OrdinaryITPostAd

ক্রিকেট মাঠের বিভিন্ন অংশের নাম-ক্রিকেট খেলা বাংলাদেশের

ক্রিকেট মাঠের বিভিন্ন অংশের নাম ও বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলা সম্পর্কে জানার জন্য খুব খোজাখুজি করছেন। আপনার এই খোজাখুজির অবসান ঘটাতে আমি এই পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আপনাকে শুধুমাত্র কষ্টকরে পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে পড়তে হবে।  

ছ্বি-১

ক্রিকেট খেলার ক্ষেত্রে ক্রিকেট মাঠ একটি প্রধান আংশ। ক্রিকেট মাঠ সাধারণত তিনটি অংশ ক্রিকেট মাঠ, ক্রিকেট পিচ এবং প্যাভিলিয়ন) নিয়ে গঠিত। মাঠটি বাউন্ডারিসহ একটি বড় অঞ্চল নিয়ে গঠিত হয়ে থাকে যেখানে পিচটি মাঠের মধ্যে খুব অল্প অংশ নিয়ে গঠিত হয়ে থাকে। কিন্তু এই মধ্য অংশে সবার সবথেকে বেশি দৃষ্টি থাকে।

এই পোষ্টে যা যা থাকছেঃ ক্রিকেট মাঠের বিভিন্ন অংশের নাম

ক্রিকেট ও ক্রিকেট মাঠের ইতিহাস

ক্রিকেটের ইতিহাস অত্যন্ত প্রাচীন এবং সমৃদ্ধ। এর শুরু হয়েছিল ইংল্যান্ডের শিশুদের খেলা হিসেবে এবং তা ধীরে ধীরে প্রাপ্তবয়স্কদের খেলা ও আন্তর্জাতিক খেলার রূপান্তরিত হয়েছে। ক্রিকেট মাঠে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রূপে গড়ে উঠেছে এবং এখন আধুনিক স্টেডিয়াম ও আন্তর্জাতিক মানের পিছের মাধ্যমে ক্রিকেট খেলা হয়ে থাকে।

  • ক্রিকেটের ইতিহাসঃ 
    • ক্রিকেট খেলার উৎপত্তি ধারণা করা হয় ১৬শ শতাব্দীতে ইংল্যান্ডে। প্রাচীন ইংল্যান্ডের শিশুদের খেলা হিসাবে এটি প্রথম শুরু হয়েছিল। ১৬১১ সালে রোডস ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ক্রিকেট খেলা হয়, যা প্রাপ্তবয়স্কদের দ্বারা খেলা ক্রিকেটের প্রথম দলিল। মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব ১৭৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, যা ক্রিকেটের নিয়ম-কানুন তৈরি করে এবং খেলার আধুনিক রূপ গঠন করে।
    • তারপর ১৮৭৭ সালে ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে প্রথম আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচ খেলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় ১৯০৯ সালে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭১ প্রথম ওয়ানডে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা হয় এবং ২০০৩ সালে প্রথম টি-২০ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা হয়।
  • ক্রিকেট মাঠের ইতিহাসঃ
    • ক্রিকেট খেলার জন্য প্রথম স্থায়ী মাঠ ছিল ইংল্যান্ডের সাসেক্সের ব্রডহ্যাম্পটন, যেখানে ১৬৬০ সালে প্রথম ক্রিকেট ম্যাচ খেলা হয়েছিল। এরপর ১৭৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ক্রিকেটের অন্যতম ঐতিহাসিক মাঠ লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ড। এখানে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের সদর দপ্তর অবস্থিত। ১৮৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় অস্ট্রেলিয়া বৃহত্তম এবং বিখ্যাত ক্রিকেট মাঠ মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড।
    • ১৮৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ইডেন গ্রাউন্ডস যা কলকাতায় অবস্থিত এবং এটি ভারতের অন্যতম প্রাচীন এবং বিখ্যাত ক্রিকেট মাঠ। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে আধুনিক এবং বৃহৎ ৎ ক্রিকেট স্টুডেন্ট তৈরি হয়েছে, যেমন অস্ট্রেলিয়ার সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড, দক্ষিণ আফ্রিকার নিউল্যান্ডস এবং ভারতবর্ষের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়াম।

