ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসা চা ও কফির পাশাপাশি আপনি ঠান্ডা জাতীয় পানীয় বিক্রির ব্যবসা করতে পারেন। এছাড়া আপনি শুধুমাত্র ঠান্ডা জাতীয় পানীয়, ড্রিংকস ও আইসক্রিম বিক্রয় করতে পারেন। বিশ্বে যেভাবে গরমের পরিমান বেড়েই চলেছে সেভাবে আপানিও আপনার এই প্লাটফর্মে ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

বিশেষকরে গরমের সময় এইসব ঠান্ডা জাতীয় পণ্যের চাহিদা প্রচুর থাকে। তাই এই সময়টাকে আপনি কজে লাগিয়ে লাভবান হতে পারেন। এজন্য আপনাকে প্রথমেই সঠিক জায়গা নির্ধারণ করতে হবে। সে স্থান গুলো হতে পারে নিম্নরুপঃ

  • বাস স্ট্যান্ড
  • অফিস আদালতের সামনে
  • কলেজ ইউনিভার্সিটি সামনে
  • কোচিং-এর সামনে ইত্যাদি।
সাধারণত এই সকল স্থানে ঠান্ডা জাতীয় পানীয় ও ড্রিংসের চাহিদা বেশি থাকে। প্রথম অবস্থাতে এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা ইনভেস্ট করলেই এই ব্যবসা আপনি আরম্ভ করতে পারবেন। পরবর্তীতে আপনি যখন অভিজ্ঞ হয়ে যাবেন তখন এই ব্যবসাকে কাজে লাগিয়ে আপনি অতি দ্রুত একটি সফল বড় ব্যবসায়ী হয়ে যেতে পারবেন।

ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসায় ফুটওয়্যার আইটেম বিক্রি করা

আপনি হয়ত জানেন না ফুটওয়্যার বলতে কি বোঝায়। ফুটওয়্যার বলতে পায়ে পরার পণ্য অর্থৎ জুতা জাতীয় পণ্যকে বোঝায়। ফুটপাতে জুতার ব্যবসা খুব জমজমাট থাকে কারণ এই ব্যবসাতে লাভ বেশি এবং পণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে কম। লক্ষ্য করা গেছে যে, ফুটপাতে অন্যান্য গার্মেন্টস আইটেম ও ফুটওয়্যার ব্যবসা সবচেয়ে বেশি জমজমাট থাকে রমজান মাসে। 

কারণ রমজানের পরে সবার আনন্দের ঈদ আসে। তবে অন্যান্য উৎসবের আগেও এইসব ব্যবসা খুব ভালো চলে। বড় দোকান ও শোরুমগুলোতে জুতার দাম বেশি থাকে তাই সাধারণ মানুষেরা তাদের কেনাকাটা এই ফুটপাতেই করে থাকে। ফুটপাতে গার্মেন্টস আইটেমের মতো করেই একটি ব্যবসাটি আপনি শুরু করতে পারেন। 

এই ব্যবসায় মূলধনও গার্মেন্টস আইটেমের মত কম লাগে। তাবে দোকানে ভালোভাবে লাইটিং ব্যবস্থা করবেন এতে কাস্টমারের দৃষ্টি আকর্ষণ হবে। আপনি অনলাইনের মাধ্যমে বিদেশ থেকে পণ্য ক্রয় করতে পারেন এছাড়া বাংলাদেশের গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া অথবা চকবাজার জুতার পাইকারি মার্কেট হতে জুতা ক্রয় করতে পারেন।

আরোও পড়ুনঃ বাংলা মাসের ক্যালেন্ডার ২০২৪ আজকে আরবি মাসের কত তারিখ


ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসায় মোবাইল এক্সেসরিজ বিক্রি করা

বর্তমান বিশ্বে ও বাংলাদেশে মোবাইল ব্যবহার করে না এইরকম মানুষ খুব কমই আছে। তাই মোবাইল যেমন ব্যবহার করে তেমন তার বিভিন্ন এক্সেসরিজও অনেক সময় প্রয়োজন হয়। এই সুযোগটাকে আপনি কাজে লাগিয়ে ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে মোবাইল এক্সেসরিজ বিক্রি করতে পারেন। এখন আসুন জেনে নেই মোবাইল এক্সেসরিজগুলো কি কিঃ

  • মোবাইলে ব্যাক কাভার
  • প্রোটেকশন গ্লাস
  • ক্যামেরা প্রোটেকশন গ্লাস
  • ব্যাটারি
  • মোবাইল স্ট্যান্ড
  • ট্রাইপড
  • এয়ারফোন
  • হেডফোন
  • লাইট
  • রাউটার
  • সাউন্ড বক্স ইত্যাদি