ক্রিকেট মাঠের পিচের দৈর্ঘ্য কত জানুন

ক্রিকেটের পিচ একটি মাঠের মধ্যে খুব অল্প অংশ নিয়ে গঠিত হয়ে থাকে। কিন্তু এই মধ্য অংশে সবার সবথেকে বেশি দৃষ্টি থাকে।

  • ইহা হলো মাঠের মধ্য অংশ যেখানে বোলাররা বল ডেলিভারি করে এবং ব্যাটসম্যানরা ব্যাট করে।
  • ইহার দৈর্ঘ্য সাধারনত ২২ গজ (২০.১২ মিটার ) এবং প্রস্থ ১০ফিট (৩.০৫মিটার) হয়ে থাকে।
  • এইখানে বোলাররা ব্যাটসম্যানকে আউট করার লক্ষ্যে বল ছোড়ে আর ব্যাটসম্যানরা রান করার উদ্দেশ্যে ব্যাটকে ঘোরাই। মাঠের সবার নজর এই অংশেই থাকে।
  • ইহা কয়েকস্তর বিশিষ্ট্য হয়ে থাকে। যার সর্বনিচের স্তরে বিভিন্ন সাইজের পাথর, তারপর বলু ও সর্বউপরে মসৃন কিন্তু শক্ত মাটি দিয়ে তৈরী করা হয়। পিচের উপরে যত কম ঘাস রাখা যায় থেলতে তত ভাল লাগে।
ছবি-২

আন্তর্জতিক ক্রিকেট মাঠের মাপ 

আন্তর্জতিক ক্রিকেট মাঠের মাপ বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে তবে সাধারণত গোলাকার বা উপবৃত্তাকার আকারের করার নিয়ম রয়েছে। মাঠের দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) দ্বারা নির্ধারিত কিছু পরিমাপের মধ্যে থাকতে হবে। ক্রিকেট মাঠের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিমাপ এবং নিয়মাবলী নিম্নে উল্লেখ করা হলো-

  • বাউন্ডারি রোপঃ মাঠের কেন্দ্রীয় পিচ থেকে বাউন্ডারি পর্যন্ত দূরত্ব সাধারণত ৬৫ মিটার (৭১ গজ) থেকে ৮২ মিটার (৯০ গজ) মধ্যে হয়ে থাকে। আইসিসি নিয়ম অনুযায়ী বাউন্ডারি কমপক্ষে ৬৫ গজ (৫৯.৪ মিটার) এবং সর্বাধিক ৯০ গজ (৮২.২ মিটার) হতে হবে।
  • পিচের দৈর্ঘ্য প্রস্থঃ ক্রিকেট মাঠের মধ্যে অবস্থিত একটি পিচের দৈর্ঘ্য সাধারণত ২২ গজ (২০১২ মিটার) এবং প্রস্থ ১০ ফুট (৩০৫ মিটার) থাকতে হবে।
  • গ্রাউন্ডের আকারঃ ক্রিকেট মাঠের মোট দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ নির্দিষ্ট নয়। এটি বিভিন্ন মাঠে বিভিন্ন রকম হতে পারে। অনেক মাঠ উপবৃত্তাকার হয় এবং পিছের কেন্দ্রীয় অংশ থেকে বাউন্ডারি পর্যন্ত দূরত্ব সারা মাঠ জুড়ে সমান নাও হতে পারে।
  • সাইটস্ক্রিনের অবস্থানঃ উইকেটের পিছনে যাতে ব্যাটসম্যান স্পষ্টভাবে বল দেখতে পারে সেজন্য বলার এর পিছন সাইডে একটি বড় সাইটস্ক্রিন লাগানো হয়।
  • ইনফিল্ড ও আউটফিল্ডঃ পিচের আশেপাশের অংশকে ইনফিল্ড এবং বাইরের অংশকে আউটফিল্ড হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

ক্রিকেট মাঠের বিভিন্ন অংশের নাম

একটি ক্রিকেট মাঠ অনেকগুলো অংশ নিয়ে গঠিত হয়ে থাকে। এই অংশগুলো ক্রিকেট মাঠের কার্যক্রম এবং খেলা পরিচালনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলোর মধ্যে প্রতিটি নিজস্ব ভূমিকা এবং কার্যক্রম রয়েছে যা খেলার মান এবং অভিজ্ঞতা উন্নত করে। ক্রিকেট মাঠের অংশগুলির নাম উল্লেখ করা হলো-

  • পিচঃ ইহা মাঠের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। এখানে বোলাররা বল করেন এবং ব্যাটসম্যান বল মোকাবেলা করেন।
  • উইকেটঃ তিনটি স্ট্যাম্প এবং দুটি বেল দিয়ে একটি উইকেট তৈরি করা হয়। কিভাবে একটি পিচের দুই প্রান্তে দুইটি স্থাপন করা হয়।
  • ক্রিজঃ এই ক্রিজের মধ্যে সাধারণত তিনটি অংশ থাকে সেগুলো হলো বোলিং ক্রিজ, পপিং ক্রিজ এবং রিটার্ন ক্রিজ।
  • ইনফিল্ডঃ পিচের চারপাশের কিছু অঞ্চল নিয়ে এই অংশ গঠিত হয়ে থাকে।
  • আউটফিল্ডঃ ইনফিল্ডের বাইরের অঞ্চলকে আউটফিল্ড বলে। 
  • বাউন্ডারিঃ মাঠের সীমানায় চিহ্নিত করে এমন রেখা বা প্রান্তকে বাউন্ডারি বলা হয়। পিচের কেন্দ্র থেকে সাধারণত ৬৫ মিটার থেকে ৮২ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
  • সাইটস্ক্রিনঃ উইকেটের পিছনে, ব্যাটসম্যানের দৃষ্টি সুবিধার জন্য সাদা বা কালো পর্দাযুক্ত একটি বোর্ড লাগানো হয় যা সাইটস্ক্রিন নামে পরিচিত।
  • প্যাভিলিয়নঃ খেলোয়াড়দের বসার স্থান, যেখানে তারা মাঠে প্রবেশ এবং প্রস্থানের জন্য প্রস্তুত থাকে।
  • ড্রেসিং রুমঃ খেলোয়াড়দের পোশাক পরিবর্তন এবং বিশ্রামের স্থান।
  • স্কোরবোর্ডঃ মাঠের একপাশে যেখানে খেলার স্কোর, ওভার সংখ্যা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদর্শিত করা হয়ে থাকে।
  • ডাগআউটঃ এটি একটি বসার স্থান যা প্যাভিলিয়নের কাছে অবস্থিত। এখানে রিজার্ভ খেলোয়াড় এবং কোচেরা বসে থাকেন।
  • আম্পায়ারস বক্সঃ মাঠের পাশে, যেখানে আম্পায়াররা বসেন এবং খেলা পরিচালনা করে থাকেন।
  • মিডিয়া সেন্টারঃ মাঠের পাশে বা প্যাভিলিয়নের মধ্যে, যেখানে সাংবাদিক এবং সম্প্রচারকারীরা বসেন এবং খেলার রিপোর্ট তৈরি করেন।
  • ভিআইপি বক্সঃ প্যাভিলিয়নের মধ্যে বা স্টেডিয়ামের বিশেষ অংশে, যেখানে ভিআইপি অতিথিরা আসেন খেলা দেখার উদ্দেশ্যে। এটি তাদের বসার স্থান।
  • গ্রাউন্ডসম্যান এরিয়াঃ ক্রিকেট মাঠের রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচর্যার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ এবং তাদের বিভিন্ন ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি রাখার এবং বসার স্থান।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট মাঠ

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট মাঠ বর্তমানে ভারতের আহমেদাবাদে অবস্থিত নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম। এটি এক সময় সর্দার প্যাটেল স্টেডিয়াম নামে পরিচিত ছিল। এর ধারণক্ষমতা ১,৩২,০০০। প্রথম নির্মিত হয়েছিল ১৯৮৩ এবং পুনর্গঠনের জন্য বন্ধ করা হয় ২০১৫ সালে যা ২০২০ সালে পুনঃনির্মাণ করে উদ্বোধন করা হয়।