প্রায় সময়ই দেখা যায় মানুষেরা মোবাইলের প্রোটেকশন গ্লাস ও  ব্যাকআপ কাভার নিয়মিত পরিবর্তন করে। এছাড়াও এয়ারফোনের চাহিদা গ্রাহকদের সবচেয়ে বেশি থাকে। এমন অনেক গ্রাহক আছে যাদের একটি ইয়ারফোন দুই সপ্তাহের বেশি চলে না। তাই তারা একটি অধিক পরিমানে এয়ারফোন কিনে স্টকে রাখে যেন নষ্ট হওয়ার পর ব্যবহার করতে পার।

ফুটপাতসহ অনলাইনেও এই ব্যবসাটি মোটামুটি জমজমাট। তাই আপনি অনলাইন হতে সরাসরি বিদেশ হতে আথবা বাংলাদেশর গুলিস্তান হতে পাইকারি এক্সেসরিজ কিনে খুচরা বিক্রি করলেই আপনি লাভের মুখ দেখতে পারবেন। তবে এরজন্য আপনাকে প্রাথমিক ভাবে ২০ হাজার টাকা মূলধন রাখতে হবে। আপনি শুরুতেই অনলাইনের মাধ্যমে সরাসরি বিদেশ হতে পণ্য কিনবেন না। আগে অভিজ্ঞতা অর্জন করুন তারপর বিদেশ থেকে সরাসরি পণ্য আনার কথা মাথায় আনবেন।

ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসায় গার্মেন্টস আইটেম বিক্রি করা

ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসার মধ্যে গার্মেন্টস আইটেমের ব্যবসার প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশের ফুটপাতে যত ধরনের ব্যবসা আছে তার মধ্যে গার্মেন্টস আইটেমের জনপ্রিয়তা সবথেকে বেশি। কারণ ফুটপাতে গার্মেন্টস আইটেমের ব্যবসা খুবই লাভজনক একটি ব্যবসা। ফুটপাতে সকল প্রকার গার্মেন্টস আইটেম অনেক কম দামে পাওয়া যায়।

যে টি শার্ট দাম বড়বড় মার্কেটে এক থেকে দেড় হাজার টাকা সেখানে ফুটপাতে পাওয়া যায় ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকায়। সেজন্য মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবাররা তাদের গার্মেন্টস আইটেমগুলোর ফুটপাত থেকে কেনাকাটা করে থাকে।ফুটপাতে যেসব গার্মেন্টস আইটেম জনপ্রিয় সেগুলো হলঃ

  • টি-শার্ট
  • পলো শার্ট
  • প্যান্ট
  • পাঞ্জাবি
  • ট্রাউজার
  • মেয়েদের ওড়না
  • পায়জামা
  • প্লাজো
  • আন্ডারওয়্যার ইত্যাদি।

এগুলো প্রথমে আপনি পাইকারি মার্কেট হতে কিনে খুচরা আকারে বিক্রি করতে পারবেন। আস্তে আস্তে আপনি হোলসেল হতে ক্রয় করে তা পাইকারি অথবা খুচরা আকারে বিক্রি করতে পারবেন। এখন আসুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে এই ব্যবসা দাঁড় করানো যাবেঃ

  • এই ব্যবসার জন্যও আপনাকে ভালো স্থান নির্বাচন করতে হবে এবং পূর্বের মত করে তা ঠিক করে নিতে হবে।
  • বিশ্বস্ত পাইকারি অথবা হোলসেলার খুজে বেড় করতে হবে।
  • প্রথমে আপনি খবই অল্প পরিমান (১০০) টি টি-শার্ট কিনে সেগুলো বিক্রি করবেন এবং মার্কেট যাচাই করবেন।
  • প্রথম অবস্থায় যদি আপনি সফল হন তাহলে পরেরবার গার্মেন্টস আইটেমের অন্যান্য ক্যটাগরি ও পরিমান বাড়িয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
  • এই ব্যবসায় প্রথমে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা মূলধন হলেই চলবে। পরে তা আস্তে আস্তে বাড়াতে হবে।
  • সাধারণত অনলাইন হতেও আপনি পাইকারি ভাবে বিভিন্ন মালামাল ক্রয় করতে পারেন। এছাড়া টি শার্ট, শার্ট, প্যান্ট ইত্যাদি আপনি ঢাকার গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া মার্কেট হতে ক্রয় করতে পারেন আর থ্রি-পিস বা মহিলাদের আইটেমগুলো ইসলামপুর বা গাউছিয়া মার্কেট থেকে ক্রয় করতে পারেন। 