স্টেডিয়ামটিতে ৭৬ টি কর্পোরেট বক্স, একটি অলিম্পিক-সাইজ সুইমিং পুল, একটি ইন্দোর ক্রিকেট অ্যাকাডেমি এবং একটি ৩২ হাজার বর্গফুট খেলোয়াড়দের এলাকা রয়েছে। এখানে আধুনিক এলইডি লাইটিং ব্যবস্থা, যা দিন ও রাতের ম্যাচের জন্য উপযুক্ত।স্টেডিয়াম টিতে একাধিক পিচ রয়েছে যার মধ্যে লাল মাটি এবং কালো মাটির পিচও অন্তর্ভুক্ত। 

পুনঃনির্মাণের পর, স্টেডিয়ামে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারত এবং ইংল্যান্ডের মধ্যে হয়। এই স্টেডিয়াম বর্তমানে বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম প্রধান কেন্দ্রবিন্দু এবং বৃহত্তর দর্শক ধারণ ক্ষমতা এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেট স্থাপনা হিসেবে পরিচিত করেছে।

ক্রিকেট মাঠের পজিশন

ক্রিকেট মাঠের বিভিন্ন পজিশন ও তাদের অবস্থান সম্পর্কে জানতে নিচের তালিকা এবং বর্ণনা দেওয়া হলো। এই পজিশন গুলো ফিল্ডিং কৌশল এবং ব্যাটসম্যানের ধরন অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। প্রতিটি পজিশনের ফিল্ডারদের দায়িত্ব আলাদা এবং তারা বিভিন্ন ধরনের শট মোকাবেলায় কার্যকর ভূমিকা পালন করে। ক্রিকেট মাঠের পজিশন সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-

ছবি-৩
  • উইকেটকিপারঃ এই পজিশনটি সাধারণত উইকেটের পিছনে, ব্যাটসম্যানের পিছনে হয়ে থাকে। ব্যাটসম্যানরা যেসব বল ছেড়ে দেয় তা আবার পুনরায় বলারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য উইকেটকিপার রাখা হয়।
  • স্লিপঃ এই পজিশনটি সাধারণত উইকেট কিপার এর পাশে হয়ে থাকে। এর আবার কয়েকটি সাব-পজিশন আছে সেগুলো হল প্রথম স্লিপ, দ্বিতীয় স্লিপ, তৃতীয় স্লিপ ইত্যাদি। ব্যাটসম্যানের ধরন অনুযায়ী স্লিপের সংখ্যা নির্ভর করে
  • গালিঃ এই পজিশনটি সাধারণত স্লিপ এবং পয়েন্ট-এর মধ্যে হয়ে থাকে। অনেক সময় এই পজিশনে কোন ফিল্ডার থাকে না।
  • পয়েন্টঃ এই পজিশনটি সাধারণত অফসাইটে ব্যাটসম্যানের পাশে হয়ে থাকে। এই পজিশনে টিমের মধ্যে সবথেকে ভালো ফিল্ডার কে রাখা হয়।
  • কভারঃ এই পজিশনটি সাধারণত পয়েন্ট এবং মিড অফের মধ্যে হয়ে থাকে। প্রত্যেক ব্যাটসম্যানই এই পজিশনে খেলা খেলে নিজেকে ক্রেজে সেট করতে চায়। তাই এই পজিশনে সবসময় ফিল্ডার রাখতে হয়।
  • মিড অফঃ এই পজিশনটি সাধারণত পিচের কাছাকাছি, ব্যাটসম্যানের সামনের পাশে (অফ সাইডে)। সাধারণত পাওয়ার প্লেতে এই পজিশনে ফিল্ডার বেশি রাখা হয়।
  • মিড অনঃ এই পজিশনটি সাধারণত পিচের কাছাকাছি, ব্যাটসম্যানের সামনের পাশে (লেগ সাইডে)। সাধারণত পাওয়ার প্লেতে এই পজিশনে ফিল্ডার বেশি রাখা হয়।
  • মিড উইকেটঃ এই পজিশনটি সাধারণত লেগ সাইডে ব্যাটসম্যানের পায়ের কাছে হয়ে থাকে।
  • স্কোয়ার লেগঃ এই পজিশনটি সাধারণত লেগ সাইডে পিচের পাশে হয়ে থাকে।
  • ফাইন লেগঃ এই পজিশনটি সাধারণত স্কোয়ার লেগের পেছনে বাউন্ডারির কাছাকাছি হয়ে থাকে।
  • থার্ড ম্যানঃ এই পজিশনটি সাধারণত পয়েন্টের পিছনে এবং স্লিপের পাশে হয়ে থাকে।
  • লং অনঃ এই পজিশনটি সাধারণত মিড অন থেকে বাউন্ডারির দিকে হয়ে থাকে।
  • লং অফঃ এই পজিশনটি সাধারণত মিড অফ থেকে বাউন্ডারির দিকে হয়ে থাকে।
  • ডীপ পয়েন্টঃ এই পজিশনটি সাধারণত পয়েন্ট থেকে বাউন্ডারির দিকে হয়ে থাকে।
  • ডীপ কভারঃ এই পজিশনটি সাধারণত কাভার থেকে বাউন্ডারির দিকে হয়ে থাকে।
  • ডীপ স্কোয়াার লেগঃ এই পজিশনটি সাধারণত স্কোয়ার লেগ থেকে বাউন্ডারির দিকে হয়ে থাকে।
  • ডীপ মিড-উইকেটঃ এই পজিশনটি সাধারণত মিড-উইকেট থেকে বাউন্ডারির দিকে হয়ে থাকে।
  • শর্ট লেগঃ এই পজিশনটি সাধারণত ব্যাটসম্যানের কাছে লেগ সাইডে হয়ে থাকে।
  • সিলি পয়েন্টঃ এই পজিশনটি সাধারণত ব্যাটসম্যানের কাছে অফ সাইডে হয়ে থাকে।
  • লেগ স্লিপঃ এই পজিশনটি সাধারণত উইকেটকিপারের পাশে লেগ সাইডে হয়ে থাকে।

ক্রিকেট খেলার নিয়ম

ক্রিকেট খেলার নিয়মগুলো বেশ বিশদ এবং বিস্তৃত, যা খেলার ধরন ও পর্যায়ের উপর নির্ভর করে। এই নিয়মাবলী বিস্তৃত এবং বিস্তারিত হলেও, এগুলো একটি সাধারণ ধারণা প্রদান করে কিভাবে খেলা পরিচালিত হয়। নিম্নে ক্রিকেট খেলার মূল নিয়মাবলী এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো-

  • খেলোয়াড় ও দলঃ এই খেলায় সাধারণত দুটি দল থাকে এবং প্রত্যেক দলের ১১ জন করে খেলোয়াড় থাকে। প্রত্যেক দলে একজন অধিনায়ক ও একজন উইকেটকিপার থাকে।
  • মাঠ ও পিচঃ এই খেলার মাঠ সাধারণত গোল ডিম্বাকৃতি হয়ে থাকে। পিচের উভয় প্রান্তে তিনটি করে স্ট্যাম্প এবং দুটি করে বেল থাকে।
  • ইনিংসঃ প্রত্যেক দল ব্যাটিং এবং বোলিং করে থাকে। টেস্ট ম্যাচে প্রতি দল দুইটি ইনিংস করে ব্যাট করে।
  • ব্যাটিং ও রানঃ দুজন ব্যাটসম্যান একসাথে ব্যাটিং করে। ব্যাটসম্যানরা রান নিতে পিচের প্রান্তে দৌড়ায়। বল মাঠে সীমানা স্পর্শ করলে ৪ রান এবং সীমানার বাইরে গেলে ৬ রান হয়।
  • বোলিংঃ প্রতিটি ওভারে ছয়টি বৈধ বল হয়। এক ওভারে এক বোলার বল করে এবং পরবর্তী ওভারে অন্য বলার বল করে। একটি দলের এক ইনিংসে সর্বনিম্ন ৫ জন বোলারকে অবশ্যই বল করাতে হবে।
  • আউটঃ বল বোলারের কাছ থেকে বোলিং করার পরে স্ট্যাম্পে লেগে গেলে ব্যাটসম্যান বোল্ড আউট হয়। আর ব্যাটসম্যানের ব্যাটে লেগে ফিল্ডার ক্যাচ ধরলে ক্যাচ আউট হয়।
  • এল বি ডব্লিউঃ বোলারের বল যদি ব্যাটসম্যানের প্যানে লাগে এবং আম্পিয়ার আউট দিলে সেটা এল বি ডব্লিউ হয়।
  • রানআউটঃ ফিল্ডার স্টাম্পে বল লাগিয়ে দিলে এবং ব্যাটসম্যান ক্রিজের বাইরে থাকলে সেটি রান আউট হয়।
  • স্ট্যাম্পিংঃ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানের ক্রিজের বাইরে থাকা অবস্থায় স্ট্যাম্পে বল লাগিয়ে দিলে স্ট্যাম্পিং আউট হয়।