এই ব্যবসায় আপনার যত বেশি অভিজ্ঞতা হবে তত বেশি আয় হবে। আপনি হয়ত প্রথমে লোকসান খেতেই পারেন। অনেকেরই এমন হয় যে প্রচুর পণ্য কিনেছে কিন্তু সেগুলো বিক্রি করতে পারছে না। শেষে অনেক লোকসান দিয়ে সেগুলো বিক্রি করতে হয়। এরকমটা হওয়ার কারণ হচ্ছে কাস্টমারদের চাহিদা আপনি বুঝতে পারছেন না। 

আরোও পড়ুনঃ আরবি মাসের ক্যালেন্ডার ২০২৪ - আজকে আরবি মাসের কত তারিখ


ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসায় কসমেটিক্স পণ্য বিক্রি করা

ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসায় কসমেটিক্স পণ্য বিক্রি করে আপনি লাভবান হতে পারেন। মেয়েদের মেকআপের চাহিদা কখনোই কমে না সেটা দিন-দিন বেড়েই যায়। তাই আপনি এই সুযোগটাকে কাজে লাগাতে পারেন। মেয়েদের নিকটে যতই লিপিস্টিক, মাস্কারা, নেইলপালিস ও অন্যান্য সাজসজ্জার আইটেম থাকুক না কেন তারা নতুন-নতুন মেকআপ অ্যাক্সেসারিজ ক্রয় করেই।

ফুটপাতে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে সবথেকে ইউনিক আইডিয়া হলো কসমেটিক্স পণ্যের ব্যবসা। এই ব্যবসাটি করার জন্য আপনাকে পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা প্রথমেই ইনভেস্ট করতে হবে। যে টাকা দিয়ে আপনারা বাংলাদেশের চকবাজার থেকে কসমেটিক পাইকারি দামে কিনে ফুটপাতে বসে অথবা ভ্যান নিয়ে এগুলো বিক্রয় করতে পারেন।

মেয়েদের সব থেকে বড় নেতা হলো কসম করাই করা। তাই কসমেটিক্স পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়া অস্বাভাবিক কিছুই নই। এখন জেনে নেওয়া যাক কোন কোন স্থান আপনারা এই ব্যবসার জন্য নির্ধারণ করতে পারেনঃ

  • মহিলা কলেজের সামনে ফুটপাতে
  • মার্কেটের সামনে ফুটপাতে
  • পার্কের গেটের সামনে ফুটপাতে
  • রাস্তার গলির মুখের সামনে ফুটপাতে ইত্যাদি।

ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসায় ফল বিক্রি করা

ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসাগুলো মধ্যে ফল বিক্রি করার ব্যবসাটি আতি লাভজনক একটি আইডিয়া। মানুষ আস্তে আস্তে ভাত বা অন্যান্য খাবারের তুলনায় ফলের উপর চাহিদা বেড়েই চলেছে। আপনি ইচ্ছা করলেই এই চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে ফুটপাতে একটি ফলের দোকান দিতে পারেন। সাধারণত যেসব ফল এই ফুটপাতে বেশি বিক্রয় হয় সেগুলো হলোঃ
  • আপেল
  • মালটা
  • কমলা
  • পেয়ারা
  • আঙ্গুর
  • বেদেনা
  • আনারস
  • নারকেল
  • ডাব ইত্যাদি
এইসব ফলগুলো ভ্যানে করে ফুটপাতে বিক্রি করা হয়। ফুটপাতের ফল বিক্রির দোকান দিতে শুরুতেই আপনাকে ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতে থাকতে হবে। এই ব্যবসাতে আপনার দুইটি লাভ হবে একটি হচ্ছে সিজনাল ফলের সময় সেসব ফল এবং অন্য সময় সারা বছর চলে এমন ফল বিক্রয় করে লাভবান হতে পারেন। বাংলাদেশে বেশিরভাগ ফলের দোকানই ফুটপাতে অবস্থিত। কেউ ফল কেনার কথা চিন্তা করলেই খেয়ালে আসে কোন ফুটপাতে এই দোকান পাওয়া যাবে। তাই আপনি ইচ্ছা করলে এই আইডিয়াকে বেছে নিতে পারেন।

ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসায় ফাস্টফুড আইটেম বিক্রি করা