ক্রিকেট খেলার ধরন বা ফরমেট

ক্রিকেট খেলার বিভিন্ন ধরন আছে, যা খেলার সময়কাল, ওভার সংখ্যা এবং নিয়মাবলীর ভিন্নতার ওপর ভিত্তি করে পৃথক হয়। নিম্ন প্রদত্ত ক্রিকেট ফরম্যাটগুলো বিভিন্ন ধরনের দর্শক ও খেলোয়াড়ের জন্য বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা প্রদান করে। 

টেস্ট ক্রিকেট ধৈর্য ও কৌশলের খেলা, একদিনের ক্রিকেট ধারাবাহিক পারফরমেন্সের খেলা এবং টি-২০ ক্রিকেট দ্রুততম ও আকর্ষণীয় খেলা হিসেবে জনপ্রিয়। এখানে প্রধান তিন ধরনের ক্রিকেট খেলার বিবরণ দেওয়া হলো-

  • টেস্ট ক্রিকেটঃ এটি মূলত ৫ দিন পর্যন্ত খেলা হতে পারে। এর কোন নির্দিষ্ট ওভার নেই, প্রতিটি ইনিংসের দল ব্যাট করতে থাকে যতক্ষণ না তারা অলআউট হয় বা ইনিংস ঘোষণা (ডিক্লেয়ার) না করা হয়। প্রতিটি দল দুই ইনিংস করে খেলে এবং প্রত্যেক খেলায় জয়, পরাজয়, ড্র বা টাই হতে পারে। এটি ক্রিকেটের সবচেয়ে দীর্ঘ এবং ঐতিহ্যবাহী ফরমেট, যেখানে খেলার গুণমান এবং ধৈর্যের পরীক্ষা হয়।
  • একদিনে আন্তর্জাতিকঃ ইহা সাধারণত একদিনের খেলা। প্রতিটি দল ৫০ ওভার করে ব্যাট করে এবং প্রতিটি দল এক ইনিংস করে খেলে। এই খেলায় জয়, পরাজয় বা টাই হতে পারে। পাওয়ারপ্লে ওভারগুলোতে নির্দিষ্ট সংখ্যক ফিল্ডার ইনফিল্ডে থাকতে হবে।
  • টি-২০ আন্তর্জাতিকঃ এটি সাধারণত ৩-৪ ঘন্টার খেলা। প্রতিটি দল ২০ ওভার করে ব্যাট করে এবং প্রতিটি দল এক ইনিংস করে খেলে। এই খেলায় জয়, পরাজয় বা টাই হতে পারে। টাই হলে সুপার ওভার এর মাধ্যমে ফলাফল নির্ধারণ করা হয়। খেলা দ্রুত গতিতে হয় এবং ফিল্ডিং বিধিনিষেধ থাকে।
  • টি-১০ ক্রিকেটঃ এটি সাধারণত ৯০ মিনিটের খেলা হয়ে থাকে। প্রতিটি দল ১০ ওভার করে ব্যাট করে। এটি ক্রিকেটে সব থেকে দ্রুততম ফরমেট। এছাড়া ঘরোয়া ক্রিকেটে আরো কিছু নিজস্ব ফরম্যাট লক্ষ্য করা যায় সেগুলো হলো-
  • প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটঃ এই খেলাটি সাধারণত তিন থেকে পাঁচ দিন পর্যন্ত হতে পারে। এর কোন নির্দিষ্ট ওভার নেই টেস্ট ক্রিকেটের মতোই নিয়ম হয়ে থাকে প্রতিটি দল দুই ইনিংস করে খেলে।
  • লিস্ট এ ক্রিকেটঃ এই খেলাটি একদিনের খেলা যা সাধারণত ৫০ ওভারে হয়ে থাকে। প্রতিটি দল এক ইনিংস করে খেলার সুযোগ পায়।
  • টি-২০ ক্রিকেটঃ এই খেলাটি আন্তর্জাতিক টি-২০ খেলার মতই। তবে এটি আন্তর্জাতিক না হয়ে ঘরোয়া ভাবে হয়ে থাকে। এই ধরনের খেলা বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন নামে করে থাকে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো-Indian Premier League (IPL), Big Bash League (BBL), Bangladesh Premier League (BPL), Pakistan Cricket League (PCL), Sri Lanka cricket league (SCL) ইত্যাদি।

বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলার সময়সুচী ২০২৪

বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলার সময়সুচী ২০২৪ মোট সাতটি সিরিজের সূচি রয়েছে। এর মধ্যে ঘরের মাটিতে হবে তিনটি এবং বাকি চারটি বাংলাদেশকে সফর করতে হবে। সাত সিরিজে মোট ১৪ টি টেস্ট, ৯ টি ওয়ানডে ও ১৭ টি টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশের টাইগাররা। এছাড়াও সিরিজের বাইরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ফেলবে বাংলাদেশ। আসুন জেনে নেই বাংলাদেশের সাতটি সফর সূচি-

তারিখ প্রতিপক্ষ খেলার ধরণ সময় ভেন্যু
০৪-০৩-২০২৪ শ্রীলঙ্কা টি-২০ (১) ৬.০০ (সন্ধ্যা) সিলেট, বাংলাদেশ
০৬-০৩-২০২৪ শ্রীলঙ্কা টি-২০ (২) ৬.০০ (সন্ধ্যা) সিলেট, বাংলাদেশ
০৯-০৩-২০২৪ শ্রীলঙ্কা টি-২০ (৩) ৩.০০ (দুপুর) সিলেট, বাংলাদেশ
১৩-০৩-২০২৪ শ্রীলঙ্কা ওডিআই (১) ২.৩০ (দুপুর) চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
১৫-০৩-২০২৪ শ্রীলঙ্কা ওডিআই (২) ২.৩০ (দুপুর) চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
১৮-০৩-২০২৪ শ্রীলঙ্কা ওডিআই (৩) ১০.০০ (সকাল) চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
২২-০৩-২০২৪ শ্রীলঙ্কা টেস্ট (১) ১০.০০ (সকাল) সিলেট, বাংলাদেশ
৩০-০৩-২০২৪ শ্রীলঙ্কা টেস্ট (২) ১০.০০ (সকাল) চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
০৩-০৫-২০২৪ জিম্বাবুয়ে টি-২০ (১) ৬.০০ (সন্ধ্যা) চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
০৫-০৫-২০২৪ জিম্বাবুয়ে টি-২০ (২) ৬.০০ (সন্ধ্যা) চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
০৭-০৫-২০২৪ জিম্বাবুয়ে টি-২০ (৩) ৩.০০ (দুপুর) চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
১০-০৫-২০২৪ জিম্বাবুয়ে টি-২০ (৪) ৬.০০ (সন্ধ্যা) মিরপুর, বাংলাদেশ
১২-০৫-২০২৪ জিম্বাবুয়ে টি-২০ (৫) ১০.০০ (সকাল) মিরপুর, বাংলাদেশ
২১-০৮-২০২৪ পাকিস্তান টেস্ট (১) ১১.৩০ (সকাল) রাওয়ালপিন্ডি, পাকিস্তান
৩০-০৮-২০২৪ পাকিস্তান টেস্ট (২) ১১.৩০ (সকাল) করাচি, পাকিস্তান
১৯-০৯-২০২৪ ভারত টেস্ট (১) ১০.০০ (সকাল) চেন্নই, ভারত
২৭-০৯-২০২৪ ভারত টেস্ট (২) ১০.০০ (সকাল) কানপুর, ভারত
০৬-১০-২০২৪ ভারত টি-২০ (১) ৭.৩০ (রাত্রি) ধর্মসেনা, ভারত
০৯-১০-২০২৪ ভারত টি-২০ (২) ৭.৩০ (রাত্রি) দিল্লী, ভারত
১২-১০-২০২৪ ভারত টি-২০ (৩) ৭.৩০ (রাত্রি) হায়দ্রাবাদ, ভারত
২২-১১-২০২৪ ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট (১) ৮.০০ (রাত্রি) নর্থ সাউন্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ
৩০-১১-২০২৪ ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট (২) ৯.০০ (রাত্রি) কিংস্টোন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ
০৮-১২-২০২৪ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওডিআই (১) ৭.৩০ (রাত্রি) ব্যাসেটেরে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ
১০-১২-২০২৪ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওডিআই (২) ৭.৩০ (রাত্রি) ব্যাসেটেরে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ
১২-১২-২০২৪ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওডিআই (৩) ৭.৩০ (রাত্রি) ব্যাসেটেরে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ
১৫-১২-২০২৪ ওয়েস্ট ইন্ডিজ টি-২০ (১) ৬.০০ (সকাল) কিংস্টোন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ
১৭-১২-২০২৪ ওয়েস্ট ইন্ডিজ টি-২০ (2) ৬.০০ (সকাল) কিংস্টোন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ
১৯-১২-২০২৪ ওয়েস্ট ইন্ডিজ টি-২০ (3) ৬.০০ (সকাল) কিংস্টোন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ

ক্রিকেট মাঠের বিভিন্ন অংশ নিয়ে লেখকের মন্তব্য

ক্রিকেট মাঠের বিভিন্ন অংশের নাম এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট খেলার সময়সূচি সম্পর্কে আপনারা আমার এই পোস্ট থেকে জেনে নিয়েছেন আশা করি। আসলে ক্রিকেটের সবথেকে প্রথম খেলা হয় টেস্ট দিয়ে, যা চলতো পাঁচ দিন মত। এতে ক্রিকেটের প্রতি দর্শকদের আগ্রহ আস্তে আস্তে কমতে থাকে।

তাছাড়া মানুষের সামাজিক ও কর্মজীবনের ব্যাপক পরিবর্তনের কারণে কয়েকশো বছর আগের মতো দিনের পর দিন মাঠে বসে খেলা দেখার সময় ও সুযোগ অনেকেরই হয় না। সেজন্যই উনবিংশ শতাব্দীর মাঝখানে প্রথম সীমিত ওভারের ক্রিকেট খেলার প্রবর্তন হয়। কিন্তু বর্তমান যুগের গতিশীল জীবনযাত্রায় সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত মাঠে বসে খেলা দেখার মত সময় অনেক ক্রিকেটপ্রেমী মানুষের হাতে নেই।

ছবি-৪

 তাই সময় ও যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এবং ক্রিকেটকে ফুটবলের মত গতিশীল ও জনপ্রিয় করতে বিংশ শতাব্দীর শুরুতেই ২০ ওভারের সীমিত ওভার খেলা শুরু হয়। যা বর্তমানে খুব জনপ্রিয় এবং যুগ উপযোগী। এরপরও টিকেট খেলাকে আরোও আকর্ষণীয় করার জন্য ১০ ওভারের সীমিত ওভার খেলা শুরু হয়। কিন্তু এই ফর্মেটটি খুব ছোট হওয়ার কারণে ততটা জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি।

আমার এই পোস্টটি থেকে আশাকরি আপনারা ক্রিকেট খেলা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাবেন। এই খেলাতে আরো অনেক নিয়ম কানুন এবং বিধিমালা রয়েছে। যা ভবিষ্যতে আরো একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হবো। ক্রিকেট সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে অবশ্যই আমার সাথে যোগাযোগ করবেন।


সবাই সুস্থ থাকবেন, ভালো থাকবেন, নিজের স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখবেন। ধন্যবাদ সবাইকে......

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অজানা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url