বর্তমান বিশ্বে ও বাংলাদেশে অধিকাংশ কর্মজীবি মানুষ ও তরুন সমাজ ফাস্টফুড খাবারকে খুব পছন্দ করে। তািই ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে ফাস্টফুড বিক্রির আইডিয়াটি দুরুন একটি লাভজনক ব্যবসা। আপনার হাতে যদি ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা থাকে তাহলে আপনি ব্যবসা শুরু করতে পরবেন। যেসব ফাস্টফুড আইটেম ফুটপাতে ভালো চলবে সেগুলো হলঃ
  • বার্গার
  • পিকজ্জা
  • ভেজিটেবল রোল
  • চিকেন রোল
  • শর্মা
  • চিকেন বল
  • স্যান্ডউইচ
  • সাব স্যান্ডউহচ ইত্যাদী
ফুটপাতে ফাস্টফুডের এই ব্যবসাটি খুবই লাভজনক একটি ব্যবসা তাই অনেকেই এই ব্যবসা করে থাকে। তাই আপনি যদি এই ব্যবসা করতে চান তাহলে অন্য দশ জনের মত না করে একটু ব্যতিক্রমভাবে শুরু করতে হবে। ভিন্নতা আনার জন্য আপনি নিম্নের পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করতে পারেনঃ
  • প্রথমেই আপনাকে খাবারের মান ভাল রেখে লাভের পরিমান কমাতে হবে। বেশি লাভের আশায় খারাপ মানের খাবার বিক্রি করবেন না।
  • পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখবেন।
  • দোকানকে রাখবেন আকর্ষণীয় সাজে সজ্জিত করে রাখবেন। রাস্তায় কেউ যখন হেঁটে যাবে তখন তারা যেন আপনার দোকানটির দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকে। 
  • রাতে ভালো লাইটিং-এর ব্যবস্থা করবেন।
  • নিজস্ব প্যাকেটিং ব্যবস্থা রাখবেন।
  • যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করবেন খাবারগুলো নিজে বানিয়ে দেওয়ার জন্য। আর ‍যদি না পারেন তাহলে পারলে শিখে নিবেন অথবা কাস্টমারকে দেওয়ার আগে একটু চেক করে নিয়ে দিবেন।
এইসব করতে গিয়ে দেখবেন খরচটা একটু বেড়ে যাচ্ছে। তাই প্রথমে মনে হবে যেন আপনার লোকসান হচ্ছে।  কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই দেখবেন আপনার কাস্টমার বেড়ে যাবে। ফলে কাস্টমার প্রতি লাভ কম হলে বেশি কাস্টমারের জন্য আপনি বেশি লাভ করতে পারবেন এবং ভবিষ্যতে আপনার ব্যবসাকে আরো বড় আকারে নিয়ে যেতে পারবেন।

ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসায় সফল হওয়ার উপায়

ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসায় সফল হওয়ার জন্য আপনাকে কিছু বিষয়ে জানা থাকতে হবে। সবসময় সৎ ভাবে সঠিক পন্থা অবলম্বন করে ব্যবসা করতে হবে এবং গ্রাহকদেরকে ভালো পণ্যগুলো দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। 
ছবি-৩
এছাড়া আরো কতগুলো উপায় আছে আসুন তা জেনে নেইঃ
  • সৎভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে।
  • ক্রেতাদের সাথে হাসিখুসি ও  ভালো ব্যবহার করতে হবে ।
  • ভালো পন্য বিক্রয় করতে হবে।
  • বিক্রয়ের স্থান সুসজ্জিত ও পরিষ্কার রাখতে হবে।
  • গ্রাহকদের মনোযোগ নেওয়ার জন্য আধুনিক পন্থা অবলম্বন করতে হবে।
  • নিজেকে আধুনিকভাবে উপস্থাপণ করতে হবে।
  • পণ্যগুলোকে গ্রাহকদের মাঝে ভালোভাবে উপস্থাপণ করতে হবে।
  • ব্যবসা প্রসারণের জন্য আধুনিক আইডিয়াগুলো ব্যবহার করতে হবে।
  • ব্যবসার পিছনে যথেষ্ট সময় দিতে হবে।
  • কোন ধরনের পিছুকথায় মনোযোগ না দিয়ে নিজের ব্যবসা চালিয়ে যেতে হবে।

ফুটপাতে লাভজনক ব্যবসা সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য

ফুটপাতে লাভজনক সম্পর্কে যে কয়টি আইডিয়া এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে তার সবগুলোই বাস্তবমুখী এবং লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া। আপনি খুব সহজেই এইসব ব্যবসা শুরু করতে পারবেন এবং অতি দ্রুত সফল হতে পারবেন। তবে ফুটপাত ব্যবসা করতে গেলে আপনার কিছু অসুবিধা সম্মুখীন হতে পারেন। সেগুলো হলোঃ
  • পুরনো ফুটপাত ব্যবসায়ীরা ঝামেলা করতে পারে।
  • ফুটপাতে ব্যবসা করার নিয়ম না মানলে পুলিশই ঝামেলা হতে পারে।
  • দালাল চক্রের খপ্পরে পড়তে পারেন।
  • ছোট খাট নেতারা পণ্য ক্রয় করে টাকা না দিয়ে চলে যেতে পারে।
উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলোর সম্মুখীন হওয়ার জন্য নিজেকে মানষিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অজানা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url